নওগাঁর আত্রাইয়ে কৃষকের ঘরে ৩৬মনের ষাঁড়, কাঙ্খিত দর পাওয়া নিয়ে শংকা!

নওগাঁর আত্রাই উপজেলার মফস্বল এলাকায় কোরবানীতে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে প্রায় ৩৬মন ওজনের একটি ষাঁড়। গত প্রায় চার বছর ধরে লালন-পালন করে ষাঁড় প্রস্তুতে সফল হলেও কাঙ্খিত দর পাওয়া নিয়ে চরম শংকায় পরেছেন তিনি।

ষাঁড়টি প্রস্তুত করেছেন আত্রাই উপজেলার ভোঁপাড়া ইউনিয়নের তিলাবুদুরি মল্লিক পাড়া গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে প্রবাস ফেরৎ কৃষক জাহাঙ্গীর আলম ওরফে জাহিদুল মল্লিক।

তিনি জানান,গত ২০১৯সালে সৌদি আরবে গিয়ে দালালের খপ্পরে পরে নি:স্ব হয়ে মাত্র দুই বছরের মাথায় দেশে ফিরে আসেন। এরপর কৃষি কাজের পাশা পাশি বাড়ীতে গরুর খামার গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখেন তিনি। সে সময় ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে প্রথমে একটি গরু দিয়ে শুরু করেন খামার।এরপর জমি বিক্রি করে ধীরে ধীরে খামারের পরিধি বাড়াতে থাকেন। এতে তার খামারে প্রায় ১২টি গরু তোলেন।

কিন্তু গো-খাদ্যের আকাশ ছোঁয়া দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় গরু পালনে লোকসান হতে থাকলে খামার থেকে গরু বিক্রি করে গরুর সংখ্যা কমে দেন। তিনি আরো জানান,গত সাড়ে তিন বছর আগে বাড়ীর একটি গাভীকে ফ্রিজিয়ান জাতের বীজ দিয়ে প্রজনন করান।

এরপর এই ষাড় জন্ম নেয়। শুরুতেই ষাঁড়ের দৈহিক গঠন দেখে পশু চিকিৎসকের পরামর্শে ষাঁড়টি লালন পালন শুরু করেন। এতে চোখের সামনে ধীরে ধীরে দানব আকার ধারণ করতে থাকে ষাঁড়টি। কৃষক জাহাঙ্গীর জানান,ষাঁড়ের পরিচর্জায় স্ত্রী-সন্তান সবাই শ্রম দেয়। ষাঁড়টি সম্পন্ন প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে প্রস্তুত করা হয়েছে। পাকা কলা,গম-ভূট্রার ভূষি আর ঘাস-খর খাইয়ে বড় করা হয়েছে ষাঁড়টি।

তবে গ্রামের মধ্যে ছোট্র এই খামারে এত বড় দানব আকারের ষাঁড় রয়েছে এমনটি কেউ জানতো না। তবে বিক্রির জন্য লোকজনকে বলাবলি করতে থাকলে গ্রামের এবং প্রতিবেশি গ্রামের লোকজন একনজর দেখার জন্য ছুটে আসছেন। এখন প্রায় প্রতিদিনই কোন না কোন এলাকা থেকে ষাঁড়টি দেখতে এবং কিভাবে প্রস্তত করা হয়েছে তা জানতে লোকজন ছুটে আসছেন তার বাড়ীতে।

জাহাঙ্গীর আলম বলছেন, স্বপ্ন ছিল গরু পালনে সফল হবার,এতো বড় গরু প্রস্তুত করে সেই সফলতার নাগাল ধরতে পেরেছেন। তিনি বলছেন,স্বপ্নের ষাঁড়টি হয়তো ১৪লাখ টাকায় বিক্রি হবে। কিন্তু এপর্যন্ত সর্বোচ্চ ৭-৮লাখ টাকা দাম বলছেন ক্রেতারা।

তিনি বলছেন, ক্রেতারা যে পরিমানে দাম বলছেন,ষাঁড় প্রস্তুত করতে এর অধিক পরিমানে ব্যয় হয়েছে। ফলে কাঙ্খিত দর পাওয়া নিয়ে চরম শংকায় রয়েছেন জাহাঙ্গীর মল্লিক।

আত্রাই উপজেলা প্রাণি সম্পদ দপ্তর কর্মকর্তা আবু আনাছ বলেন,এবার উপজেলায় কোরবানী পশুর চাহিদা রয়েছে ২৭হাজার ৮৮৫টি, এর বিপরীতে কোরবানীর মোট পশু প্রস্তুত হয়েছে ৫৩হাজার ৫৬৭টি। এর মধ্যে গরু রয়েছে ৮হাজার ৬০৮টি, মহিষ ৩০টি,ছাগল ৩৮হাজার ৩৩৯টি ভেড়া ৬হাজার ২০টি এবং গাড়ল রয়েছে ৭০টি।

তিনি জানান, যতগুলো গরু রয়েছে এর মধ্যে তিলাবুদুরি গ্রামের জাহাঙ্গীর মল্লিকের ষাঁড়টি সবচাইতে বড়। কর্মকর্তা বলেন,রাজধানী বা বিভাগীয় পর্যায় ছাড়া উপজেলা পর্যায়ে এতো বড় ষাঁড় বিক্রি হওয়া একটু মস্কিলই। তবে আমরাও চেষ্টা করছি যেনো ষাঁড়টি বিক্রি হয়।