তিউনিসিয়ায় নৌকাডুবিতে নিহত পাঁচজন সিলেটের
তিউনিসিয়া উপকূলে নৌকাডুবিতে নিহত বাংলাদেশিদের মধ্যে ৬ জনের বাড়ি সিলেট এবং একজনের বাড়ি মৌলভীবাজারে। তাদের মৃত্যুতে এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জে কটালপুর এলাকার মহিদপুর গ্রামে নিহত আব্দুল আজিজ, আহমদ আলী ও লিটন মিয়াসহ নিহত ৬ জনের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। সন্তান হারিয়ে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন মা-বাবা।
স্বজনরা জানান, গত ৭ ডিসেম্বর সিলেটের রাজা ম্যানসনে এহিয়া ট্রাভেলসের মালিক এনাম আহমেদের মাধ্যমে প্রত্যেকে ৭ লাখ টাকা চুক্তিতে ইটালিতে যাওয়ার জন্য দেশ ত্যাগ করেন হতভাগ্যরা। ওই সময় নৌকা দিয়ে নেয়ার কথা তাদের বলা হয়নি। প্রায় চারমাস লিবিয়াতে তাদের বন্দি রাখা হয়। এ ঘটনায় এনাম আহমেদের বিচার দাবি করেন স্বজনরা।
তিউনিসিয়ায় এক নৌকাডুবিতে নিহত প্রায় ৬০ জন অভিবাসীর অধিকাংশই ছিল বাংলাদেশি নাগরিক। বৃহস্পতিবার ভূমধ্যসাগরে এ দুর্ঘটনা ঘটে। রেড ক্রিসেন্টের বরাত দিয়ে দেশটির সংবাদ সংস্থাগুলো এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
বেঁচে যাওয়া লোকজন তিউনিসিয়ার রেড ক্রিসেন্টকে জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে লিবিয়ার উপকূল থেকে ৭৫ জন অভিবাসী একটি বড় নৌকায় করে ইতালির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়।
গভীর সাগরে তাদের বড় নৌকাটি থেকে অপেক্ষাকৃত ছোট একটি নৌকায় তোলা হলে কিছুক্ষণের মধ্যে সেটি ডুবে যায়।
তিউনিসিয়ার রেড ক্রিসেন্ট কর্মকর্তা মঙ্গি স্লিমকে উদ্ধৃত করে বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, রাবারের তৈরি ‘ইনফ্লেটেবেল’ নৌকাটি ১০ মিনিটের মধ্যে ডুবে যায়।
তিউনিসিয়ার জেলেরা ১৬ জনকে উদ্ধার করে শনিবার সকালে জারযিজ শহরের তীরে নিয়ে আসে। উদ্ধার হওয়া অভিবাসীরা জানায়, ঠাণ্ডা সাগরের পানিতে তারা প্রায় আট ঘণ্টা ভেসে ছিল।
উদ্ধার হওয়া ১৬ জনের ১৪ জনই বাংলাদেশি। ত্রিপলিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শেখ সিকান্দার আলী বলেন, তারা দুর্ঘটনার কথা জানেন এবং তিউনিসিয়ার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ চলছে।
তিনি বলেন, যত দ্রুত সম্ভব তারা জারযিজে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। লড়াই চলার কারণে সড়কপথে যাওয়া সম্ভব হচ্ছেনা বলে তাদের আকাশপথে যেতে হবে।
বেঁচে ফেরা অভিবাসীরা জানান, নৌকাটিতে ৫১ জন বাংলাদেশি ছাড়াও তিনজন মিশরীয় এবং মরক্কো, শাদ এবং আফ্রিকার অন্যান্য কয়েকটি দেশের নাগরিক ছিল।
এ বছরের প্রথম চার মাসে লিবিয়া থেকে ইউরোপ পাড়ি দেওয়ার সময় নৌকাডুবে কমপক্ষে ১৬৪ জন মারা গেছে বলে জাতিসংঘ বলছে।
তথ্যসূত্র: বিবিসি
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন