নওগাঁয় মজুদ করা চাল জব্দ: চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে এজাহার

নওগাঁর মহাদেবপুরে চাঁন্দাশ ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদান নবী রিপনের বিরুদ্ধে দুই মাস আগে দুস্থদের জন্য বরাদ্দ করা চাল বিতরণ না করে মজুদ করে রাখার দায়ে থানায় এজাহার দায়ের করা হয়েছে। জব্দ করা হয়েছে মজুদ করে রাখা ৫৩০ কেজি চাল।

গত শুক্রবার (১৬ আগস্ট) বিকেলে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সুলতান মাহমুদ বাদি হয়ে ইউপি চেয়ারম্যান ও অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জনের বিরুদ্ধে থানায় এ বিষয়ে একটি এজাহার দায়ের করেন। মামলার আরজিতে উল্লেখ করা হয় যে, ওই ইউনিয়নে রক্ষিত গত জুন মাসের ভিডব্লিউবি খাদ্যশস্য বিতরণের মাস্টাররোল পর্যালোচনা করে দেখা যায় মোট ১৭৫ জন উপকারভোগির মধ্যে ২২ জনকে কোন চাল না দিয়ে চেয়ারম্যান আত্মসাৎ করেছেন।

আসামিরা ক্ষমতার অপব্যবহার করে পরস্পর যোগসাজসে চাল বিতরণ না করে আত্মসাৎ করার উদ্দেশ্যে বিশ্বাস ভঙ্গের অপরাধ করেছেন। মহাদেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রুহুল আমিন জানান, এজাহারটি এন্ট্রি করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দূর্নীতি দমন কমিশন দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে পাঠানো হবে।

এরআগে বৃহস্পতিবার বিকেলে চাঁন্দাশ ইউপির ১০ জন মেম্বার উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স চত্ত্বরে এসে সাংবাদিকদের জানান যে, তাদের ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদান নবী রিপন গত জুন মাসে বরাদ্দ করা দুস্থ মাতাদের ৫০ বস্তা চাল বিতরণ না করে ওই ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সের আনসার ভিডিপির জন্য বরাদ্দকরা কক্ষে মজুদ করে রাখেন। পরে সময়ে সময়ে কয়েকজন চৌকিদারকে দিয়ে সেগুলো পাঁচার করেন।

সেখানে এখনো ১১ বস্তা চাল মজুদ আছে। বিষয়টি জানতে চাইলে মোবাইলফোনে চাঁন্দাশ ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদান নবী রিপন সেখানে কোন চাল নেই বলে জানান। এরপর পরই তিনি চৌকিদারদের চালগুলো সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেন বলে জানতে পারলে ইউপি মেম্বাররা ওই কক্ষে একটি অতিরিক্ত তালা লাগান। স্থানীয় এক সাংবাদিক বিষয়টি মোবাইলফোনে মহাদেবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানালে তিনি দ্রুত ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান।

তার নির্দেশে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোহাজের হাসান, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সুলতান মাহমুদ ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ের একজন কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে যান। তাদেরকে সহযোগিতা করার জন্য মহাদেবপুর থানার এসআই মনোয়ার হোসেন ও সঙ্গীয় ফোর্স এবং সেনাবাহিনীর একটি দলও সেখানে যান।

তারা ইউনিয়ন পরিষদের ওই কক্ষ থেকে ১১ বস্তায় মোট ৫৩০ কেজি চাল জব্দ করে থানায় নিয়ে আসেন। এর আগে সাংবাদিকরা সেখানে গেলে দেখতে পান যে চেয়ারম্যানের নিজস্ব কক্ষে ওই ইউপির গ্রাম পুলিশ বেবী নাজনিন, আয়নাল হক ও মমিনুল ইসলাম নামে তিনজন ওই প্রকল্পের ভূয়া মাস্টাররোল তৈরি করছেন। তারা তিনজনে অসংখ্য দুস্থের নামের পাশে টিপ সহি দিচ্ছিলেন।

জানতে চাইলে তারা ও ইউপি চেয়ারম্যান এ বিষয়ে কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। এব্যাপারে মহাদেবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুজ্জান জানা বিষয়টি দূর্নীতি দমন কমিশন দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে পাঠানো হবে তারা খতিয়ে দেখবেন।