ঢাবি উপাচার্যের বাসায় হামলার কারণ শিগগিরই জানা যাবে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্যের বাসায় হামলাকারীদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। তিনি বলেন, কী কারণে তারা এই হামলা চালিয়েছিল শিগগিরই তা জানানো হবে।

বুধবার সকালে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ‘কৃষিবিদ মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা’ প্রদান অনুষ্ঠানে এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন মন্ত্রী।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সেই দৃশ্য আমাদের ক্যামেরাবন্দি আছে, সাংবাদিক ভাইদের কাছে ভিডিও ফুটেজ রয়েছে এবং আমাদের কাছেও যা আছে সেই অনুযায়ী আমরা গ্রেপ্তার অভিযান শুরু করছি এবং আইডেন্টিফাই শুরু করছি, আমরা দেখছি। যাদের ধরা হয়েছে এরা কেউ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র না। এরা কেন আসছিল আরো কয়েকদিন পরে আমরা পরিষ্কার করে বলব। চুরিকৃত মালামালও আমরা কিছু জব্দ করেছি সেটাও আপনারা জানেন। বাকি আসামিদের আমরা আইডেন্টিফাই করছি। সুনিশ্চিত হয়ে আমরা তাদের গ্রেপ্তার করব। অবশ্যই আমরা কাউকে ছাড়ব না।’

অনুষ্ঠানে কৃষিবিদ মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। এ সময় কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিচারণা করে বক্তব্য দেন। তাঁরা ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার দাবি জানান।

জবাবে মন্ত্রী বলেন, ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের কারণেই নানা বিভক্তি ও প্রতিকূলতা মোকাবিলা করতে হচ্ছে। মুক্তিযোদ্ধারা ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের সার্টিফাই করেছিল বলেই তারা তালিকাভুক্ত হতে পেরেছিল বলেও সমালোচনা করেন তিনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের (ভিসি) বাসভবনে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও মালামাল চুরির ঘটনায় গত ২৯ এপ্রিল চারজনকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) দক্ষিণ গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) একটি দল। এ সময় তাদের কাছ থেকে উপাচার্যের বাসভবন থেকে চুরি হওয়া দুটি মোবাইল ফোনও উদ্ধার করা হয়।

গ্রেপ্তার হওয়া চারজন হলেন মো. রাকিবুল হাসান ওরফে রাকিব (২৬), মো. মাসুদ আলম ওরফে মাসুদ (২৫), মো. আলী হোসেন শেখ ওরফে আলী (২৮) ও আবু সাইদ ফজলে রাব্বী ওরফে সিয়াম (২০)। পরে তাঁদের রিমান্ডে নেয় পুলিশ।

ডিএমপি জানিয়েছে, গ্রেপ্তার হওয়া চারজনের মধ্যে মাসুদ আলম ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসার ছাত্র। অন্য তিনজন কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র নন। এঁর মধ্যে গ্রেপ্তার হওয়া রাকিবের নামে বরিশাল ও লক্ষ্মীপুরে পাঁচটি মামলা আছে।

গত ১০ এপ্রিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সিনিয়র সিকিউরিটি অফিসার’ এস এম কামরুল আহ্সানের দায়ের করা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ওই চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয় ।

শাহবাগ থানায় দায়ের করা মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ৯ এপ্রিল রাতে অজ্ঞাতনামা অনেক মুখোশধারী সন্ত্রাসী ও দুষ্কৃতকারী হাতে লোহার রড, পাইপ, হেমার, লাঠি ইত্যাদি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের দেয়াল টপকে এবং ভবনের ফটকের তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে বাসভবনের মূল্যবান জিনিসপত্র, আসবাবপত্র, ফ্রিজ, টিভি, লাইট, কমোড ও বেসিনসহ অনেক মালামাল ভাঙচুর করে ক্ষতিসাধন করে এবং মূল্যবান সম্পদ লুটতরাজ করে। তা ছাড়া ভবনে রাখা দুটি গাড়ি পুড়িয়ে দেয় এবং আরো দুটি গাড়ি ভাঙচুর করে। এ ছাড়া ভবনে রাখা ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরাগুলো ভেঙে ফেলে এবং সিসি ক্যামেরার ডিভিআরগুলো পুড়িয়ে নষ্ট করে ফেলে।