তেঁতুলিয়ায় নিয়মিত অফিস না করেই বেতন নিচ্ছেন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী খাদিজা

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার দেবনগড় ইউনিয়ন ভূমি অফিসে নিয়মিত অফিস না করেও প্রতিমাসের হাজিরা ষোল আনা দেখিয়ে বেতনসহ অফিসের আনুষঙ্গিক সুবিধা ভোগ করছেন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী খাদিজা আক্তার।
বুধবার (১৫ মে) দেবনগড় ইউনিয়নের ইউনিয়ন ভূমি অফিসে সরেজমিনে গেলে হৃদয় চন্দ্র শীল নামে অফিস সহায়ক অফিসে বসে কাজ করার দৃশ্য চোখে পড়ে অন্যদিকে ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আব্দুল গণি তার অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনে তেঁতুলিয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসে রয়েছেন জানা যায়। এদিকে অফিস সহায়ক খাদিজা আক্তার কোনো ছুটি ছাড়াই অফিসে না আসার তথ্য পাওয়া যায়।

উপজেলা ভূমি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার দেবনগড় ইউনিয়ন ভূমি অফিসে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা পদে আব্দুল গণি ও অফিস সহায়ক পদে হৃদয় চন্দ্র শীল এবং খাদিজা আক্তার দায়িত্বে রয়েছেন। তবে অফিসে নিয়মিত দায়িত্ব পালনের কথা থাকলেও খাদিজা আক্তার তাঁর খেয়াল খুশিমতো অফিসে আসেন এবং অফিস ত্যাগ করেন সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানতে পারা যায়।
জানা যায়, খাদিজা তাঁর খেয়াল খুশিমতো অফিস করার কারনে এর আগে জাতীয় দৈনিক ভোরের ডাকসহ বিভিন্ন পত্রিকায় গত সালের আগস্ট মাসে শিরোনাম প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত নিউজটি সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর দৃষ্টিগোচর হওয়ায় শোকজ করা হয় খাদিজাকে। সতর্ক করার পরেও খাদিজা তার খেয়াল খুশিমতো অফিস করার অভ্যাস ছাড়েনি।

স্থানীয় ও ভূমি সংক্রান্ত সেবা নিতে আসা লোকজনদের কাছ থেকে জানা যায়, বেশির ভাগ খাদিজা আক্তারকে অফিসে দেখা যায়না। হৃদয় নামে অফিস সহায়ক ছেলেটিকেই তাঁরা সব সময় অফিসে দেখতে পায়। অনেকেই জানান, খাদিজা অল্প কথায় খিটখিটে মেজাজের হয়ে উঠে। ভয়ে তাকে কেউ কোন কিছু সহযোগিতার কথা বলতে সাহস পাচ্ছেনা। চাকরির বয়স দীর্ঘদিন হলেও খাদিজা আক্তার অফিসের কাজে ততটা অভিজ্ঞতা সম্পন্ন নয় বলেও জানা গেছে।

অফিস সহায়ক খাদিজা আক্তার মুঠোফোনে বলেন, ‘তাঁর প্রেসার বেড়ে যাওয়ার কারণে অফিসে আসেনি। ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তাকে অবগত না করার করণ জানতে চাইলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি এবং প্রায়শই অফিসে না আসার বিষয়ে জিজ্ঞাসাতেও কোনো সদুত্তর মিলেনি। এমন প্রশ্ন জিজ্ঞাসায় সাংবাদিককে তিনি দেখা করতে বলেন।

ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আব্দুল গণি বলেন, ‘খাদিজা অফিসে না আসার বিষয়ে আমাকে কোনো অবগত করেননি। খাদিজা আক্তার কোনো ছুটি নিয়েছেন কিনা জিজ্ঞাসায় তিনি বলেন, কোনো ছুটি সে নেয়নি। তিনি আরও বলেন, শুধু আজকে নয় প্রায় তিনি এ ধরণের কাজ করে আসছে। ইতিপূর্বে এসিল্যান্ড স্যার নিজেই অফিসে এসে তাকে নিয়মিত অফিসে আসার কথা বলে গেছেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি) মাহবুবুল হাসান বলেন, ‘এর আগে দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত নিউজের মাধ্যমে এবং ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তার মাধ্যমে জানতে পেরে খাদিজার এমন কার্যকলাপে শোকজ করা হয়। সতর্ক করার পরেও যেহেতু খাদিজা কোনো কিছুকে তোয়াক্কা করছেননা এবার তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন।’