ঢাকা শহরের ভূগর্ভস্থ পানির স্তর বিপদ সীমায় পৌঁছে গেছে: সবুজ আন্দোলন
অপরিকল্পিত নগরায়ন রাজধানী ঢাকার জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে পাশাপাশি রয়েছে ৩ কোটির অধিক জনসংখ্যার চাপ। যার ফলশ্রুতিতে ঢাকার ভূগর্ভস্থ পানির স্তর বিপদ সীমায় পৌঁছে গেছে বলে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, পরিবেশবাদী সংগঠন সবুজ আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান বাপ্পি সরদার।
রবিবার (১১ জুন) দুপুরে আমেরিকান অ্যাম্বাসির পাশে টেক্সটস সেন্স মিলনায়তনে ঢাকা মহানগর উত্তর ভাটারা থানা শাখার উদ্যোগ “ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহারে চাই সচেতনতা” সরদার।
উদ্বোধক হিসেবে বক্তব্য রাখেন সবুজ আন্দোলন পরিচালনা পরিষদের অর্থ পরিচালক নিলুফার ইয়াসমিন রুপা। প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন সবুজ আন্দোলনের উপদেষ্টা ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষক মেজবাউদ্দীন মোঃ জীবন চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক ছাত্রনেতা তিতাস মোস্তফা, সবুজ আন্দোলন কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদের প্রচার সম্পাদক আতাউল গনি লাভলু, সবুজ আন্দোলন চট্টগ্রাম মহানগর শাখার উপদেষ্টা অধ্যাপক নুরুল বাসার সুজন, জাতীয় যুব সংহতির কেন্দ্রীয় সদস্য মোঃ জিল্লুর রহমান।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্য বলেন, ঢাকায় দিনে ৩০০ কোটির অধিক লিটার পানি সরবরাহ করে ওয়াসা। ভূগর্ভস্থ থেকে অবিরাম পানি উত্তোলন করায় ভূমিকম্পের ঝুঁকি বাড়ছে যার ফলশ্রুতিতে ঢাকায় প্রতি বছর ছয় ফুট করে পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। ঢাকার ১০টি জোনে গভীর নলকূপ ৯৩০টি। ভূগর্ভস্থ পানির চাপ কমাতে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ও ভূ—উপরিস্ত পানির ব্যবহার বাড়াতে হবে। প্রতিনিয়ত জনসংখ্যা বাড়ার সাথে সাথে ঢাকা শহরে প্রতিনিয়ত বাড়ছে পানির চাহিদা। বাড়ছে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন। চাহিদা মেটাতে বসানো হচ্ছে গভীর নলকূপ। পানি সরবরাহকারী সরকারি সংস্থা ঢাকা ওয়াসা পানির চাহিদা মেটাতে ভূগর্ভস্থ পানির উপরে নির্ভর করছে। ওয়াসার সরবরাহিত পানির ৬৭ শতাংশই মাটির নিচের। প্রতিনিয়ত পানি পেতে গভীর থেকে গভীরে নলকূপ স্থাপন করতে হচ্ছে। ফলশ্রুতিতে প্রাকৃতিক দুর্যোগ অর্থাৎ ভূমিকম্পের ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে। এ ক্গুরুত্ব দিতে হবে ভূ—উপরিস্থ পানি পরিশোধন করে সরবরাহে। পাশাপাশি বৃষ্টির পানি ব্যবহারের ব্যবস্থা করতে হবে। আগামীতে পানি সংকট নিরসনে ৭০ শতাংশ ভূ—উপরিস্থ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে। নদীর পানি শোধনের মাধ্যমে রাজধানীর মানুষের চাহিদা মেটাতে সব থেকে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। পানি ব্যবহারের ক্ষেত্রে পানির গুণগত মান,টেকসই, গণমুখী ও পরিবেশবান্ধব কিনা সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে বাইপাস ক্যানাল পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে। বিভিন্ন তথ্য মতে, ২০০৯ সালে ঢাকা ওয়াসার গভীর নলকূপের সংখ্যা ছিল ৫১৯টি।১০ বছর আগে একটি গভীর নলকূপ বসাতে খরচ হতো ৪০ থেকে ৫০ লাখ টাকা। এখন খরচ হয় ১ কোটি ৫০ লাখের বেশি। তবে জনসংখ্যার ঘনত্ব বেড়ে যাওয়ায় পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে অনেকটা ব্যর্থ ঢাকা ওয়াসা। পরিসংখ্যান মতে ঢাকায় গভীর নলকূপের সংখ্যা ৯৩০ টি। এর মধ্যে যাত্রাবাড়ি ও আশপাশের এলাকায় (জোন—১) ৮১টি, পুরান ঢাকায় (জোন—২) ৭০টি, ধানমন্ডি এলাকায় (জোন—৩) ১৩৭টি, মিরপুর—১ (জোন—৪) ১১৫টি, গুলশান—মহাখালীতে (জোন—৫) ৭৭টি, ফকিরাপুলে (জোন—৬) ১১৮টি, শনির আখড়া, মাতুয়াইলে (জোন—৭) ৫৬টি, বাড্ডায় (জোন—৮) ৭৩টি, উত্তরায় (জোন—৯) ৭৫টি, মিরপুর ১০ (জোন—১০) ১০৪টি। এছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় আরও অন্তত ৮০ টি নলকূপ স্থাপনের কাজ চলছে।
ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহার পরিণত রাখতে সরকারসহ সাধারণ জনগণকে সচেতন হতে হবে। শেষ করে পানি ব্যবহারের ক্ষেত্রে মৃত ব্যয়ী হওয়া, নদী ও খালে প্লাস্টিক পণ্য ফেলা থেকে বিরত থাকা, কলকারখানা ও কেমিক্যাল কারখানা গুলোতে সিইটিপি ফর্মুলা ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। পরিকল্পিত নগরায়ন নীতিমালা প্রণয়ন ও সবুজায়ন নিশ্চিত করতে হবে।
আলোচনা সভায় আরো অংশগ্রহণ করেন সবুজ আন্দোলন কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য জামিল আহমেদ, জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য পিয়ারুল ইসলাম হিমেল ,জয়পুরহাট জেলা যুব সংহতির সদস্য সচিব আওলাদ হোসেন,ভাটারা থানার সদস্য তরিকুল ইসলাম, মেহেদী হাসান, তৌহিদুল ইসলাম প্রমূখ।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন