তুরস্কের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সাথে নেটো আলোচনায় সুইডেন ও ফিনল্যান্ড
সুইডেন ও ফিনল্যান্ডের শীর্ষ কর্মকর্তারা আংকারায় বুধবার (২৫ মে) তুরস্কের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রায় পাঁচ ঘন্টা আলাপ আলোচনা করেন। তারা তাদের দেশের নেটোতে যোগ দেওয়ার ব্যাপারে তুরস্কের কঠোর আপত্তি কাটিয়ে তোলার চেষ্টা করছিলেন।
সুইডেন ও ফিনল্যান্ড গত সপ্তাহে নোটোতে যোগদানের ব্যাপারে তাদের লিখিত আবেদনপত্র জমা দিয়েছে । এই পদক্ষেপটি হচ্ছে ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধের অন্যতম প্রধান ভূ-রাজনৈতিক বিভাজন এবং এর ফলে ইউরোপের নিরাপত্তার মানচিত্রটা নতুন করে আঁকা হতে পারে।
তুরস্ক বলেছে এই দেশগুলির পশ্চিমা সামরিক জোটের সদস্যতা লাভের তারা বিরোধীতা করছে কারণ সুইডেন এবং কিছুটা কম হলেও ফিনল্যান্ডের বিরুদ্ধে তাদের অভিযোগ রয়েছে। তুরস্ক মনে করে ঐ দু’টি দেশ কুর্দিশ ওয়ার্কার্স পার্টি বা পিকেকে এবং অন্যান্য গোষ্ঠীকে সমর্থন করে যাদেরকে তুরস্ক নিজেদের দেশের নিরাপত্তার প্রতি হুমকি বলে গণ্য করে।
তুরস্কের অনেক মিত্র পক্ষই পিকেকে’কে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হিসেব তালিকাবদ্ধ করেছে । পিকেকে এক দশক ধরে তুরস্কের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে যাচ্ছে এবং এই সংঘাতে হাজার হাজার লোকের প্রাণহানি ঘটেছে।
তুরস্কের সরকার সে দেশের উপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার জন্য এবং সন্দেহভাজন সন্ত্রাসীদের প্রত্যর্পণ করতে অস্বীকার করার জন্য ফিনল্যান্ড ও সুইডেনকে দোষারোপ করছে।
তুরস্কের আপত্তির কারণে রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের মুখে স্টকহোম ও হেলিসংকির দ্রুত নেটোতে যোগ দেয়ার আশা ব্যাহত হয়েছে এবং ট্রান্স-আটলান্টিক ঐ জোটের বিশ্বাসযোগ্যতাকে ঝুঁকির মুখে ফেলেছে।নতুন সদস্যপদ অনুমোদনের জন্য নেটোর তিরিশটি সদস্যের সকলকেই সম্মত হতে হবে।
তুরস্কের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন সুইডেন ও ফিনল্যান্ডের প্রতিনিধিদল প্রেসিডেন্ট রেজেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের মুখপাত্র ইব্রাহিম কালিন ও তুরস্কের উপ-পররাষ্ট্র মন্ত্রী সেদাত ওনালের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সুইডেনের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন স্টেট সেক্রেটারি অস্কার স্টেনসট্রম এবং ফিনল্যান্ডের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রকের আন্ডার সেক্রেটারি জুক্কা সালোভারা।
এদিকে স্টকহোমে ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট চার্লস মিশেলের সঙ্গে এক বৈঠকের পর সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী মাগডালেনা অ্যান্ডারসন বলেন যে তুরস্কের সঙ্গে আলোচনার সময়ে যে সব দাবি ভেসে বেড়াচ্ছে তার দেশ সে বিষয়টি ‘পরিস্কার করে’ জানাতে চায়। অ্যান্ডার্সন বলেন, “ আমরা কোন সন্ত্রাসী সংগঠনকে অর্থ কিংবা অস্ত্র দেই না”।
বুধবার আরো পরের দিকে এস্তোনিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এক সংবাদ সম্মেলনে অ্যান্ডারসন বলেন, “ এই সময়ে আমাদের নিরাপত্তা জোরালো করাটা জরুরি”। তিনি বলেন তুরস্কের সঙ্গে সুইডেনের “গঠনমূলক সংলাপ” হয়েছে এবং তাঁর দেশ. “বিভিন্ন বিষয়ে ভুল বোঝাবুঝি এবং সকল প্রশ্নের নিস্পত্তি করতে আগ্রহী”।
মিশেল, যিনি সুইডেন থেকে স্টকহোমে যাবেন বলে কথা আছে, তিনি বলেন এটা হচ্ছে “সুইডেনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সময়” এবং “আমরা আপনাদের ইচ্ছার প্রতি সম্পূর্ণ সমর্থন জানাই”।
তুরস্ক সুইডেনের কাছ থেকে যা দাবি করছে সে সম্পর্কে পাঁচটি বিষয়ে সুনিশ্চয়তা চায় যার মধ্যে রয়েছে তাদের কথায়, “ সন্ত্রাসবাদের প্রতি রাজনৈতিক সমর্থনের পরিসমাপ্তি ঘটানো”. “সন্ত্রাসবাদকে অর্থায়নের উৎস নিশ্চিহ্ন করে দেয়া” এবং নিষিদ্ধ ঘোষিত পিকেকে এবং এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সিরিয়ান কুর্দিশ মিলিশিয়া গোষ্ঠিকে “ অস্ত্র সহায়তা প্রদান” বন্ধ করতে হবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন