ধরপাকড়: সারা দেশে গ্রেপ্তার ১১০০
খালেদা জিয়ার একটি মামলার রায়কে কেন্দ্র করে রাজধানীসহ সারা দেশে বিএনপি নেতাকর্মীদের ধরপাকড় শুরু হয়েছে। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য থেকে শুরু করে নির্বাহী কমিটি, জেলা-উপজেলাসহ তৃণমূল পর্যায়ের বিভিন্ন নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে ব্যাপক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তল্লাশি চালাচ্ছে বলে অভিযোগ বিএনপির।
এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেনন, বিএনপি নেতাকর্মীদের নয় বরং ছবি দেখে পুলিশের ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করা হচ্ছে। এর পেছনে কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নেই।
এদিকে মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন দলটির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। এ সময় তিনি বলেন, ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় ঘিরে এ পর্যন্ত সারা দেশে ১১০০ জনেরও বেশি নেতা-কর্মীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।
রিজভী বলেন, এটি কোনো বিচ্ছিন্ন নৃশংসতা নয়, ৮ ফেব্রুয়ারিতে সরকারপ্রধানের ইচ্ছা পূরণ করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ‘বেপরোয়া উন্মত্ততায়’ বিএনপির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ছে। সরকার মনে হয় রায় নির্ধারণ করে রেখেছে। আর এ জন্যই এর প্রতিক্রিয়ার অজানা ‘আতঙ্কে’ বিএনপি নেতা-কর্মীদের ওপর বুলডোজার চালাচ্ছে।
গ্রেপ্তারের একটি সংক্ষিপ্ত চিত্র সাংবাদিকদের সামনে উপস্থাপন করেন রিজভী:
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেল সিলেট থেকে ফেরার পর তিনি কোথায় আছেন আমরা এখন পর্যন্ত জানতে পারিনি।
ঢাকা: শাহবাগ থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি ইকবাল হাসান গ্রেপ্তার।
মৌলভীবাজার: রাজনগর উপজেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক সুন্দর বকস, প্রচার সম্পাদক জগলুসহ অন্তত ১৪ জন গ্রেপ্তার।
বগুড়া: সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড: মাহবুবুল আলম শাহীন, কাহালু উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেন আজাদ, জেলা যুবদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আমিরুল ইসলাম, যুবদল নেতা বাপ্পী, শাহীন শেখ, ছাত্রনেতা সন্ধান, সোনাতলা উপজেলা জোড়গাছা ইউনিয়ন যুবদল নেতা মিলন, বালুয়া ইউনিয়ন বিএনপি নেতা বিটুল ও ফজলু গ্রেপ্তার।
রাঙ্গামাটি: জেলা বিএনপি সভাপতি শাহ আলম, জেলা বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শহীদ চৌধুরী, প্রচার সম্পাদক আবুল হোসেন বালি, জেলা যুবদল সভাপতি সাইফুল ইসলাম শাকিল, সাধারণ সম্পাদক মো. ইলিয়াস, জেলা ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক মো. কামাল উদ্দিন, জেলা যুবদলের নেতা সাখাওয়াত হোসেন সুজা।
চট্টগ্রাম (দঃ): বাঁশখালী পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ-আল মবিন গ্রেপ্তার।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা: কসবা উপজেলাধীন খারেরা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান, ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আবু হানিফ, কসবা পৌর ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক শিমুল, কুঠি ইউনিয়ন ছাত্রদলের নেতা হৃদয়, বাদৈর ইউনিয়ন যুবদলের আহবায়ক কমিটির সদস্য সোহাগ, রমজান, শাফিউদ্দিন, সাদ্দামসহ ৩০ জনের অধিক নেতাকর্মীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে।
ফেনী জেলা: ছাগলনাইয়া উপজেলাধীন ৫নং মহামায়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের সহ-সম্পাদক মুন্সি একরামুল হক শাহীন, সদর উপজেলা ছাত্রদল নেতা নুর করিমসহ ৭ জনের অধিক নেতাকর্মী গ্রেপ্তার।
চট্রগ্রাম মহানগর: ইপিজেড থানা বিএনপির সহ-সভাপতি মো. শাহজাহানকে বাসায় না পেয়ে তার স্কুল পড়ুয়া ছেলেকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়।
ময়মনসিংহ উত্তর: ধোবাউড়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব মফিজ উদ্দিনের বাড়িতে হামলা চালিয়ে তাকে না পেয়ে তার কলেজ পড়ুয়া ছেলে ফরহাদ আল রাজিকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়।
দিনাজপুর: দিনাজপুর জেলা বিএনপির আহবায়ক আক্তারুজ্জামানসহ ৩ জনের অধিক নেতাকর্মী গ্রেপ্তার।
নরসিংদী: রায়পুরা উপজেলা বিএনপি নেতা জালাল উদ্দিন, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা ফয়েজ উদ্দিন, বিএনপি নেতা রাহাত মিয়া, মোশারফ মিয়া, নেকবুল মিয়া, ওছমান মিয়া, যুবদল নেতা আলমগীরসহ ১৫ জনের অধিক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা: পটিয়া উপজেলায় ৩০ জনের অধিক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার।
গাজীপুর: মহানগরের সাধারণ সম্পাদক বাবুল চৌধুরী এবং ঢাকা মহানগর সদস্য আলমগীর গ্রেপ্তার।
পাবনা জেলা: পাবনা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মনোয়ার হোসেন শামীম, পাবনা সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রিহানুল ইসলাম বুলাল এবং পাবনা বেড়া পৌর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মামুন হোসেন গ্রেপ্তার।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন