নওগাঁর মান্দায় চাকরি না পেয়ে প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির বিরুদ্ধে অপপ্রচার

নওগাঁর মান্দায় সাবেক স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির ছেলে ও ভাতিজার চাকরি না হওয়ায় বর্তমান সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার চালানোর অভিযোগ উঠেছে৷

ঘটনাটি ঘটেছে জেলার মান্দা উপজেলার ১৩নং কশব ইউনিয়নের কশব উচ্চ বিদ্যালয়ে৷

জানাযায়, উপজেলার কশব উচ্চ বিদ্যালয়ের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর সেই সময়ের সভাপতি আব্দুস সালামের ছেলে মোহন সরকার ও ভাতিজা জাহাঙ্গীর আলম চাকুরীর জন্য আবেদন করেন। তখন করোনাকালীন সমস্যার কারণে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্ভব হয়নি৷ এরই মাঝে সেই কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ায়৷ বিদ্যালয়ে নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন কমিটি হিসেবে দায়িত্ব পায় ফজলুর রহমান৷ তারপর আবারও নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হলে সাবেক সভাপতি আব্দুস সালামের ছেলে ও ভাতিজার কাগজপত্রে ত্রুটি থাকায় তাদের চাকরি হয় না৷ নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষে পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের যোগদান দেওয়া হবে সে সময় সাবেক সভাপতির ছেলে ও ভাতিজারা বিভিন্নভাবে নিয়োগ আটকানোর চেষ্টা করতে থাকে৷ একবার না বেশ কয়েকবার এ বিষয় নিয়ে প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির বর্তমান সভাপতির সঙ্গে কথা কাটাকাটিও হয়৷

এসময় অবস্থা বেগতিক দেখে বর্তমান সভাপতি ফজলুর রহমান থানায় খবর দেয়৷ থানা থেকে পুলিশ তদন্ত করতে গেলে সেই দিনও ইউনিয়ন পরিষদের দাফাদার কে মারধর করে সাবেক সভাপতি আব্দুস সালাম ও ছেলে ভাতিজারা ৷ মারধরের ঘটনার পরে বিদ্যালয় কৃতপক্ষ মামলায় আশ্রয় নেয়৷ মামলার পর থেকেই সাবেক সভাপতি আব্দুস সালাম তার ছেলে ও ভাতিজা বিভিন্নভাবে বর্তমান সভাপতি ফজলুর রহমান ও প্রধান শিক্ষক মোবারক আলী সরকার ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নানা ভিত্তিহীন অপপ্রচার শুরু করে এবং প্রতিষ্ঠানের সামনে মানববন্ধন করে ৷ এবিষয় নিয়ে এলাকায় এক উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে৷

এ বিষয়ে কশব উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোবারক আলী সরকার জানান, এখানে নিয়োগের ব্যাপারে কোন টাকা লেনদেনের ঘটনা ঘটেনি৷ যাদের চাকরি হয়নি তারা এরকম আমাদের বিরুদ্ধেও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে৷এছাড়াও যেই টাকার বিষয়টা উঠে আসছে সেটি হল, বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি থাকা অবস্থায় আব্দুস সালামের নিকট থেকে বিদ্যালয়ের মেরামতের জন্য কিছু পরিমাণ অর্থ নেওয়া হয়েছিল পরবর্তীতে অনেক লোকজন ও বর্তমান সভাপতির সামনেই সেই টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে৷ সেই টাকাকেই তারা চাকরি দেওয়ার জন্য নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করছে৷

স্কুল ম্যানেজিং কমিটির বর্তমান সভাপতি ফজলুর রহমান বলেন, স্বাধীন ভাবে কোন টাকা লেনদেন ছাড়াই নিয়োগ হওয়ায় সাবেক সভাপতির ছেলে ও ভাতিজা নিয়োগ পায়নি ৷এই কারণে তারা বিভিন্ন ভাবে অপপ্রচার করে আমার এবং প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক ও প্রতিষ্ঠানের মানক্ষুন্ন করে যাচ্ছে৷ এ সময় তিনি আরো বলেন, এখানে যারা নিয়োগ পেয়েছে তাদের কাছে শুনুন যে কোন টাকার মাধ্যমে তারা কি নিয়োগ পেয়েছে ৷ এখানে লেনদেন যদি হয়ে থাকে তো সাবেক সভাপতি থাকা অবস্থাতেই হয়েছে, আমি সভাপতি হওয়ার পরে নিয়োগে কোন রকমের অনিয়ম হয়নি স্বচ্ছ ভাবেই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে ৷ এছাড়াও তিনি অভিযোগ করেন যারা নিয়োগ পেয়েছে তাদের পরিবার সহ তাদেরকে ভয়-ভীতি দেখাচ্ছে সাবেক সভাপতির ছেলে ও ভাতিজারা যাতে তারা যেন বলে টাকার বিনিময়ে তারা নিয়োগ পেয়েছে৷

তবে অপপ্রচারের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি আব্দুস সালাম তিনি জানান, নিয়োগ বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে এই নতুন কমিটি টাকার বিনিময়ে ভোট ক্রয় করে সভাপতি হিসেবে দায়িত্বে এসেই এই পাঁচটি নিয়োগে মোট ৮৭ লক্ষ্য টাকার নিয়োগ-বাণিজ্য করে এবং এই টাকা প্রতিষ্ঠানের কোন উন্নয়নে ব্যয় না করে তারা নিজেরা ভোগ-দখল করে, এছাড়াও প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে বিল্ডিং তৈরির জায়গা ক্রয়ের জন্য আমি সভাপতি থাকা অবস্থায় আমার ভাতিজা জাহাঙ্গীর আলমের কাছে চাকরি দেওয়ায় কথা বলে টাকা নেওয়া হয়েছিল এবং জাহাঙ্গীর আলম প্রায় এক বছর যাবত প্রতিষ্ঠানে কাজও করেছে ৷ তাকে না নিয়ে আবার টাকার বিনিময়ে অন্য একজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেন ৷

নিয়োগ পাপ্ত পাঁচ প্রার্থী জানান, তাদের নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে কোন টাকা পয়সার প্রয়োজন হয়নি।

এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শাহ্ আলম সেখ জানান, নিয়োগে অনিয়ম বা টাকা লেনদেনের কোন বিষয় ঘটেনি সেখানে সবার সামনে উন্মুক্ত অবস্থায় নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষে বৈধভাবে তাদেরকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে৷