নওগাঁর মান্দার দেলুয়াবাড়ি হাটে কাপড় মার্কেটের উন্নয়ন কাজে বাধা, চাঁদা না পেয়ে গুজব ছড়ানোর অভিযোগ

নওগাঁর মান্দা উপজেলার কুসুম্বা ইউনিয়নের দেলুয়াবাড়ি হাটে কাপড় মার্কেট উন্নয়ন প্রকল্পে বাধা সৃষ্টি করছে একটি প্রভাবশালী মহল—এমন অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা। জানা গেছে, সরকারের নির্ধারিত নিয়ম মেনে ডিসিআর (দখল ছাড়পত্র) সংগ্রহ করে ৩০ থেকে ৩৫টি পাকা দোকানঘর নির্মাণ করছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।

এতে হাটের কাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি রাজস্ব আয় বাড়ার সম্ভাবনা দেখা দিলেও, চাঁদা না পেয়ে একটি চিহ্নিত চক্র উন্নয়ন কাজে বাধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি দেখার জন্য গতকাল শনিবার সরেজমিনে গিয়ে এ বিষয়ে কথা হয় কাপড় মার্কেটের ব্যবসায়ী আহসান হাবীব বলেন, “আমরা ডিসিআর নিয়ে বৈধভাবে দোকান করছি।

সরকারি জমি দখলের প্রশ্নই আসে না। কিন্তু একটি মহল চাঁদা না পেয়ে আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে এবং নির্মাণ কাজ বন্ধের চেষ্টা করছে।” স্থানীয় একাধিক সূত্র জানিয়েছে, এই বাধা সৃষ্টিকারী মহল দীর্ঘদিন ধরে দেলুয়াবাড়ি হাটে প্রভাব বিস্তার করে আসছে এবং ঐ মহলটি ‘ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসর’ নামে এলাকায় পরিচিত।

তারা বৈধ ব্যবসা-বাণিজ্যের পথ রুদ্ধ করে নানা সময়ে চাঁদাবাজিতে লিপ্ত রয়েছে বলেও অভিযোগ করেন নান প্রকাশে অনিচ্ছুক কিছু স্থানীয় এলাকাবাসী। এ প্রসঙ্গে কুসুম্বা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নওফেল আলী মণ্ডল বলেন, “ব্যবসায়ীরা সরকারি নিয়মে ডিসিআর নিয়ে দোকান নির্মাণ করছেন। এতে সাবেক ইউএনও শাহ আলম মিয়া বা আমার কোনও সম্পৃক্ততা নেই।

অথচ একটি পক্ষ উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমি এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই।” মান্দা উপজেলা ভূমি অফিস সূত্রে জানা গেছে, সরকার হাটবাজার এলাকায় ডিসিআর প্রদানের ক্ষেত্রে নির্ধারিত হারে রাজস্ব আদায় করে থাকে।

উপজেলা সদর এলাকায় প্রতি বর্গমিটার ৫০ টাকা এবং বাইরের এলাকায় ১৩ টাকা হারে এই ফি নির্ধারিত রয়েছে। তবে, এই প্রক্রিয়ায় ডিসিআর না পেয়ে একটি মহল গুজব রটিয়ে ও মিথ্যা অভিযোগ ছড়িয়ে উন্নয়ন কার্যক্রমকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ ব্যবসায়ীদের।

এ বিষয়ে মান্দা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাবিল নওরোজ বৈশাখের সঙ্গে তার সরকারী মোবাইল নম্বর ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। এদিকে মান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আখতার জাহান সাথী বলেন, “আমি সদ্য যোগদান করেছি। দেলুয়াবাড়ি হাটের ডিসিআর বিষয়ে এখনও বিস্তারিত অবগত নই।

তবে জেলা প্রশাসকের অনুমোদন ছাড়া ডিসিআর দেয়ার সুযোগ নেই। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।”এদিকে, স্থানীয় সচেতন মহল মনে করছে, এই উন্নয়ন প্রকল্পে বাধা সৃষ্টি হলে একদিকে যেমন সরকার রাজস্ব হারাবে, তেমনি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন সাধারণ ব্যবসায়ীরাও। তবে বিষয়টির উপর দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন তারা।