দামের বিস্ফোরণ: আশঙ্কাজনক হারে কমেছে গরুর মাংস বিক্রি

গরুর মাংসের দামের বিস্ফোরণ ঘটার কারণে মাংসের বিক্রি আশঙ্কাজনক হারে কমেছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. ইমরান হোসেন। শনিবার (২৯ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।

গরুর মাংসের দাম বাড়ার পেছনে সিন্ডিকেট কাজ করছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, মাংসের দাম বাড়ায় খামারিরা বেশি মুনাফা করছেন এমন নয়। এখন খামারিরা মুনাফা করতে পারছেন না। বর্তমানে পশুর খাদ্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। সিন্ডিকেট করে একশ্রেণির ব্যবসায়ী গোখাদ্যের দাম বাড়িয়েছে। এর মাধ্যমে তারা বড় অংকের মুনাফা নিয়ে যাচ্ছে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সংগঠনটির ইমরান হোসেন বলেন, গত বছর এক কেজি গরুর মাংসের দাম ছিল ৪০০ টাকার কাছাকাছি। এখন দাম বেড়ে ৫০০ টাকার কাছিকাছি হয়েছে। দাম বাড়ার কারণে বর্তমানে গরুর মাংসের চাহিদা কমেছে। কারণ আমাদের দেশের একটি বড় জনগোষ্ঠীর পক্ষে ৫০০ টাকা কেজি দরে গরুর মাংস কিনে খাওয়া সম্ভব না।

তবে সরকার যদি বাজার মনিটরিং জোরদার করে এবং মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে পারে তবে গরুর মাংসের দাম কমে যাবে। আমরা সাধারণ মানুষকে ৪০০ টাকার নিচে গরুর মাংস দিতে পারবো বলেন ইমরান হোসেন।

তিনি বলেন, আপনারা বাজারে খবর নেন এই মুহূর্তে পশুর খাদ্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। বাজারে বর্তমানে ৫০ কেজির এক বস্তা কুড়ার দাম ১ হাজার ১০০ টাকা থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা। ভূষির দাম ১ হাজার ২০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকা। যা আগে বিক্রি হতো সাড়ে ৪০০ টাকায়। এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে এসব খাদ্যের দাম বাড়িয়েছে। সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।

এ দিকে আসন্ন ঈদুল আজহার কোরবানির পশুর চাহিদা সম্পূর্ণভাবে দেশীয় পশু দিয়ে পূরণ করা সম্ভব জানিয়ে ইমরান হোসেন বলেন, ২০১৬ সালে পশু কোরবানি হয় ১ কোটি ৪ লাখ ২ হাজার। এর মধ্যে গরু-মহিষ ছিল ৪৮ লাখ ২০ হাজার এবং ছাগল-ভেড়া ছিল ৫৫ লাখ ৮২ হাজার। এসব কোরবানির পশুর ৯০ শতাংশেরই যোগান ছিল দেশীয়ভাবে।

তিনি আরো বলেন, এবার দেশে কোরবানিযোগ্য পশু রয়েছে প্রায় ১ কোটি ১৫ লাখ ৫৫ হাজার। এর মধ্যে গরু-মহিষ আছে ৪০ লাখ। আর ছাগল-ভেড়া আছে প্রায় ৭৫ লাখ ৫৫ হাজার। যা দেশের মোট চাহিদা সম্পূর্ণভাবে পূরণ করতে সক্ষম। তাই পশু আমদানি ও চোরাইপথে পশু আসা বন্ধ করতে হবে। তা না হলে দেশের মাংস উৎপাদনকারী খামার ব্যবসায়ীরা লোকসানের সম্মুখীন হবেন। যা দেশের মাংস শিল্পকে ধ্বংস করবে। আর একটি শিল্প ধ্বংস হলে তার দায় অবশ্যই সরকারকে নিতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. ইমরান হোসেন, মহাসচিব শাহ ইমরান, সহ-সভাপতি আলি আজম শিবলী ও যুগ্ম সচিব নাসিম উল্লাহ প্রমুখ।