দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনৈতিক প্রাণশক্তি বাংলাদেশ
অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন ঢাকায় সফররত শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে। বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনৈতিক প্রাণশক্তি উল্লেখ করে রাজাপক্ষে বলেন, ‘পূর্বপুরুষের ত্যাগের কারণে বাংলাদেশ আজ এখানে দাঁড়িয়ে। বাংলাদেশের জনগণের বৃহত্তর স্বাধীনতা আর অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় শ্রীলঙ্কা পাশে আছে।’
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ‘মুজিব চিরন্তন’ উৎসবের তৃতীয় দিন শুক্রবার বিকালে জাতীয় প্যারেড স্কয়ারের অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে দেয়া বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশের অর্জনের প্রশংসা করে রাজাপক্ষে বলেন, ‘দারিদ্র্য আর দুর্যোগকে জয় করে বাংলাদেশ সমৃদ্ধির পথে যাচ্ছে। ৫০ বছর আগে জন্ম নেয়া একটি রাষ্ট্রের এই অর্জনে বাংলাদেশের সরকার আর জনগণকে ধন্যবাদ।’
শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কোভিড–১৯ সংক্রমণেরকালে অনেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েও বাংলাদেশের জনগণের প্রতি সংহতি জানাতে আমি সশরীর এখানে এসেছি। দুই দেশের সম্পর্কের গভীরতার প্রতিফলনও আমার এই সফর।’
রাজাপক্ষে বলেন, ‘বাংলা নামের জনপদ থেকে প্রথম অভিবাসী আমাদের দেশে পৌঁছায় দুই হাজার বছর আগে। আর বাংলার সঙ্গে সিংহলের বাণিজ্যিক সম্পর্ক ষষ্ঠ শতাব্দী থেকে।’
বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করে তিনি কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘চিত্ত যেথা ভয়শূন্য, উচ্চ যেথা শির’ কবিতার কয়েকটি চরণ ইংরেজিতে পড়ে শোনান। তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সারা জীবনের ব্রত ছিল বাংলাদেশের জনগণ, তাদের ভাষা আর কল্যাণ। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিষয়ে দৃঢ়প্রত্যয়ী ছিলেন। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, যে স্বপ্ন তিনি দেখেছিলেন, তা তিনি পুরোপুরি দেখে যেতে পারেননি।’
শুক্রবার সকালে দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ঢাকায় পৌঁছে এক টুইট বার্তায় শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী জানান, তিনি বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও জোরদারে প্রত্যাশায় রয়েছেন।
তিনি ঢাকার উদ্দেশে কলম্বো ছাড়ার আগে এক টুইট বার্তায় বলেন, ‘আমাদের দুই দেশের পারস্পরিক কল্যাণের লক্ষ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারে আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে সম্পৃক্ততা বাড়ানোর প্রত্যাশা করছি।’
শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী সকালে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছলে তাকে লাল গালিচা সংবর্ধনা দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান।
ঢাকায় আসার পরপরই রাজাপাকসে টুইট করেন, ‘ঢাকা পৌঁছে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উষ্ণ অভ্যর্থনা ও গার্ড অব অনার পেলাম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বাগত জানিয়েছেন।’
শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের অংশ হতে পেরে সম্মানিত হয়েছেন এবং পরের দুই দিনের উৎসব ও আলোচনার প্রত্যাশায় রয়েছেন।
সফরসূচির অংশ হিসাবে রাজাপাকসে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তক অর্পণ করেন।
তিনি সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের গ্র্যান্ড বল রুমে শেখ হাসিনা আয়োজিত একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং ভোজসভায় অংশ নেন।
রাজাপাকসে শনিবার সকাল ১০টায় ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের প্রাঙ্গণে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন।
শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী সকাল ১০টা ২০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
আলোচনার পরে বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে দুই সরকার প্রধানের উপস্থিতিতে দু’দেশের মধ্যে একাধিক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী বিকাল ৫টায় বঙ্গভবনের ক্রিডেনশিয়াল হলে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন