‘মাঠ দখলে রাখতে’ ১৪ দলের কর্মসূচি ঘোষণা
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত মাঠ দখলে রাখতে চায় আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট। এ লক্ষ্যে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে ১৪ দল।
রাজশাহী, নাটোর ও খুলনায় বিভাগীয় সমাবেশের পর ঢাকায় মহাসমাবেশ করবে সরকার দলীয় এই জোট।
শনিবার রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে ১৪ দল আয়োজিত কর্মী সমাবেশে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন জোটের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম। বিএনপির অব্যাহত ‘মিথ্যাচার’ ও ‘চক্রান্তের’ প্রতিবাদে এই সমাবেশের ডাক দেয় ১৪ দল।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, আগামী ৯ অক্টোবর রাজশাহী, ১০ অক্টোবর নাটোর ও ১৩ অক্টোবর খুলনায় বিভাগীয় সমাবেশ করবে ১৪ দল। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আলোচনা করে অক্টোবরে ঢাকায় মহাসমাবেশ করা হবে।
২০০৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন করা বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দল আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আবার সরব হচ্ছে। নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে তাদের কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছে। আগামীকাল রবিবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি পেয়েছে বিএনপি। এছাড়া ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্য গঠনের প্রক্রিয়া চলছে। আগামী ১ অক্টোবর থেকে এই জোটের কর্মসূচিও শুরু হবে।
নাসিম বলেন, ‘ওরা (২০ দল) বলেছে অক্টোবর মাস থেকে মাঠে থাকবে। অক্টোবর মাস তোমাদের জীবনে আসবে না। আগামী ডিসেম্বর মাসে নির্বাচনের আগে আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে মাঠ গরম করবো। আমরা দেখিয়ে দেব।’
মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত চক্রান্ত করেছিল যেন মহানগর নাট্যমঞ্চে আমরা সমাবেশ করতে না পারি। আমরা হলাম বাঘের বাচ্চা। আওয়ামী লীগ, ১৪ দলের কর্মীরা বাঘের বাচ্চা। যত বাধা দেবে আমরা তত বেশি অগ্রসর হবো। আজকে কর্মী সভা নয়, জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে।’
‘চক্রান্ত শুরু হয়েছে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে, বাংলার জনগণের বিরুদ্ধে। এখন ১৪ দলের কর্মীদের, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী কর্মীদের ঘরে বসে থাকার সময় আর নাই। ঘর থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।’
বিএনপি-জামায়াতের উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘এটা ২০১৪ সাল নয়, ১৮ সাল। তোমাদের মরণকাল এ বছরই হবে। বিএনপি-জামায়াত লোক ভাড়া করছো। পরিত্যক্ত, পলায়নকারীদের ভাড়া করছো। যাদের নীতি নাই, ঠিকানা নাই। পলায়ন করতে অভ্যস্ত, ওই নেতাদের ভাড়া করছো।’
‘খেলার মাঠে খেলোয়াড় ভাড়া করা যায়। রাজনীতি নেতা ভাড়া করা হয় এটা প্রথম দেখলাম। ভাড়াটিয়া দিয়ে জয় করতে পারবে না। ভাড়াটিয়া দিয়ে কাজ হয় না। একজন বিদেশে বসে আর দুইজন দেশে বসে চক্রান্ত করছে।’
জোটের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আপনারা সাবধান থাকবেন। শেখ হাসিনা ও আমরা যখন ডাক দেব তখন কেউ ঘরে বসে থাকবেন না, ঘর থেকে বেরিয়ে আসবেন। ১৪ সালে জ্বালাও-পোড়াও করেছো, এবার হবে না। আমাদের ঐক্য দরকার। মাত্র কয় দিনের নোটিশে আপনারা আজকে এখানে এসেছেন।’
‘গণতন্ত্রের বিকল্প হচ্ছে গণতন্ত্র। কোনো অবৈধ সরকারকে ক্ষমতায় আনার চক্রান্ত করছেন, যারা চক্রান্ত করছেন তাদের কালো হাত ভেঙে দেওয়া হবে। বিএনপি-জামায়াতকে কোনো ছাড় দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।’
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন হবে, নির্বাচনের ফলাফল যা হবে আমরা মেনে নেব।’
মোহাম্মদ নাসিমের সভাপতিত্বে কর্মী সমাবেশ সঞ্চালন করেন ঢাকা মহানগর ১৪ দলের সমন্বয়ক শাহে আলম মুরাদ।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাতীয় পার্টি (জেপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, বাংলাদেশ জাসদ সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া, জেপি মহাসচিব শেখ শহীদুল ইসলাম, তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাৎ হোসেন, বাংলাদেশ জাসদ সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার, বাসদের আহ্বায়ক রেজাউর রশীদ খান প্রমুখ।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন