তেলাপোকায় অতিষ্ঠ জবির হলের শিক্ষার্থীরা

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) একমাত্র ছাত্রী হল ‘বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল’ উদ্বোধন হয়েছে ২০২২ সালের ১৬ই মার্চ। এখনো এক বছর পার হয়নি যতই দিন যাচ্ছে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি দিন দিন বাড়ছে।

বর্তমানে হলের বিভিন্ন ফ্লোরে তেলাপোকা উপদ্রবে অতিষ্ঠ হলে থাকা মেয়ে শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা বলেন হলের অপরিচ্ছন্নতার জন্য তেলাপোকা এত পরিমাণে বেড়ে গিয়েছে যে আমরা খাবার রান্না করে সেগুলো ঢেকে রেখে গেলেও দেখা যায় খাবারের উপর তেলাপোকা হাঁটছে এগুলো দেখে সেই খাবার তো আর খাওয়া সম্ভব না।

সম্প্রতি হলের ক্যান্টিনের খাবারে তেলাপোকা পাওয়া গেলেও এখনো তেলাপোকা দমনে কোন কার্যকারী পদক্ষেপ নেয়নি হল কর্তৃপক্ষ।

সেই সাথে রয়েছে আরো নানানমুখী সংকট ওয়াশ রুমের অবস্থাও নাজেহাল, কোথাও কোথাও নেই ওয়াশরুমের দরজার ছিটকিনি, ছিটকিনি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে কলম। আছে পানি কলের সমস্যাও। সমস্যা কথা বলার পর ঠিক করে দিলেও নেই যথেষ্ট তদারকির ব্যবস্থা। সেই সাথে ময়লা ফেলার বিনগুলোর যাচ্ছেতাই অবস্থা বলে অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা।

ঠিকমতো পরিষ্কার করে রাখা হলে তেলাপোকা ছাড়পোকার উপদ্রব থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব বলে মনে করছে একাধিক শিক্ষার্থী।

তেলাপোকার উপদ্রব নিয়ে জবি শিক্ষার্থী হুমায়রা বলেন, আমার কত খাবার নষ্ট করলো এই তেলাপোকা।
এদিকে হলের শিক্ষার্থীদের নিজে রান্না করে খাওয়ার ব্যবস্থা করে দিলেও এক ফ্লোরে মাত্র ২টি চুলায় ৪টি বার্ণার থাকায় অনেকে রান্না করার সিরিয়াল পায়না। তাই তারা বাধ্য হয়ে ব্যবহার করছেন রাইস কুকার। সেগুলো ব্যবহার করতে যেও যেন বিপত্তি পিছু ছাড়ছে না।

সদ্য বিদায়ী হল প্রভোস্ট ড. শামীমা বেগম স্বাক্ষরিত ১২ ফেব্রুয়ারীর এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় ইদানিং লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, পূর্বে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নিষেধ করা সত্ত্বেও হলের কয়েকটি রুমে ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হচ্ছে যা গ্রহণ যোগ্য নহে।

এই মর্মে উল্লেখ্য যেন এখন থেকে কোন কক্ষে যে কোন ধরনের ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি পাওয়া গেলে হল কর্তৃপক্ষ সঙ্গে সঙ্গে তা নিয়ে নিবে। সেই বিজ্ঞপ্তিতে এক শিক্ষার্থী প্রতিবাদস্বরূপ লিখেন তাহলে গ্যাস দেন না কেন?

সেই সাথে হলের ক্যান্টিনে খাবার দাম ও এখানকার রান্নার পরিবেশ আর মান নিয়েও রয়েছে নানা অভিযোগ। ছাত্রী হলে প্রতি প্লেট ভাত ১০ টাকা, পাতলা ডাল ২ টাকা, ভর্তা-শাক ১০ টাকা, রুই,সরপুঁটি, কাতলা, পাঙ্গাস, তেলাপিয়া ও কই মাছের দাম (প্রতি পিস) ৩০ টাকা, পাবদা ও ইলিশ মাছ (প্রতি পিস্) ৩৫ টাকা, ছোটমাছ ও চিংড়ি ৩৫ টাকা, দেশী মুরগী ৪০ টাকা, ব্রয়লার ৩০ টাকা, মুরগী খিচুড়ি ৫০ টাকা, তেহারী (ছোট একটুকরো মুরগীর মাংস সহ)৭০ টাকা, মুড়িঘণ্ট ২৬ টাকা এবং শাকের সাথে মাছের মাথা ভুনা ১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

হলের তেলাপোকার উপদ্রব নিয়ে হল প্রভোস্ট ড. দীপিকা রাণী সরকার বলেন, আমি ত মাত্রই কদিন হলো হলের দায়িত্ব নিলাম আস্তে আস্তে সব কিছুই সমাধান করা হবে। হলের অনেক সমস্যা আগে যারা ছিল তারা কি দায়িত্ব পালন করেছেন? হলের অনেক সমস্যা রয়েছে সব ধীরে ধীরে সমাধান করা হবে।