নওগাঁয় সরকারের দেওয়া টিসিবির পণ্য স্বল্প-নিম্ম আয়ের মানুষদের স্বস্তি

নওগাঁ জেলায় ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) মাসিক কর্মসূচির পণ্য বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এই উর্দ্ধমুখি বাজার দরের যাতাকলে বছর জুড়ে টিসিবি পণ্যে অনেকটাই স্বস্তি ফিরেছে স্বল্প আয়ের মধ্যবিত্ত, নিম্ম মধ্যবিত্ত ও নিম্ম আয়ের খেটে খাওয়া কার্ডধারী পরিবারের মানুষের মাঝে।
বিশেষ করে রমযান মাসে দুইবার নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যগুলো স্বল্পমূল্যে পেয়ে বেজায় খুশি জেলার সুবিধাভোগীরা। সারা দেশের মতো গত বৃহস্পতিবার থেকে স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে নওগাঁ জেলায় স্বচ্ছতার ভিত্তিতে সুষ্ঠ ও সুন্দর পরিবেশে টিসিবি পণ্য বিক্রি কার্যক্রম শুরু করেছে নিয়োজিত ডিলারেরা।
এই টিসিবি পণ্য নিতে সকল শ্রেণির সুবিধাভোগীদের দীর্ঘলাইনে দাঁড়িয়ে থেকে অপেক্ষা করতেও দেখা গেছে। বিশেষ করে নারীদের দীর্ঘ লাইন ছিলো চোখে পড়ার মতো। বৃহস্পতিবার বিকেলে সদর ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গনে টিসিবি বিক্রয় কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন রানীনগর উপজেলায় নির্বাহী কর্মকর্তা মো: রাকিবুল হাসান।
এসময় প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তা, ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্যরা সহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ১১ টি উপজেলায় মোট ১ লাখ ৭৫ হাজার ৫৮৪টি নি¤œআয়ের ফ্যামেলি কার্ডধারী পরিবার পাচ্ছেন কম মূল্যে টিসিবির পণ্যসামগ্রী সুবিধা পাচ্ছে।
প্রত্যেকটি উপজেলায় বিভিন্ন তারিখে এই পণ্যগুলো বিতরণ করা হচ্ছে। রমযান মাসে নির্দিষ্ট স্মার্ট কার্ডের বিপরীতে ভর্তুকি মূল্যে প্রতিটি প্যাকেজ মূল্য ৬৬০টাকা। প্রতি প্যাকেজে ১৫০টাকায় ৫কেজি চাল, ৭০টাকায় ১কেজি চিনি, ১২০টাকায় ২কেজি ছোলা, ২০০টাকায় ২লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ও ১২০টাকায় ২কেজি মশুর ডাল প্রদান করা হচ্ছে যা একটি পরিবারের জন্য প্রায় এক মাসের চাহিদা পূরণ করবে।
কিন্তু রমযান মাসের জন্য আগামী সপ্তাহে একই টিসিবি পণ্য সুবিধাভোগীরা আরেকবার পাবেন। ফলে সুবিধাভোগী প্রতিটি পরিবারকে আর এই রমযান মাসে খোলা বাজার থেকে বেশি দামে এই পণ্যগুলো কিনতে হবে না।
দেশের সাধারণ মানুষদের কথা চিন্তা করেই সরকার হাজার হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি মূল্যে এই পণ্যগুলো দিয়ে আসছে। আগামীতেও এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে আশা করা যাচ্ছে।সুবিধাভোগী উপজেলার ছয়বাড়িয়াগ্রামের রহমতুল্লাহ, খট্টেশ্বর গ্রামের আব্দুল আলীমসহ অনেকেই স্বস্তির নি:শ্বাস ফেলে বলেন সবকিছুর দাম প্রতিদিন বৃদ্ধি পেলেও আমাদের আয় বৃদ্ধি পায়নি।
ফলে বাজারে গিয়ে পরিবারের চাহিদা মাফিক পণ্য কিনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তালিকা ছোট করতে করতে আর ছোট করা যাচ্ছে না। এমন অবস্থাতে সরকারের এই পণ্যগুলো পেয়ে অনেক উপকার হচ্ছে। বিশেষ করে রমযান মাসে দুইবার এই পণ্যগুলো পেয়ে অনেকটাই হাফ ছেড়ে বাঁচলাম। এমন কর্মসূচি যেন আগামীতেও চালু থাকে সেই দাবী আমাদের।
রানীনগর উপজেলার সদর ইউনিয়নের টিসিবির ডিলার মেসার্স আব্দুর রাজ্জাক এন্ড সন্সের স্বত্তাধিকারী আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা (বকুল) বলেন, প্রতিবারের মতো এবারো সুষ্ঠ ও সুন্দর পরিবেশে সরকারের নিয়ম মাফিক সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে এবং পরিষদের চেয়ারম্যান, সদস্য ও অন্যদের সার্বিক সহযোগিতায় পণ্যগুলো বিতরণ করছি।
মোবাইল অ্যাপসে ডিজিটাল স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে পণ্য বিতরণ করার কারণে একজনের পণ্য অন্যকে প্রদান করার কোন সুযোগ নেই। তাই আমরা স্বচ্ছতার মাধমে কোন প্রকারের অভিযোগ ছাড়াই পণ্যগুলো বিতরণ করে স্বস্তি পাচ্ছি। এছাড়া কাউকে বাদ দিয়ে সেই পণ্যগুলো বাহিরে বিক্রির কোন সুযোগ নেই।
টিসিবি বিতরণের সকল তথ্য সঙ্গে সঙ্গে সার্ভারে সংরক্ষিত হওয়ার কারণে উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা চাইলেই সকল তথ্য পর্যবেক্ষণ করতে পারছেন। তাই টিসিবি বিতরণে কোন অনিয়ম করার বিন্দুমাত্র সুযোগ নেই। জেলার রানীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: রাকিবুল হাসান বলেন, আমি নিজেও বিভিন্ন বিক্রয় কেন্দ্র পরিদর্শন করছি।
এছাড়া ট্যাগ কর্মকর্তা ও স্ব স্ব ইউনিয়নের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কঠোর নজরদারীর মাধ্যমে এই পণ্যগুলো বিতরণ করা হচ্ছে। যেহেতু ডিজিটাল স্মার্ট কার্ডের মাধমে টিসিবি বিতরণ করা হচ্ছে সেহেতু কোন প্রকারের অনিয়ম করার সুযোগ নেই। তাই টিসিবি বিতরণে ডিলার কিংবা অন্য কারো কোন অনিয়ম করারও সুযোগ নেই। তবুও টিসিবি বিতরণে কোন অনয়িমের অভিযোগ পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন




















