তিন বছর আগে দিয়েছেন হজের টাকা, এবারও মেলেনি টিকেট!

গোলাম মো. শাহজাহান। বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলায়। সারা জীবন সাংসারিক কাজ করে অল্প অল্প করে কিছু টাকা জমিয়েছেন হজে যাওয়ার জন্য। ২০১৫ সালে হজের যাওয়ার জন্য গ্লোব ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেল এজেন্সি নামের একটি প্রতিষ্ঠানের কাছে তিন লাখ টাকা জমা দিয়েছেন। কিন্তু এখনো তিনি হজে যেতে পারেননি।

শনিবার রাজধানীর আশকোনা হজক্যাম্পে কথা হয় গোলাম মো. শাহজাহানের সঙ্গে। তিনি জানান, এ বছর হজে যেতে পারবেন কি না তা নিয়েই দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। তিনদিন হলো আশকোনার হজক্যাম্পে এসেছেন তিনি। সকালে, দুপুরে, বিকেলে বা রাতে ফ্লাইট হবে—এমন আশ্বাস দিয়ে চলেছেন ওই ট্রাভেল কোম্পানির মালিক। কিন্তু কোনো কথাই কার্যকর হচ্ছে না।

শাহজাহান জানান, আজ দুপুরে তাঁদের ফ্লাইট হবে—এমন কথা বলে দুপুরের পর থেকে মোবাইল বন্ধ করেছেন ওই ট্রাভেল কোম্পানির মালিকসহ প্রতিষ্ঠানের অন্যরা।

শুধু গোলাম মো. শাহজাহান নয়, গ্লোব ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেল এজেন্সির কাছে টাকা দেওয়া ৫১ জনের হজ পালন নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। হজের ফ্লাইট তো দূরের কথা, ৫১ জনের একজনকেও টিকেট দিতে পারেনি ওই এজেন্সি।

বিকেলে হজক্যাম্পে গিয়ে দেখা যায়, ওই এজেন্সির কাছে টাকা দেওয়া ৫১ জনের মধ্যে সাতজন নারীও রয়েছেন। হজক্যাম্পে তিনদিন ধরে অবস্থানের কারণে তাঁদের অনেকেই এখন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।

সিরাজগঞ্জ থেকে হজক্যাম্পে আসা মো. আবদুল খালেক বলেন, ‌‘আমরা মাসুদের কাছে টাকা দিছি, মাসুদ নাকি শফিকুলের কাছে সেই টাকা দিছে। টিকেট কাল হইতেছে, পরশু হইতেছে কইয়া আজ তিনদিন হয় এখানে এসে বসে আছি। আমাদের টিকেটের এখনো কোনো খোঁজ-খবরই নাই।’

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে গ্লোব ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেল এজেন্সির প্রতিনিধি মো. মাসুদ মিয়া বলেন, ‘এই এজেন্সি আমার নয়, আমার সম্বন্ধি (স্ত্রীর বড় ভাই) খন্দকার শফিকুল ইসলামের। আমাদের অফিস টাঙ্গাইলে। আর আমাদের টিকেট হয়ে গেছে, কিন্তু আমরা এখনো হাতে পাই নাই। আমরা অন্য এজেন্সি থেকে টিকেট কিনেছি কিন্তু তাও এখনো হাতে পাই নাই।’