তিন লক্ষাধিক রোহিঙ্গা অপুষ্টিতে ভুগছে

কক্সবাজারের কুতুপালং ক্যাম্পে অবস্থানরত তিন লক্ষাধিক রোহিঙ্গা অপুষ্টিজনিত বিভিন্ন রোগে ভুগছে। এসব রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশ সরকার ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন কর্মসূচির আওতায় স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হচ্ছে। সরকারের স্থানীয় প্রশাসন ও কুতুপালংয়ে কর্মরত আন্তর্জাতিক সংস্থা এ সেবা দিচ্ছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

তথ্য অনুযায়ী, মিয়ানমারে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ও নির্যাতনে পালিয়ে আসা এসব রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আসার সময়ে খাদ্যের অভাব ও বিভিন্ন প্রকার রোগে শোকে আক্রান্ত ছিল। বাংলাদেশের কুতুপালং ক্যাম্পে স্থান পাওয়ার পর থেকে এসব মানুষের স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর ৩ লাখ ১৮ হাজার ৭৭৮ জন রোহিঙ্গা যারা অপুষ্টিতজনিত বিভিন্ন রোগে ভুগছে। এর মধ্যে অধিকাংশ শিশু ও গর্ভবতী নারী। এর মধ্যে ৪ আগস্ট পর্যন্ত ১ লাখ ৪২ হাজার ৮২৩ জনকে পুষ্টি সেবা দেওয়া হয়েছে; যা মোট পুষ্টিহীন রোহিঙ্গার ৪৫ শতাংশ।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ৫ বছরের নিচে ১ লাখ ৩৬ হাজার ৮৮২ শিশু তীব্র অপুষ্টিজনিত সমস্যায় ভুগছে। এ সব শিশুকে সুস্থ করে তোলার জন্য র‌্যাংকেট সাপ্লিমেন্টারি ফিডিং প্রোগ্রামের আওতায় আনা হয়েছে। যার ১২ হাজার ৬৬৮ শিশুকে পুষ্টিজনিত সমস্যা দূর করতে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। গর্ভবতী ও প্রাপ্তবয়স্ক মোট ৮৩ হাজার ১৪৫ জন মহিলাকে পুষ্টিজনিত সেবা দেওয়া হয়েছে।

কক্সবাজারে অবস্থিত ১১ লাখ ১৮ হাজার ৫৭৯ জন রোহিঙ্গা অস্থায়ী ১ লাখ ১১ হাজার ঘরে বসবাস করছে। তাদের জন্য মোট ৭টি ফিল্ড হাসপাতাল ও ১৬২টি প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিচর্যা কেন্দ্র স্থাপন করে সরকার। এর মধ্যে ১০টি হাসপাতাল/স্বাস্থ্যকেন্দ্র ২৪ ঘণ্টা সেবা প্রদান করছে। কুতুপালংয়ে অবস্থানরত সাধারণ শিশু ও নারীদের পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের স্থানীয় ১২টি কেন্দ্রের মাধ্যমে পরিবার পরিকল্পনা এবং মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করছে। এছাড়া এমএসএফ ও আরএইচইউ পরিচালিত স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে বাড়িয়ে ৩৫ শয্যার হাসপাতালে রূপান্তর করা হয়েছে।

এসব রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এখন পর্যন্ত গর্ভবতী নারী চিহ্নিত হয়েছে ৩১ হাজার ২৫৮ জন। শিশু জন্মগ্রহণ করেছে ৩ হাজার ৫৫৪ জন। আর এতিম শিশু রয়েছে ৩৯ হাজার ৮৪১ জন। কক্সবাজারের সিভিল সার্জন অফিসের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।