স্বপ্ন ছিল সংসার হবে সুখের, কিন্তু বাস্তবতা হয়ে দাঁড়াল তিক্ততার এক দীর্ঘ অধ্যায়। এভাবেই শুরু করলেন দিনাজপুরের বীরগঞ্জ পৌর শহরের সুজালপুর গ্রামের সুইসগেট এলাকার তরুণ সোহাগ ইসলাম (২১)। দাম্পত্য জীবনের ইতি টেনে স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার পর তিনি নিজেকে ‘মুক্ত বিহঙ্গ’ ঘোষণা করে বাড়ি ফিরে ১০ লিটার দুধ দিয়ে গোসল করেন।

এ ঘটনাটি মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

সোহাগ ইসলামের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, পৌর শহরের কবি নজরুল উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী সোহাগ ইসলাম অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। প্রায় ১৭ মাস আগে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়, বীরগঞ্জ পৌর শহরের মাকড়াই গ্রামের শেখ শাহাদাতের মেয়ে শাহিনুর আক্তার (১৯) এর সঙ্গে।

তবে বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই শুরু হয় মতবিরোধ। একপর্যায়ে তা পারিবারিক কলহে রূপ নেয় এবং বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়।

বহু বিচার-সালিশ ও মধ্যস্থতার পর অবশেষে গত ২০ এপ্রিল (রবিবার) দুই পরিবারের সম্মতিতে কাজী অফিসে গিয়ে উভয় পক্ষ একে অপরকে তালাক দেন। বিচ্ছেদের পর বাড়ি ফিরে ব্যতিক্রমধর্মী এক কর্মে নিজের “নতুন জীবন” শুরু করার ঘোষণা দেন সোহাগ। স্থানীয় বাজার থেকে ১০ লিটার দুধ কিনে গোসল করে সামাজিক মাধ্যমে ভিডিও প্রকাশ করেন তিনি। ভিডিওটি মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়।

ঘটনার বিষয়ে সোহাগ ইসলাম বলেন, বিয়ের শুরুটা ভালোই ছিল। কিন্তু দিন যত গড়িয়েছে , ততই সংসারে অশান্তি বেড়েছে। বহু চেষ্টা করেও পরিস্থিতি ঠিক করা সম্ভব হয়নি। তাই নিজেকে ও পরিবারকে মুক্ত রাখতে বিবাহ বিচ্ছেদ এই কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে। আপাতত বিয়ের চিন্তা বাদ দিয়ে জীবনে ঘুরে দাঁড়াতে চাই।

এদিকে সোহাগের বাবা মোঃ আব্দুর রহিম বলেন, ছেলের জীবনে এমন একটা পরিস্থিতি আসবে ভাবিনি। আমরা চাইছিলাম ছেলের সুখের সংসার হোক, কিন্তু বিয়ের পর থেকে মেয়ে এবং তার পরিবারের খারাপ আচরণগত কারণে সংসারে অশান্তি লেগেই ছিল। ছেলের ভবিষ্যতের কথা ভেবে এমন সিদ্ধান্তটা নিতে বাধ্য হয়েছে।

এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কেউ বিষয়টিকে ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত হিসেবে দেখলেও, অনেকেই সামাজিক মাধ্যমে এমন প্রদর্শনীকে অপ্রয়োজনীয় ও অপ্রাপ্তবয়স্ক মনোভাব হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।