তারেক রহমানের কাছে আঁকুতি পা হারানো বিএনপি কর্মী সুমনের

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে গুরুতর আহত হয়ে অবশেষে এক পা হারানো বিএনপি কর্মী মঞ্জুর হোসেন সুমন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে যথোপযুক্ত বিচার দাবি করেছেন।
সোমবার (১৪ জুলাই) বিকেলে বারইয়ারহাট পৌরসভার নিজ বাড়িতে তিনি সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি করেন।
তিনি বলেন, ‘গত ২৪ মার্চ মিরসরাই উপজেলা বিএনপি, বারইয়ারহাট পৌরসভা বিএনপি ও মিরসরাই পৌরসভা বিএনপির আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটিকে শুভেচ্ছা জানিয়ে এবং ২৬ শে মার্চ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে বারইয়ারহাট পৌরসভায় সকাল সাড়ে দশ টায় মিরসরাই উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আজিজুর রহমান, বারইয়ারহাট পৌরসভা বিএনপির আহবায়ক মাঈন উদ্দিন লিটন এবং সদস্য সচিব জসিম উদ্দিন কমিশনারের নেতৃত্বে মিছিল বের হয়। ওই মিছিলে চট্টগ্রাম শহর, ফেনীর সোনাগাজী ও ছাগলনাইয়া থেকে ভাড়াটে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরাও অংশ নেয়। আমাকে সেই মিছিলে অংশ নেওয়ার জন্য আমার বাড়িতে গিয়ে ডেকে নিয়ে আসেন বারইয়ারহাট পৌরসভা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক জিয়া উদ্দিন বাবলু মিয়াজী এবং বিএনপি নেতা রেজাউল করিম ইমন। আমিও বারইয়ারহাট পৌরসভা বিএনপির আহবায়ক মাঈন উদ্দিন লিটনের নেতৃত্বে রাজনীতি করি তাই আমি সেই মিছিলে অংশ নিই। মিছিলের একপর্যায়ে আমার সাথে বাবলু ও ইমনের বাকবিতণ্ডা হয়। বাকবিতণ্ডার জেরে আমাকে জিয়া উদ্দিন বাবলু মিয়াজী ধারালো চুরি দিয়ে আমার পেটের ডান পাশে আঘাত করলে আমার পেট কেটে নাড়িভুঁড়ি বের হয়ে যায়। ইমন আমার পায়ে ধারালো কিরিচ দিয়ে কোপ দিলে আমার পায়ের গোশত হাড্ডি থেকে আলাদা হয়ে যায়। এরপর জিয়া উদ্দিন বাবলু আমার মাথায় কোপ দেয়। নিজেকে রক্ষা করতে গিয়ে আমার হাত কেটে গেলে আমি মাটিতে লুটিয়ে পড়ি। ওরা চলে যাওয়ার পর আমার এলাকার মানুষজন আমাকে উদ্ধার করে স্থানীয় বারইয়ারহাট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকলে সেখান থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে আজিজুর রহমান চৌধুরী ও মাঈন উদ্দিন লিটন এবং চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক নুরুল আমিন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে আমাকে মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে রক্ত কণিকাসহ ডাক্তার ও নার্সদের সহযোগিতায় পেট সেলাই করে। রাতে আমার অবস্থা খারাপ দেখলে তারা সেখান থেকে সটকে পড়ে। আমি অবস্থা বেগতিক দেখে ঐখান থেকে ছাড়পত্র না নিয়ে আমার লোকের মাধ্যমে পালিয়ে চট্টগ্রাম রয়েল হাসপাতালে ভর্তি হই। সেখানে আমাকে জিম্মি করে আমার থেকে জবানবন্দি নেওয়া হয়। পরবর্তীতে সেখানে আমার অস্ত্রোপচার করা হয়। সেখানে আমি ৩ দিন আইসিইউতে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকি। সেখানেও ভালো ট্রিটমেন্ট হচ্ছে না দেখে সেখান থেকে ঢাকা ল্যাব এইড হাসপাতালে ভর্তি হই।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমি যখন হাসপাতালে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে লড়ছি তখন আমাকে একপ্রকার জিম্মি করে আমার বাবাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে কোর্টে এই ঘটনায় যাদের কোন সম্পৃক্ততা নেই, যারা কোন অন্যায় করেনি তাদের নামে মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা দেয়। আমার অসুস্থতার কথা বলে অনেকের থেকে টাকা কালেকশন করে আমার চিকিৎসা না করিয়ে মেরে ফেলার ফন্দি আঁটে। বিনা চিকিৎসায় শেষ পর্যন্ত আমার অঙ্গহানি হয়। আমার একটি পা কেটে ফেলতে হয়। আমি পঙ্গুত্ব বরণ করি। আমার চিকিৎসা এখনো চলছে। চিকিৎসা ব্যয় আমার পরিবারের পক্ষে চালানো সম্ভব হচ্ছে না। আমার এখন পা সংযোজন করা খুবই জরুরি। কিন্তু পা সংযোজনের জন্য প্রায় ৪ লক্ষাধিক টাকা প্রয়োজন। আমার পরিবারের পক্ষে পা সংযোজনের সেই ব্যয় বহন করা সম্ভব নয়। আমি বর্তমানে হতাশা ও নিরাপত্তাহীনতার মধ্যদিয়ে দিনাতিপাত করছি। আমি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমানের কাছে আমার উপর এই নির্যাতন, নিপীড়ন ও অত্যাচারের সঠিক বিচার ও শাস্তি কামনা করছি।’