দক্ষিণাঞ্চলের ইলিশে সরগরম চাঁদপুর মৎস্য আড়ত
চাঁদপুরে এখন ইলিশে ভরপুর। উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে চাঁদপুর বড় স্টেশন মাছ ঘাটের ব্যবসায়ী, জেলে ও শ্রমিকদের মাঝে। প্রাণচাঞ্চল্য ফিরেছে মাছ ঘাট জুড়ে। এখন প্রতিদিন মাছ ঘাটে ৪ থেকে ৫ হাজার মণ ইলিশের আমদানি হচ্ছে বলে জানান জেলা মৎস্য বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজী শবে বরাত সরকার।
অন্যদিকে ক্রেতাদের অভিযোগ এখন ইলিশের ভরা মৌসুম চলছে অথচ দাম কমেনি। ইলিশে ভরপুর থাকা সত্বেও চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনায় আশানুরূপ ইলিশ না পাওয়ায় মাছ ব্যবসায়ীরা চিন্তিত। এদিকে ভারতে ইলিশ পাঠানো হবে। এ কারণেই দাম বেড়ে গেছে। বিক্রির লক্ষ্যে ব্যবসায়ীরা দাম ছাড়ছেন না।
চাঁদপুর বড় স্টেশন মাছ ঘাটে যা মাছ আসছে তার বেশির ভাগই নোয়াখালী, হাতিয়া, সন্দীপ, ভোলা থেকে আসা। চাঁদপুরের স্থানীয় ইলিশের পরিমাণ অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেক কম। পূর্ণিমার কারণে চলতি মৌসুমে ঘাটে সবচেয়ে বেশি ইলিশ এসেছে। যার বেশিরভাগ দক্ষিণাঞ্চল থেকে আসা।
চাঁদপুর মাছ ঘাটের আড়তদার ইমরান হোসেন ফয়সাল জানান, চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনার ইলিশ ৭শ থেকে ৯শ গ্রাম ওজনের ৯শ থেকে সাড়ে ১ হাজার টাকা, ৯শ গ্রাম থেকে এক-কেজি ওজনের ইলিশ ১২শ থেকে ১৩শ টাকা, এক-কেজি থেকে দেড় কেজি বা ১৩শ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১৪শ থেকে ১৫শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে নোয়াখালী, হাতিয়া, সন্দীপ, ভোলাসহ দক্ষিণাঞ্চল থেকে আসা ইলিশ ৭শ থেকে ৯শ গ্রাম ওজনের ৬শ থেকে সাড়ে ৭শ টাকা, ৯শ গ্রাম থেকে এক-কেজি ওজনের ইলিশ ৮শ থেকে ১১শ টাকা, এক কেজি থেকে দেড় কেজি বা ১৩শ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১২শ থেকে ১৩শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে চাঁদপুর বড় স্টেশন মাছ ঘাটে প্রচুর ইলিশের আমদানি দেখা গেছে। বড় স্টেশন মাছ ঘাটে সড়ক ও নৌ-পথে ইলিশ নিয়ে আসা হয়। ক্রেতা-বিক্রেতার ভিড়ের কারণে চাঁদপুর মাছ ঘাটে ঢোকাই কষ্টকর। ট্রলার থেকে মণে মণে দক্ষিণাঞ্চল থেকে আসা ইলিশ এনে চাঁদপুর মাছ ঘাটে বড় বড় স্তূপ করা হচ্ছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার বেশি ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে বলে দাবি করলেন সাগর থেকে বড় ট্রলার নিয়ে চাঁদপুর মাছ ঘাটে আসা জেলে আমজাদ হোসেন ও জুয়েল রানা।
চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজী শবে বরাত সরকার বলেন, দুর্গাপূজা সামনে রেখে ভারতে ২০ লাখ কেজির বেশি ইলিশ রপ্তানি করার অনুমতি দিয়েছে সরকার। ভারতে বিক্রির লক্ষ্যে ব্যবসায়ীরা দাম ছাড়ছেন না। মূলত ভারতে ইলিশ পাঠানো হবে। সে কারণেই দাম বেড়ে গেছে। তা ছাড়া ইলিশের আমদানি বাড়লেও কমেনি দাম। তারপরও আশা করি সেখানে মাছ পাঠানো হয়ে গেলে দাম কমে যাবে।
চাঁদপুর মাছ ঘাটে ইলিশ কিনতে আসা কয়েকজন জানান, চাঁদপুর মাছ ঘাটে কয়েক দিন ধরে শুধু দেখছি ইলিশ আর ইলিশ। সে জন্য ইলিশ কিনতে ঘাটে এলাম। এসে অবাক হলাম। ইলিশে ভরপুর থাকা সত্ত্বেও দাম কমেনি। ক্রেতাদের কাছে ইলিশের প্রচুর চাহিদা রয়েছে কিন্তু দাম বেশি থাকায় মাছ কিনতে পারছি না। আবার শুনছি ভারতে ইলিশ রপ্তানি করা হবে। তা হলে ব্যবসায়ীদের জন্য তো আমরা মাছ কিনতে পারবো না।
চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা গোলাম মেহেদী হাসান জানান, ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে ও ডিম ছাড়ার সুযোগ দিতে আগামী ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ২২ দিন ইলিশ আহরণ বন্ধ। সে আলোকে চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীর মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল থেকে হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী পর্যন্ত অভয়াশ্রম এলাকায় মা ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ থাকবে। এ সময় দেশব্যাপী ইলিশ আহরণ, বিপণন, পরিবহন, ক্রয়-বিক্রয়, বিনিময় ও মজুতও নিষিদ্ধ থাকবে। আরটিভি নিউজ
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন