দেশজুড়ে গুজব ও গণপিটুনি রোধে পুলিশের মাইকিং
দেশজুড়ে চলমান গুজব এবং গণপিটুনি প্রতিরোধে এলাকায় এলাকায় মাইকিং করছে পুলিশ। সোমবার বান্দরবান জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে মাইকিং করে থানচি থানা পুলিশ। মাইকিংয়ের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
মাইকিংয়ে বলা হয়, নির্মাণাধীন পদ্মা সেতুতে মানুষের মাথা লাগবে বলে অহেতুক গুজব ছড়ানো হচ্ছে। এলাকায় অপরিচিত পুরুষ বা মহিলা দেখলে গণপিটুনি দিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি না ঘটানোর জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। সেইসঙ্গে ছেলেধরা হিসেবে কাউকে সন্দেহ হলে পুলিশকে জানানো জন্য বলা হয়েছে।
এদিকে দেশজুড়ে গণপিটুনিতে একের পর এক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে পুলিশ সদর দফতর। সোমবার পুলিশ সদর দফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি-অপারেশন্স) সাঈদ তারিকুল হাসান স্বাক্ষরিত একটি নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে দেশের সব পুলিশ ইউনিটে।
গুজব প্রতিরোধে পুলিশের সব ইউনিট প্রধান ও জেলা পুলিশ সুপারদের কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে নির্দেশনায়।
গুজব ঠেকাতে প্রতিটি এলাকায় মাইকিং, লিফলেট বিতরণ ও পোস্টারিং করার কথাও বলা হয়েছে নির্দেশনায়। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কেউ যদি ছেলেধরা সংক্রান্ত পোস্ট বা মন্তব্য ছাড়ায় তাহলে তার বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নির্দেশনায় বলা হয়, সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে ছেলেধরা গুজব ছড়িয়ে গণপিটুনিতে হত্যার মাধ্যমে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির অপচেষ্টা চলছে। গণপিটুনি দিয়ে হত্যা ও গুজব ছড়িয়ে দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করা ফৌজদারি অপরাধ। গুজব ছড়িয়ে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা বন্ধে সংশ্লিষ্ট ইউনিট/জেলা পুলিশ সুপারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
পুলিশ সদর দফতরের এ বার্তায় চারটি উপায়ে ছেলেধরা গুজব ও গণপিটুনি প্রতিরোধে পুলিশের ইউনিটগুলোকে কাজ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকেন্দ্রিক নির্দেশনায় বলা হয়েছে- দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকেন্দ্রিক টহল ও গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো, স্কুলে অভিভাবক ও গভর্নিং বডির সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময়, ছুটির পর অভিবাবকদের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের স্কুল ত্যাগের বিষয়টি শিক্ষক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের মাধ্যমে নিশ্চিত করা এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সিসিটিভি স্থাপন করা।
জনসচেতনতা বাড়াতে প্রতিটি এলাকায় ছেলেধরার গুজবে কান না দিতে এবং পুলিশকে তাৎক্ষণিক তথ্য জানানোর জন্য মাইকিং করা, লিফলেট বিতরণ ও পোস্টারিং করতে বলা হয়েছে। এছাড়া এলাকার জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন, জনসাধারণদের নিয়ে উঠান বৈঠকের মাধ্যমে সচেতনতা বাড়ানো, আইন নিজের হাতে তুলে না নিয়ে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার বিষয়ে জনসাধারণকে উদ্বুদ্ধ করা, প্রতিদিন মসজিদে এ সংক্রান্ত বক্তব্য দেওয়ার ব্যবস্থা এবং মেট্রোপলিটন ও জেলা শহরের বস্তিতে নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মনিটরিংয়ের বিষয়ে- ফেসবুক, ইউটিউব, টুইটার, ব্লগসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেলেধরা সংক্রান্ত বিভ্রান্তিমূলক পোস্ট, মন্তব্য বা গুজব ছড়ানোদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
এছাড়া গুজবে কান দিয়ে ছেলেধরা বিষয়ে আতঙ্কিত না হয়ে জনসচেতনতা বাড়াতে প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় প্রচারের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন