ধানের শীষ এখন জনগণের পেটের বিষ : কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, মওদুদ আহমদ মিথ্যাচার করছেন, নিজেদের লোকজনকে দিয়ে বোমা মেরে আওয়ামী লীগের ওপর দোষ চাপাচ্ছেন। মওদুদ আহমদ এলাকায় এলে লোকজন তার কাছে আসেন না। ধানের শীষ জনগণের কাছে এখন পেটের বিষে পরিণত হয়েছে।
সোমবার বিকালে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের সরকারি মুজিব কলেজগেটে পথসভায় জনতার উদ্দেশে তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, কোম্পানীগঞ্জ ও কবিরহাট আমার দুই ভাই। দুই উপজেলায় আমি সমানভাবে উন্নয়ন করেছি। এছাড়া আমি সারা দেশে ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। প্রধানমন্ত্রী আমাকে দায়িত্ব দেয়ার পর আমি প্রাণপণে চেষ্টা করেছি। পদ্মা সেতু থেকে শুরু করে ঢাকা শহর ও চট্টগ্রাম শহরে ফ্লাইওভার নির্মাণ করে যানজট নিরসন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে রাস্তাঘাট, কালভার্ট, ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে। এসব উন্নয়ন এখন দৃশ্যমান। আজকে ঢাকা শহরে মেট্রোরেল, কর্ণফুলী নদীর নিচে টানেল নির্মাণকাজ চলছে। ফেনী থেকে নোয়াখালী, নোয়াখালী থেকে জোরালগঞ্জ পর্যন্ত সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। এ উন্নয়নের জন্য শেখ হাসিনাকে সম্মান দিতে হবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, শেখ হাসিনাকে সম্মান দিতে হলে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে প্রার্থীকে বিজয়ী করতে হবে। এ সরকারের আমলে কোম্পানীগঞ্জ-কবিরহাট উপজেলায় ৯৩ শতাংশ বিদ্যুতায়ন করা হয়েছে। আমি সরকারি-বেসরকারি কলেজ ও হাইস্কুল মাদ্রাসায় অনেক একাডেমিক ভবন নির্মাণ করেছি।
তিনি বলেন, মওদুদ আহমদ ক্ষমতায় থাকাকালে এ এলাকায় তেমন উল্লেখযোগ্য কোনো উন্নয়ন করেননি। এ এলাকাটিকে অন্ধকারে রেখেছিলেন। আগামীতে আমি ক্ষমতায় এলে দাগনভুঞা থেকে বসুরহাট পর্যন্ত ফোরলেন সড়ক নির্মাণ করব। আমি পুনরায় নির্বাচিত হলে আগামী ৬ মাসের মধ্যে শতভাগ বিদ্যুতায়ন করব আমার নির্বাচনী এলাকায়।
তিনি আরও বলেন, বামনীয়া নদী ও ছোট ফেনী নদীর ভাঙনে হাজার হাজার পরিবার গৃহহারা হয়ে গেছে। আমরা ক্ষমতায় আসার পর মুছাপুর ক্লোজার নির্মাণ করে নদীভাঙনের হাত থেকে কোম্পানীগঞ্জ-সোনাগাজী এলাকাকে রক্ষা করেছি। ক্লোজার নির্মাণের কারণে এ এলাকার রবিশষ্যের উৎপাদন অনেক বেড়ে গেছে। হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ৫০ বছরের দাবি ছিল নোয়াখালী খাল সংস্কার করার জন্য। অতীতে কেউ এ খান সংস্কার করতে পারেনি। শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতায় আসার পর নোয়াখালী খাল সংস্কার করা হয়েছে। এখন আর নোয়াখালীতে জলাবদ্ধতা নেই। এখানে সেনাবাহিনী মুছাপুর থেকে সুবর্ণচর পর্যন্ত বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ করছে। বেড়িবাঁধ নির্মাণকাজ শেষ হলে এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন হবে।
তিনি বলেন, এসব কাজ সমাপ্ত করতে হলে শেখ হাসিনাকে দরকার। আজকে ইউনিয়ন পরিষদে তথ্যসেবা কেন্দ্রের মাধ্যমে জনগণ সুফল ভোগ করছে। শেখ হাসিনা নারীদের সম্মান দিয়েছেন। নারীরা আজকে বিধবা ভাতা, বৃদ্ধ ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতা ভোগ করছে, যা অতীতে তারা পায়নি। সন্তান জন্ম হলে বাবার নাম থাকত। এখন বাবার নামের সঙ্গে মার নাম সংযুক্ত করা হচ্ছে।
সেতুমন্ত্রী বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উপবৃত্তির টাকা মায়েরা উত্তোলন করছে। এখন ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে ১৪ কোটি মানুষের হাতে ফোন। বিএনপির সময় মানুষের হাতে ফোন ছিল না ও ইন্টারনেট ছিল না। আগে আমরা স্যাটেলাইট বিদেশ থেকে ভাড়া করে আনতাম, এখন আমরা নিজেদের বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ব্যবহার করছি। আমাদের স্যাটেলাইটে আমরা ফুটবল ও ক্রিকেট খেলা দেখি। আজকে সারা দেশ আলোকিত, যেখানে যান সেখানে উন্নয়ন। আগামীতে তরুণ সমাজ ও নারীরা হবে আওয়ামী লীগের উন্নয়নের বিজয়ের হাতিয়ার।
এ সময় নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহাব উদ্দিন, বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াত খান, সাধারণ সম্পাদক নুর নবী চৌধুরী, বসুরহাট পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি রেয়াজুল হক লিটন, সাধারণ সম্পাদক আবুল খায়ের, যুবলীগের সভাপতি ভাইস চেয়ারম্যান আজম পাশা চৌধুরী রুমেল, সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক গোলাম ছারওয়ার, স্বাধীনতা ব্যাংকার্স পরিষদের সদস্য ফখরুল ইসলাম রাহাত, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নিজাম উদ্দিন মুন্না, সরকারি মুজিব কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি নুর এ মাওলা রাজু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন