দেশে শ্রমশক্তির অর্ধেক মানুষই অদক্ষ

প্রতি বছর দেশে যে পরিমাণ শ্রমশক্তি তৈরি হচ্ছে তার প্রায় অর্ধেক মানুষ অদক্ষ। কিছুক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক ডিগ্রী থাকলেও কর্মক্ষেত্রের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা নেই তাদের। আবার প্রচলিত ধারার পড়াশুনায় পিছিয়ে পড়াদের অনেকেই থাকছেন সমাজ ও পরিবারের বোঝা হয়ে। দক্ষ জনশক্তি তৈরির মাধ্যমে এই সংকট উত্তরণে সরকারের নীতি সহায়তার দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

এসএসসি পাস করে ব্রাক্ষণবাড়িয়ার মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস একমাস ধরে শিখছেন নকশি কাঁথা তৈরির কলাকৌশল। বাংলাদেশ শিল্প কারিগরি সহায়তা কেন্দ্রে জান্নাতুলের মতো প্রতি বছর নানা ক্ষেত্রে দক্ষতা অর্জন করছেন কয়েক হাজার তরুণ তরুণী। প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরা বলেন, ‘লেখাপড়ার পাশাপাশি এই প্রশিক্ষণ নিয়ে আমি কিছু করতে চাই। আমি এখানকার মতো প্রতিষ্ঠান গড়তে চাই।’

শুধু এখানেই নয় সরকারি বেসরকারি মিলিয়ে দেশে প্রায় ১৩ হাজার প্রতিষ্ঠান দক্ষতা বৃদ্ধি করছে ১২ থেকে ১৩ লাখ মানুষের। কিন্তু প্রতি বছর শ্রমবাজারে আসছেন ২০ থেকে ২২ লাখ মানুষ। তাই ১৩ হাজারের সংখ্যাটি যথেষ্ট নয় বলে মনে করেন অনেকে।

বাংলাদেশ শিল্প কারিগরি সহায়তা কেন্দ্রের (বিটাক) ব্যব্স্থাপনা পরিচালক মফিজুর রহমান বলেন, ‘আমাদের আরো ১০০ ইপিজেড হচ্ছে। সেই ইপিজেডে কি পরিমাণ দক্ষ জনবল লাগবে তা কি হিসেব আছে। যা দক্ষ জনবল রয়েছে তা পর্যাপ্ত নয়।’

এসব প্রতিষ্ঠানের মাঝে সমন্বয় করে দক্ষ কর্মী তৈরির পরামর্শ দেবার কথা যে কর্তৃপক্ষের তারা বলছেন, সরকার একটি আইন করছে যে আইনটি হলে সব প্রতিষ্ঠানকে এক ছাতার নিচে আনা যাবে।

জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কাউন্সিল প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম খোরশেদ আলম বলেন, ‘সংসদের প্রস্তাব উপস্থাপন করা হলে এই প্রতিষ্ঠান একটা দায়িত্ব পাবে। সারাদেশে একটা দক্ষতার লেভেল অনুযায়ী কারিকুলামটা যাতে একই রকম হয়। জাতীয় ভিত্তিতে যাতে লোকদের দক্ষতার সনদ দেওয়া যায়।’

দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে কয়েক বছর ধরে কাজ করছে ব্র্যাক। তারা প্রায় পৌনে একলাখ মানুষকে নানা ক্ষেত্রে দক্ষতার প্রশিক্ষণ দেয় প্রতিবছর।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শুধু কর্মক্ষেত্রের জন্যই নয় দক্ষতা অর্জনের পর অনেকে যাতে উদ্যোক্তা হতে পারে সেটিও বিবেচনায় রাখা উচিত।