দৃষ্টিনন্দন হয়ে উঠেছে পদ্মাসেতুর সংযোগ সড়ক
দৃষ্টিনন্দন হয়ে উঠেছে পদ্মা সেতুর দক্ষিণ প্রান্তের শরীয়তপুরের জাজিরা থেকে মাদারীপুরের শিবচর পর্যন্ত মহাসড়কটি। ফুল, ফল আর বনজ গাছ বেড়ে উঠেছে এখানে। সবুজ ঘাসের বুকে উঁকি দিচ্ছে দিগন্ত বিস্তৃত সাদা ঘাসফুল। যা সৌন্দর্যকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
পদ্মা সেতুর সংযোগ সড়কের শরীয়তপুরের জাজিরা থেকে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার পাঁচ্চর গোলচত্বর পর্যন্ত ৬ লেনের এই এক্সপ্রেস হাইওয়ের মাঝখানের অংশে লাগানো হয়েছে নানা রঙের ফুলের গাছ। সড়কের ঢালুতে লাগানো ফলজ ও বনজ গাছের চারাও বেড়ে উঠছে। চালক ও যাত্রীরা আরও অবাক হন সড়কের মাঝখানে দৃষ্টিনন্দন ফুল গাছের সমারোহ দেখে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, পাশাপাশি তিন সারির মহাসড়ক। দুই সারিতে দ্রুতগতির যানবাহন চলে। আর নিচের সারিতে স্থানীয় ছোট-বড় গাড়ি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ১০ কিলোমিটার মহাসড়কে পাতাবাহার, মশুন্ডা, সোনালু বন্দুন, বোতল ব্রাশ, এরিকা পাম্প, উইপিং দেবদারু, রঙ্গনসহ বিভিন্ন ধরনের বাহারি ফুলের প্রায় ৬ হাজার গাছ লাগানো হয়েছে। আর মহাসড়কের ঢাল ও মধ্যবর্তী সমতল জায়গায় লাগানো হয়েছে আম, জাম, কাঁঠাল, কৃষ্ণচূড়া, বকুল, কাঞ্চন, সোনালু, মহুয়া, বহেরা, অর্জুন, পলাশ, শিমুলসহ প্রায় ৩৯ হাজার ফলদ ও ওষুধি গাছ।
খুলনা থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে ঢাকাগামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সাইদুর রহমান এই মহাসড়কের পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছিলেন। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আসলে না দেখলে বিশ্বাসই হতো না,মহাসড়কটি ফুলের গাছ দিয়ে এমনভাবে সাজানো হয়েছে। মোটরসাইকেল নিয়ে যাচ্ছি,দুই পাশের সৌন্দর্য দেখে মন ভরে যাচ্ছে।’
প্রবাসী রেজাউল আমিন বলেন,‘পদ্মা সেতুর এপ্রোচ রোডের আইল্যান্ডে যে গাছ লাগানো হয়েছে, তা অসাধারণ। এই ১০ কিলোমিটার সড়ক দিয়ে চলার সময় মনে হয় না বাংলাদেশে আছি। উন্নত বিশ্বের কোনও দেশে আছি বললেও ভুল হবে। কারণ সড়কের মাঝে আইল্যান্ডে ফুলের গাছ, দুই পাশে ফলের গাছ, এমন সৌন্দর্যময় হাইওয়ে অন্য কোথাও দেখিনি।’
শিবচরের মাদবরচর ইউনিয়নের সবুজ নামের এক তরুণ বলেন, ‘গাছ-পালা ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য যে পরিবেশ কতটা পরিবর্তন করে দিতে পারে তা এই ফুল ও ফলের গাছ দেখেই বোঝা যায়। প্রতিদিন বিকালে এই সড়কে ভিড় করেন সৌন্দর্যপিপাসু মানুষজন। আমরা বলতে পারি পদ্মা সেতু এলাকায় আমাদের বাড়ি। স্থানীয়রা গর্বিত এই সড়ক নিয়ে। তাদের আশা উপযুক্ত রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে ফুল ও ফলের গাছ বড় হলে আরও দৃষ্টিনন্দন হবে।’
ভ্যানচালক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘এখানে সরকার যে ধরনের কাজ করেছে, তা পূর্বের জন্মের কেউ স্বপ্নেও দেখেনি। এ যেন এক গায়েবী জিনিস তৈরি করেছে সরকার। এখানে এই বড় বড় রাস্তা ও পাশে ফুল-ফলের গাছ দেখতে এলাকার মানুষজন বিকালে ভিড় করে।’ মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক ওয়াহিদুল ইসলাম বলেন,‘বনবিভাগের মাধ্যমে পদ্মা সেতু কর্তৃপক্ষ গত বছর দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে দুই বছর মেয়াদী এই প্রকল্প হাতে নেয়। এরই অংশ হিসেবে ফুল, ফল ও ওষুধি গাছের চারা লাগানো হয়। এই সৌন্দর্য যাতে নষ্ট না হয়, সেজন্য প্রয়োজনে জেলা বা উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে আগামীতে এই গাছগুলোর উপযুক্ত রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে।’বাংলাট্রিবিউনের সৌজন্যে প্রকাশিত।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন