দ্বিতীয় দিনের মতো ময়মনসিংহের গৌরীপুরে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের কর্মবিরতি চলছে

২০ শতাংশ হারে বাড়ি ভাড়াসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষকদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জ, সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপের প্রতিবাদে ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলায় লাগাতার কর্মবিরতি পালন করছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা।
মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিনের মতো সকাল থেকে গৌরীপুরের এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ক্লাস বন্ধ রয়েছে। একাধিক স্কুল কলেজে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সকাল ৯টার দিকে শিক্ষকরা প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত হলেও ক্লাসসহ কোনো কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছেন না।
অন্যদিকে শিক্ষকদের একাংশ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রবিবার থেকে অবস্থান করছেন। প্রজ্ঞাপন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষক নেতারা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পৌর শহরের গৌরীপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বিদ্যালয়ে আসছেন। তাঁরা শ্রেণিকক্ষে পাঠদানসহ অন্যান্য কাজ না করলেও স্টাফরুমে বসে আছেন। কেউ গল্প করছেন, কেউ মুঠোফোন টিপছেন কিংবা কেউ কেউ একেবারেই অলস বসে আছেন।
গৌরীপুর শাহগঞ্জ স্কুল এণ্ড কলেজের কলেজের অধ্যক্ষ মো. আবদুশ্ শাকুর বলেন, শিক্ষদের উপর হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। সারা দেশের শিক্ষকদের ন্যায় আমরাও কর্মবিরতি পালন করছি। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে।”
গৌরীপুর ইসলামাবাদ ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মো. রুকুন উদ্দিন বলেন “সারা দেশের শিক্ষকদের ন্যায় আমরাও শিক্ষকদের স্বার্থে এই কর্মবিরতিতে অংশ নিচ্ছি। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস বর্জন চলবে।”
ডক্টর এম. আর. করিম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম জানান, জাতীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আমাদের বিদ্যালয়েও পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে।
২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া এবং ১ হাজার ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা ও কর্মচারীদের ৭৫ শতাংশ হারে উৎসব ভাতা প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে।
রবিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষকদের ধস্তাধস্তি ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এতে এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি হলে সংগঠনের নেতারা শিক্ষক সমাজকে শান্ত থাকার আহ্বান জানান এবং শহীদ মিনারে অবস্থান নেওয়ার নির্দেশ দেন। পরে শিক্ষকরা সেখান থেকেই লাগাতার আন্দোলনের ঘোষণা দেন।
রবিবার বিকেলে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনুষ্ঠিত অবস্থান কর্মসূচি থেকে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন আজিজী অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ঘোষণা দেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের গত ১৩ আগস্ট জাতীয় প্রেসক্লাবের শিক্ষক সমাবেশে লক্ষাধিক শিক্ষক-কর্মচারী উপস্থিতিতে শিক্ষা উপদেষ্টা শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বেসিকের ২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া, ১৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা ও উৎসব ভাতা বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু দীর্ঘ দুই মাস পার হলেও প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়ায় এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা আবার মাঠে নামেন।
সূত্রমতে, শিক্ষক-কর্মচারীদের আন্দোলনের মুখে নতুন করে বাড়িভাড়া ভাতা ও মেডিকেল ভাতার বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে নতুন প্রস্তাবনা গত ৫ অক্টোবর অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। এতে বাড়িভাড়া ২০ শতাংশ নির্ধারণ, কর্মচারীদের উৎসব ভাতা ৭৫ শতাংশ এবং চিকিৎসা ভাতা এক হাজার টাকার প্রস্তাব করেন শিক্ষা উপদেষ্টা।

এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন