দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকারের পদক্ষেপ অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করেছে

দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকারের নেয়া পদক্ষেপ বাংলাদেশের অর্থনীতিকে করেছে সমৃদ্ধ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান।

বুধবার (৯ জুন) রাজধানীর বিয়াম ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে ‘দুর্যোগে পূর্বাভাসভিত্তিক সাড়াদান কৌশল’ নির্ধারণে আয়োজিত দিনব্যাপী কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘ভৌগোলিক অবস্থান, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব, ঘনবসতি ইত্যাদি কারণে বাংলাদেশকে প্রতিনিয়ত কোনো না কোনো প্রাকৃতিক ও মানব সৃষ্ট দুর্যোগের মোকাবেলা করতে হয়। তাছাড়া ২০১৯ সালে ঘূর্ণিঝড় ফণী ও বুলবুল এবং ২০২০ সালে ঘূর্ণিঝড় আমফান মোকাবিলা করতে হয়েছে বাংলাদেশকে। এসব ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সরকারের পূর্বপ্রস্তুতি থাকায় জানমালের ক্ষয়ক্ষতি অনেক কম হয়েছে।’

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘এ বছর ঘূর্ণিঝড় ইয়াস মোকাবেলায়ও সরকারের ব্যাপক প্রস্তুতি ছিল। দারিদ্র্য বিমোচনসহ সামাজিক নিরাপত্তা অর্জনে জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকারের গৃহীত পদক্ষেপগুলো বাংলাদেশের অর্থনীতিকে করেছে সমৃদ্ধ। দারিদ্র্যমুক্ত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগ প্রশংসিত হয়েছে সারাবিশ্বে।’

এনামুর রহমান বলেন, ‘জীবন ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে দুর্যোগের পূর্ব প্রস্তুতি গ্রহণ, আসন্ন দুর্যোগের কবল থেকে নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় গ্রহণের জন্য বেতার, টেলিভিশন এবং স্থানীয়ভাবে দুর্যোগ প্রবণ এলাকায় মাইকিংয়ের মাধ্যমে প্রচারণার পাশাপাশি দ্রুত ও অধিকতর কার্যকর পদ্ধতি হিসেবে ইন্টারেক্টিভ ভয়েস রেসপন্স (আইভিআর) চালু করা হয়েছে।

মোবাইল ফোন নম্বর থেকে ১০৯০ নম্বরে ডায়াল করে দুর্যোগের আগাম বার্তা পেয়ে জনগণ পূর্ব প্রস্তুতি গ্রহণের সুযোগ পাচ্ছে। এ বার্তাকে আরও অধিকতর জনবান্ধব করার লক্ষ্যে কমিউনিটি রেডিওর মাধ্যমে স্থানীয় ভাষায় বার্তা প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’

মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোহসীন বলেন, ‘দুর্যোগে জীবন ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে দুর্যোগ সহনীয় টেকসই নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় পরিকল্পিতভাবে কাঠামোগত ও অকাঠামোগত কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। স্বাধীনতার পর উপকূলীয় অধিবাসীদের জান-মাল ও সার্বিক ক্ষয়ক্ষতি লাঘব করার লক্ষ্যে ১৯৭২ সালে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি) প্রতিষ্ঠিত হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এটিকে সরকারি কর্মসূচি হিসেবে গ্রহণ করেন। এভাবেই ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি) পরিপূর্ণভাবে যাত্রা শুরু করে এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এক নতুন মাত্রা লাভ করে। বর্তমানে প্রায় ৭৪ হাজার সিপিপি স্বেচ্ছাসেবক উপকূলীয় এলাকায় কাজ করছেন।’

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে কি-নোট পেপার উপস্থাপন করেন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রণজিৎ কুমার সেন।