দুর্গা উৎসবে সরকারি ভবনে আলোকসজ্জা ও তিন দিনের ছুটি দাবি

শারদীয় দুর্গা উৎসবকে আরও মর্যাদা দানের জন্য বঙ্গভবন, গণভবন, নগরভবন ও জেলা পর্যায়ের সরকারি ভবনগুলোতে আলোকসজ্জার ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ। পাশাপাশি এই পূজা উপলক্ষে তিন দিন সরকারি ছুটির দাবি তোলা হয়েছে।

শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দিরে আয়োজিত সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে এই দাবি করা হয়।

মতবিনিময় অনুষ্ঠানে দাবি করা হয়, পূজায় তিন দিনের সরকারি ছুটি ঘোষণার পাশাপাশি দেশের সব কারাগারে উন্নত খাবার পরিবেশন, ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট বাতিল করে হিন্দু ফাউন্ডেশন গঠন, উৎসব চলাকালে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চলা পরীক্ষাসহ নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত রাখতে হবে। এ ছাড়া পূজার সময় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ নিশ্চিত করতে হবে।

মতবিনিময় অনুষ্ঠানে অভিযোগ করা হয়, ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরের দুই তৃতীয়াংশ দেবোত্তর সম্পত্তি জবরদখল হয়ে গেছে। রমনা কালী মন্দির ও আনন্দময়ী আশ্রমের প্রায় সোয়া দুই একর জমি ফিরে পাওয়া যায়নি। এ ধরনের আরও মন্দিরের জায়গা বেদখল হয়ে গেছে, যা শুভ লক্ষণ নয়।

পূজা উদযাপন পরিষদের পক্ষ থেকে বলা হয়, রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে এবার ৩০ হাজার ৭৭টি মণ্ডপে পূজা হচ্ছে। গতবার এই সংখ্যা ছিল ২৯ হাজার ৩৯৫। কিন্তু পূজার মণ্ডপ বাড়লেও নিরাপত্তা বাড়েনি। হিন্দুদের আতঙ্ক কমেনি। যার ফলে বাংলাদেশে পূজারির সংখ্যা কমে যাচ্ছে। ১৯৫১ সালে বাংলাদেশে মোট জনসংখ্যার ২২ শতাংশ হিন্দু ছিল। ১৯৭৪ সালে কমে তা ১৪ শতাংশে এবং ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী দেশে হিন্দু জনসংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে আট দশমিক ৪ শতাংশে। এ সর্বনাশা ধারা রুখতে না পারলে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ফলপ্রসূ হবে না। জয় হবে অসুর কূলের। তবে এবার পুলিশের মহাপরিদর্শক সহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সারা দেশের পূজা মণ্ডপগুলোতে সর্বোচ্চ নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়েছেন। সে আশ্বাসের জন্য মণ্ডপগুলোর উদ্যোক্তাদের মধ্যে আশা জেগেছে।

পূজা উদযাপন পরিষদের ভাষ্য, প্রধানমন্ত্রী এবার পূজা উদযাপন পরিষদকে দেড় কোটি টাকা অনুদান দিয়েছেন। এ থেকে উৎসবের আয়োজনকে কিছুটা সংক্ষিপ্ত করে সারা দেশের আর্থিক দিক থেকে দুর্বল পূজামণ্ডপগুলোতে সাহায্য করা হবে। এ ছাড়া বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সাহায্য করা হবে।

মতবিনিময় অনুষ্ঠানে পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক তাপস কুমার পাল লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পরিষদের সভাপতি জয়ন্ত দেব, উপদেষ্টা কাজল দেবনাথ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্মল কুমার চ্যাটার্জি, মহানগর পূজা কমিটির সভাপতি ডি এন চ্যাটার্জি, সাধারণ সম্পাদক শ্যামল কুমার রায়, পূজা উদযাপন পরিষদের নেত্রী সাবিত্রী ভট্টাচার্য, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক স্বপন কুমার সাহা প্রমুখ।