তথ্যমন্ত্রীকে শিল্পীসমাজের কৃতজ্ঞতা
বিদেশি শিল্পী দিয়ে চলচ্চিত্র ও বিজ্ঞাপন নির্মাণে বাড়তি ফি নির্ধারণ করে নীতিমালা সংস্কার করায় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদকে অভিনন্দন ও তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন দেশের শিল্পীসমাজের প্রতিনিধিবৃন্দ।
বৃহস্পতিবার (১০ জুন) দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে মন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে শিল্পীরা তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন এবং মন্ত্রীকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। এসময় তথ্য ও সম্প্রচার সচিব মো. মকবুল হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
অভিনয় শিল্পী সংঘের সভাপতি শহীদুজ্জামান সেলিম, চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর, সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান, চলচ্চিত্র ও নাট্যনির্মাতা এবং গীতিকার এস এ হক অলীক, অভিনেত্রী ও মডেল তারিন জাহান এসময় বক্তব্য রাখেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য শিল্পীদের সুরক্ষা দেয়া, এটি রাষ্ট্রের দায়িত্ব। আমাদের টেলিভিশন বিজ্ঞাপনের একটা বিরাট অংশ অন্য দেশের শিল্পীদের দিয়ে বানানো হয় এবং সেই শিল্পীরাও প্রথম শ্রেণির নন, অন্য দেশের দ্বিতীয় এবং তৃতীয় গ্রেডের শিল্পী।
পক্ষান্তরে, আমাদের মডেল-শিল্পীরা দেখতেও সুন্দর, স্মার্ট এবং ভালো অভিনয় করেন। বিজ্ঞাপনচিত্রেও অভিনয় করতে হয়। বেশকিছু বিজ্ঞাপনচিত্রে আমাদের শিল্পীরা এত সুন্দর অভিনয় করেছেন, বিষয়কে এমনভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন এবং এমনভাবে সেগুলো বানানো হয়েছে যা দেখে অভিভূত হতে হয়, মনে গভীরে দাগ কাটে। আমরা মনে করি, আমাদের দেশের শিল্পীদেরই বিদেশে গিয়ে বিজ্ঞাপনচিত্র বানানোর মতো মেধা আছে।’
তিনি বলেন, ‘বিদেশি শিল্পী বা বিদেশ থেকে চলচ্চিত্র বা বিজ্ঞাপন বানিয়ে আনা বন্ধ করা সরকারের উদ্দেশ্য নয়। এখন মুক্তবাজার অর্থনীতি, যে কেউ যে কাউকে দিয়ে বানাতে পারে, সরকারের লক্ষ্য দেশের শিল্পীদের সুরক্ষা দেয়া। বিদেশি শিল্পী দিয়ে চিত্র নির্মাণে আমরা প্রথমে পাঁচ লাখ টাকা ফি’র কথা চিন্তা করেছিলাম।
তবে অনেক শিল্পীর পারিশ্রমিক পাঁচ লাখ টাকা হয় না, সেই বিবেচনায় আপাতত শিল্পীপ্রতি ভ্যাট এবং আয়কর বাদে দুই লাখ টাকা ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। আর যে টেলিভিশন সেই শিল্পীর বিজ্ঞাপনচিত্র দেখাবে সেই টেলিভিশন চ্যানেলকে সরকারকে এককালীন ২০ হাজার টাকা দিতে হবে। এ ছাড়া ১৯৯৯ সাল থেকে চালু এ সম্পর্কিত নীতিমালায় অন্যকোনো পরিবর্তন নেই।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা শিল্পীদের কল্যাণে অনেক কিছু করেছেন। চলচ্চিত্র শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্ট করে দিয়েছেন। সেটি এখন সংসদীয় কমিটিতে আছে। কমিটির সঙ্গে আলোচনাও হয়েছে, খুব সহসা সেটি সংসদের অনুমোদন লাভ করবে।’
অভিনয় শিল্পী সংঘের সভাপতি শহীদুজ্জামান সেলিম দেশ, দেশের শিল্প-সংস্কৃতি ও শিল্পী রক্ষায় এই নীতিমালা সংস্কারকে তথ্যমন্ত্রীর একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ বলে অভিহিত করেন।
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর বলেন, ‘চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি সরকারের শিল্প রক্ষার উদ্যোগের সঙ্গে একাত্ম রয়েছে।’ আর বিদেশি শিল্পীর জন্য ফি নির্ধারণকে দেশের শিল্পীদের বিষয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সক্রিয় ভাবনার ফসল বলে বর্ণনা করেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান।
নাট্যনির্মাতা এবং গীতিকার এস এ হক অলীক বলেন, ‘এ নীতিমালা সংস্কারের পাশাপাশি টিআরপি নির্ধারণ, ওটিটি প্ল্যাটফর্ম, বিদেশি সিরিয়াল প্রিভিউ করার বিষয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের নতুন উদ্যোগগুলো আক্ষরিকভাবেই যুগপোযোগী।’
অভিনেত্রী ও মডেল তারিন জাহান তার বক্তব্যে বিদেশি চলচ্চিত্র ও বিজ্ঞাপনে বাংলাদেশের শিল্পীদের কাজের ক্ষেত্র প্রসারের বিষয়ে নজর দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান।
এসময় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন ও চলচ্চিত্র) খাদিজা বেগম, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক অরুণ সরকার রানা, অভিনেত্রী ও মডেল তানভীন সুইটি, মিষ্টি জান্নাত, সিমলা, বিপাশা কবির, নিঝুম রুবিনা, অন্তু করিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন