দুর্নীতির মামলা প্রত্যাহার করার ক্ষমতা দুদকের, সরকারের নয়
ত্রাণের টিন চুরির এক দুর্নীতি মামলা প্রত্যাহারে আবেদনের ঘটনায় হাইকোর্ট বলেছেন, দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের সিডিউলভুক্ত কোনো দুর্নীতির মামলা দেশের কোনো আদালত থেকে সরকার প্রত্যাহারের আবেদন করতে পারে না। এসব মামলা প্রত্যাহারে দুর্নীতি দমন কমিশনই অথরাইজড বডি (অনুমোদিত সংস্থা)।
ওই মামলা প্রত্যাহার করার সংক্রান্ত বিচারিক আদালতের আদেশ বাতিল করে দেওয়া এক রায়ে বুধবার (১৩ জানুয়ারি) বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ কথা বলেছেন। গত ১০ ডিসেম্বর দেওয়া এ রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি হাইকোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।
রায়ে আদালত বলেন, এটা হতে পারে যে, সরকার দুর্নীতির কোনো মামলা প্রত্যাহার করতে চাইলে অনুরোধ জানিয়ে বা ইচ্ছা প্রকাশ করে দুর্নীতি দমন কমিশনের কাছে অনুরোধ করতে পারবে। এক্ষেত্রে তখন স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে দুদক।
ত্রাণের টিন আত্মসাতের অভিযোগে সুনামগঞ্জের বড়দল (উত্তর) ইউনিয়ন পরিষদের তৎকালীন চেয়ারম্যানসহ চারজনের বিরুদ্ধে ২০০৭ সালের ৫ এপ্রিল তাহিরপুর থানায় করা মামলা করা হয়। ২০০৯ সালে এ মামলায় অভিযোগপত্র দেওয়ার পর তা বিচারের জন্য সিলেটের বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতে পাঠানো হয়।
অভিযোগ গঠনের পর সরকার মামলাটি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয়। এরপর মামলাটি প্রত্যাহারের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ২০১০ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি সংশ্লিস্ট আদালতের বিশেষ পিপিকে চিঠি দেওয়া হয়। এরপর সংশ্লিস্ট পিপি সরকারের সিদ্ধান্তপত্র যুক্ত করে আদালতে একই বছরের ৩ আগস্ট মামলাটি প্রত্যাহারের জন্য আদালতে আবেদন জানান। সংশ্লিস্ট আদালত মামলাটি প্রত্যাহার করে ২০১২ সালের ২৬ জানুয়ারি আদেশ দেন।
ওই আদেশের বিরুদ্ধে ২০১৬ সালে হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ আবেদনে হাইকোর্ট ওই আদেশ কেন বাতিল করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। এ রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে ১০ ডিসেম্বর রুল যথাযথ বলে রায় দেন হাইকোর্ট।
রায়ে আসামিদের চার সপ্তাহের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন