কোটা সংস্কার আন্দোলন

ঢাবিতে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশের সাউন্ড গ্রেনেড বিস্ফোরণ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে সাউন্ড গ্রেনেডের বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে পুলিশ।

বুধবার দুপুর ২টা ৪০ মিনিটের দিকে আন্দোলনকারীরা টিএসসিতে জড়ো হতে চাইলে পুলিশ দুটি সাউন্ড গ্রেনেডের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
এ সময় দুজন শিক্ষার্থী আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

পরে বিকাল ৩টার দিকে আরও তিনটি সাউন্ড গ্রেনেডের বিস্ফোরণ ঘটায় পুলিশ।

এ সময় ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন তুলে নিয়ে যায় পুলিশ।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পুলিশ পাঁচটি সাউন্ড গ্রেনেডের বিস্ফোরণ ঘটালে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং পরে ঘটনাস্থল থেকে আখতার হোসেনকে তুলে নিয়ে যায়।

এর কয়েক মিনিট পর পুলিশ রোকেয়া হলের কাছে আরেকটি সাউন্ড গ্রেনেডের বিস্ফোরণ ঘটায়, এতে একজন সাংবাদিক আহত হন এবং আতঙ্ক সৃষ্টি হয়।

এ সময় ঘটনাস্থলে থাকা কয়েকজন সাংবাদিকের পুলিশের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়।
সাংবাদিকরা প্রশ্ন তোলেন, কেন সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করা হচ্ছে?

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শিক্ষার্থী ও বহিরাগতদের ঢুকতে বাধা দিতে পুরো টিএসসি এলাকা ঘিরে রেখেছে পুলিশ।

এদিকে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সংঘর্ষে ছয়জন নিহত ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধসহ হল ছাড়ার ঘোষণার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্বরে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ এখনো চলছে।

বিক্ষোভে শিক্ষার্থীরা ‘সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত, মানি না মানবো না’; ‘হল আমার বাড়িঘর, হল আমি ছাড়ব কেন’; ‘আমার ভাই মরলো কেন, জবাব চাই দিতে হবে’; ‘পুলিশ দিয়ে আন্দোলন, বন্ধ করা যাবে না’; ‘হল ছাড়ার সিদ্ধান্ত, মানি না মানবো না’; ‘ক্যাম্পাসে রক্ত ঝরে, ভিসি কী করে’; ‘ছাত্রলীগ হামলা করে, ভিসি কী করে’; ‘সাঈদ ভাই মরলো কেন, পুলিশ তুই জবাব দে’; ‘হলে হলে দুর্গ গড়, ছাত্রলীগ প্রতিহত কর’ স্লোগান দিতে থাকেন।

এর আগে দুপুর ২টায় রাজু ভাস্কর্য এলাকায় গায়েবানা জানাজা ও কফিন শোভাযাত্রার ঘোষণা দিয়েছিলেন কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কারণে তারা এখনো কর্মসূচি পালন করতে পারেনি।

জানতে চাইলে কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের সিদ্ধান্ত মানি না। আমরা হলেই থাকব, হল ছাড়ব না। এটা আন্দোলন বানচালের অপচেষ্টা।’

তিনি আরও বলেন, ‘আজ আমরা প্রথমে ভিসির বাসভবন যাই। তারপর টিএসসিতে আসি। সেখানে আমাদের পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি পালন করব।’