ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক এবার ফাঁকা

এবার ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের টাঙ্গাইল অংশের চিত্র একেবারে ভিন্ন। সোমবার ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত কিছুটা যানজট ছিল। পরে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মহাসড়ক স্বাভাবিক হয়ে যায়। ফলে ঈদ যাত্রায় ভোগান্তি ছাড়াই যাতায়াত করছেন ঘরমুখো মানুষ। মহাসড়কে স্বাভাবিক গতিতেই পশু,পণ্য ও যাত্রীবাহী যানবাহন চলাচল করছে। মহাসড়কে যানজট নিরসনে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রায় এক হাজার সদস্য অনবরত কাজ করছেন।

সরেজমিনে সোমবার বিকেল ৬টা পর্যন্ত মহাসড়কের বিভিন্ন এলাকায় স্বস্তির এ চিত্র দেখা যায়। যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। তবে ঈদ ঘনিয়ে আসায় ও সোমবার থেকে সকল প্রকার সরকারি, বেসরকারি অফিসসহ গার্মেন্টস এর ছুটি হওয়ার ফলে বিকেল থেকে পরিবহনের চাপ অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া মহাসড়ক অনেক সময় স্বাভাবিকের চেয়েও ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে।

জানা যায়, উত্তরবঙ্গসহ ২৩টি জেলার মানুষ এ মহাসড়ক দিয়ে যাতায়াত করেন। বিগত কয়েক বছর যাবৎ মহাসড়কে চারলেন প্রকল্পের কাজ চলমান থাকায় মানুষের ভোগান্তির শেষ ছিল না। ফলে প্রায় প্রতিদিনই যানজট এবং সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হতো সাধারণ যাত্রী ও গাড়ি চালকদের।

সাউথ এশিয়ান সাব রিজনাল ইকোনোমিক কর্পোারেশন (সাসেক) চারলেন প্রকল্পের কর্মকর্তা জিকরুল হাসান বলেন, কালিহাতীর এলেঙ্গা থেকে গাজীপুরের ভোগড়া পর্যন্ত ৭০ কিলোমিটারের মধ্যে ৫০ কিলোমিটার রাস্তা ৪ লেনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। গত মঙ্গলবার বিকেলে গণভবন থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই মহাসড়কের ২৩ ব্রিজ উদ্বোধন করেছেন। ফলে অন্য যেকোনো বারের থেকে এবার ঈদে মানুষ স্বস্তিতে বাড়ি ফিরবেন বলে আশা করছি।

চন্দ্রা থেকে দিনাজপুরগামী রবি মিয়া নামের একজন বাসচালক বলেন, মহাসড়কে কোনো যানজট নেই। কোনো দুর্ঘটনা না ঘটলে নির্দিষ্ট সময়েই গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবো। ঢাকা থেকে বগুড়াগামী সাফিয়া আক্তার নামের এক মহিলা যাত্রী বলেন, অত্যন্ত ভালোভাবেই এ পর্যন্ত এসেছি। রাস্তা খুবই ভালো। মানুষ ভোগান্তি ছাড়াই এবার বাড়ি ফিরতে পারবেন।

বঙ্গবন্ধু সেতু কর্তৃপক্ষ জানায়, স্বাভাবিকভাবে প্রতিদিন ১৪ থেকে ১৫ হাজার যানবাহন সেতু পাড়াপাড় হয়। বর্তমানে ঈদ উপলক্ষে ২২ থেকে ২৫ হাজার যানবাহন পাড়াপাড় হচ্ছে। টোল আদায়েও সৃষ্টি হয়েছে রেকর্ড।

বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশারফ হোসেন জানান, রোববার দিবাগত রাতে টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে হাতিয়া এলাকায় দুইটি দুর্ঘটনার কারণে ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত কিছুটা যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়ে যায়। ঈদ যাত্রায় মহাসড়কে যানজট নেই কিন্তু গাড়ির চাপ রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার (এসপি) সঞ্জিত কুমার রায় জানান, এবার ঈদ যাত্রায় ঘরমুখো মানুষ ভোগান্তি ছাড়াই নিজ নিজ গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছেন। আশা রাখি এ অবস্থা অব্যাহত থাকবে। যানজট নিরসনে ৭২৩ জন পুলিশ সদস্য এবং ২০০ আনসার সদস্য নিরলসভাবে কাজ করছেন। বিভিন্ন পয়েন্টে মোবাইল কোর্টসহ বিশেষ টহল ব্যবস্থা রয়েছে।