তাহসান–মিথিলা: কেন বিবাহবিচ্ছেদ?
২০০৬ সালের ৩ আগস্ট ভালোবেসে সংসার শুরু করেছিলেন তাহসান ও মিথিলা। অভিনয় ও গানের এই জুটি সবার কাছে ছিলেন তারকা দম্পতি িহসেবেও জনপ্রিয়। ২০১৩ সালের ৩০ এপ্রিল জন্ম নেয় তাঁদের একমাত্র সন্তান আইরা। বছর দুয়েক ধরে এই শিল্পী দম্পতির সংসারজীবন ভালো যাচ্ছিল না—এমন গুঞ্জন ছিল। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁরা বিবাহবিচ্ছেদের ঘোষণা দেন। এরপর তাহসান ও মিথিলার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে আলাদাভাবে তাঁরা কথা বলেন তাঁদের সম্পর্ক, বিচ্ছেদ ও ভবিষ্যৎ নিয়ে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মনজুর কাদের
বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিলেন কেন?
তাহসান: এ দেশের মানুষ পর্দায় আর পর্দার বাইরে আমাদের জুটি হিসেবে ভালোবেসেছেন, সে জন্য আমরা ধন্য। কিন্তু সমাজ কী বলবে—এই ভয়ে অভিনয় করে সারা জীবন কাটিয়ে দিতে হবে, আমরা দুজন এই ব্যাপারটার সঙ্গে একমত নই।
মিথিলা: আমাদের বিবাহিত জীবন দীর্ঘ ১১ বছরের। ১৪ বছর ধরে একজন আরেকজনকে চিনি। বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত আসলে হঠাৎ করে নিইনি। আমাদের বোঝাপড়ায় অনেক দিন ধরে সমস্যা হচ্ছিল। ব্যক্তিত্বের দ্বন্দ্বও প্রকট ছিল। জীবন নিয়ে শুরুতে একধরনের পরিকল্পনা ছিল, সময়ের সঙ্গে তা বদলে গেছে। তারপরও এত বছরের সম্পর্ক তো আর এত সহজে কেউ ভেঙে ফেলতে চায় না। আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। কারণ, আমাদের একটি সন্তান আছে। দুই বছর ধরে আলাদা থাকলেও সন্তান আর সংসারের কথা ভেবে আমরা একসঙ্গে কাজ করে ভালো থাকার চেষ্টা করেছি। শেষ পর্যন্ত আমরা বুঝতে পেরেছি, সম্পর্কটা আর টিকবে না।
বিচ্ছেদের খবরটি আনুষ্ঠানিকভাবে জানানোর জন্য ঠিক এই সময়টাকে কেন বেছে নিলেন?
তাহসান: বিচ্ছেদের আনুষ্ঠানিকতা মাত্রই সম্পন্ন হয়েছে তাই এখন জানানো।
মিথিলা: বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেওয়াটা অনেক কষ্টদায়ক ছিল। আর এত বড় একটি কষ্টের খবর জানানোর জন্য মানসিক প্রস্তুতিও লাগে। বিচ্ছেদের আনুষ্ঠানিকতা তো মাত্রই সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে দেখি, বিভিন্ন অনলাইন নিউজ পোর্টাল আজেবাজে মনগড়া খবর প্রচার করছে। তাই মনে হলো, আর দেরি করা ঠিক হবে না। এ জন্যই দুজনের সিদ্ধান্তে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে জানানো।
বিচ্ছেদের আইনি প্রক্রিয়া কি সম্পন্ন হয়েছে?
মিথিলা: হয়েছে, মাস দেড়েক আগে। মে মাসে।
আপনাদের একমাত্র সন্তান আইরা কীভাবে বেড়ে উঠবে? কী চান?
তাহসান: আমার মেয়েকে নিয়ে আমি কোনো কথা বলব না। আরও কিছু আনুষ্ঠানিকতার ধাপ বাকি আছে।
মিথিলা: আইরা আমার কাছে ছিল। বলতে গেলে আমি একাই ওকে বড় করেছি। ওর বাবা দেখা করতে আসে। সামনের দিনগুলোতে তারও অবদান থাকবে। আর এই বোঝাপড়াটা আমাদের মধ্যে থাকবে। তা ছাড়া এমন না যে আমাদের মুখ দেখাদেখি বা কথা বলা বন্ধ। আমাদের সন্তানের জন্য আমরা যোগাযোগ করি। আইরার জন্মদিন আমরা একসঙ্গে পালন করি।
নিজেদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা বলুন।
তাহসান: যত দিন মনে হবে মানুষ আমার কাজ উপভোগ করছে, কাজ করে যাব।
মিথিলা: সন্তান আর অফিস নিয়ে ব্যস্ত থাকব। আপাতত একসঙ্গে কাজ করব না। তবে ভবিষ্যতের কথা বলতে পারি না।
আপনাদের ভক্ত ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের উদ্দেশে পরিষ্কার করে আরও কিছু বলতে চান?
তাহসান: যেকোনো মানুষের জীবনে বিচ্ছেদ একটা কষ্টের ব্যাপার। আমাদের জন্য এই কষ্টটা আরও বেশি। অচেনা-অজানা লাখো মানুষ কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে ফেলে যখন মিডিয়াজগতের কারও বিচ্ছেদ হয়, তারপরও অসংখ্য মানুষের সহমর্মিতা আমরা পাচ্ছি।
মিথিলা: আমাদের দেশে বিবাহবিচ্ছেদ খুব নেতিবাচকভাবে দেখা হয়। বিচ্ছেদ কখনো সুখের হয় না। মিডিয়ায় কাজ করলেও আমরা তো মানুষ। আমাদেরও আবেগ-অনুভূতি আছে। আমাদেরও পরিবার, বন্ধুবান্ধব, সমাজ নিয়ে থাকতে হয়। এখন যে পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে, তা আমাদের জন্য সবচেয়ে বেশি কষ্টকর। মানুষের কাছ থেকে আমরা তাই এখন স্বাভাবিক মানবিকতা প্রত্যাশা করছি। তাঁদের জন্যই তো আমরা মিডিয়ায় কাজ করি।
সূত্র : প্রথম আলো
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন