নওগাঁয় জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা

নওগাঁয় ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে জেলা শহর সহ উপজেলার বিভিন্ন মার্কেট গুলোতে জমে উঠেছে কেনাকাটা। ঈদের আনন্দ ভাগ করে নিতে গ্রামের অত্যন্ত অঞ্চল ও শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে আসছেন ক্রেতারা। তবে এই আনন্দের মাঝে রয়েছে কিছু অসন্তোষও। বিশেষ করে দাম নিয়ে কিছুটা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন ক্রেতারা।

গতকাল শনিবার (২২ মার্চ) নওগাঁ জেলা শহর সহ উপজেলার মার্কেটগুলোতে ঘুরে দেখা যায়, ক্রেতাদের উপস্থিতি তুলনামূলকভাবে বেশি। নওগাঁর বিখ্যাত কাপুড় মার্কেট মসজিদ মার্কেট,সোনার পট্টি মার্কেট কাপুড় মার্কেট, নওগাঁ গার্মেন্টস পট্টি মার্কেট, সহ বিভিন্ন গার্মেন্টস মার্কেটে ঈদের কেনাকাটা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন মানুষ।

পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে অনেকেই এখানকার মার্কেটগুলোতে কেনাকাটা করছেন। এমনকি প্রবীণ এবং ছোট সদস্যদেরও সঙ্গে নিয়ে তারা বিভিন্ন পণ্য কিনছেন। কর্মব্যস্ত শহর নওগাঁয় এসব মার্কেটগুলোতে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় দেখা যাচ্ছে। কেনাকাটার জন্য সকাল থেকেই মানুষ আসছে, আর বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভিড় বেড়ে যাচ্ছে।

তবে, ক্রেতারা অভিযোগ করছেন যে, কিছু পণ্যের দাম অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশ কিছুটা বেড়েছে, যা তাদের জন্য সমস্যা তৈরি করেছে বিক্রেতারা জানিয়েছেন, ঈদ মৌসুমে তাদের ব্যবসা অনেকটাই বাড়ছে। বেশিরভাগ ব্যবসায়ী জানান, বাজারে ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের পোশাক, জুতা, প্রসাধনী এবং অন্যান্য পণ্য বিক্রি হচ্ছে।

কিন্তু কিছু ক্রেতা দাম নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। বিশেষত, ভারতীয় অরগেনজা, মেঘা, পাকিস্তানি সারারা, গারারা এবং শাড়ির দাম বেড়ে যাওয়ায় তারা কিছুটা হতাশ। ক্রেতাদের মধ্যে বাচ্চাদের পোশাক এবং কসমেটিক্সের চাহিদাও বেড়েছে। জেলার মহাদেবপুর থেকে আসা এক কৃষক পরিবারের সন্তান রাজু আহমেদ জানান, ঈদ আসলেই আমরা পরিবার নিয়ে কেনাকাটা করতে নওগাঁ শহরে আসি।

পছন্দের দোকানে গিয়ে কিনতে বেশ ভালো লাগে, কিন্তু দামগুলো একটু বেশি হয়ে যাচ্ছে। আরেক জন ক্রেতা সাবানা ইয়াসমিন বলেন,বাচ্চাদের জন্য এখানে কেনাকাটা করতে আসি, প্রতিবছর নওগাঁ গার্মেন্টস মার্কেটে কেনাকাটা করি। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। রোজা রেখে যখন পরিবারের সবাইকে কেনাকাটা করি, তখন ক্লান্তি হলেও মনে একটা শান্তি থাকে।

রেজাউল করিম নামের এক ক্রেতা বলেন, আমি শুধু প্রয়োজনের তাগিদেই কেনাকাটা করতে আসি। তবে এখন দাম বেশিই হয়ে গেছে, আমাদের মতো নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোর জন্য দামটা খুব একটা সহনীয় নয়। বিশেষ করে দুই মেয়ের জন্য ড্রেস কিনে দিয়েছি, কিন্তু স্ত্রীর জন্য এখনও কিনতে পারিনি।

মার্কেটের মালিকরা জানাচ্ছেন, ঈদ মৌসুমে পণ্যের বিক্রি বেশ বেড়েছে, কিন্তু তাদের কাছে কেনা পণ্যের দামও বেড়েছে, যা বিক্রির ওপর প্রভাব ফেলছে। তারা প্রতিনিয়ত ক্রেতাদের সঙ্গে দাম নিয়ে কিছু বিতণ্ডায় জড়াচ্ছেন, তবে তারা বলছেন, পোশাকের কোয়ালিটি অনুযায়ী দাম নির্ধারণ করা হয়। এবং শহরের বড় মার্কেটগুলোর মধ্যে নারীদের তুলনায় পুরুষদের ভিড় কম দেখা যাচ্ছে, তবে তরুণ-তরুণীরা বেশিরভাগ সময় শার্ট, প্যান্ট ও পাঞ্জাবির দোকানে কেনাকাটা করছেন।

এখন ঈদের কেনাকাটা জমে উঠেছে, তবে কিছু জায়গায় ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে দিয়েও লাভের মুখ দেখছেন। এবারের ঈদে পোশাকের দাম বেশি হওয়ায় অনেক পরিবারের বাজেট ছাড়িয়ে গেছে। পরিবহন খরচ ও পণ্যের দাম বাড়ানোর কারণে তারা কোনো বিকল্প পন্থা গ্রহণ করতে পারছেন না।