নওগাঁর রাণীনগরে আতব ধানে ব্লাস্টের আক্রমন, চরম ক্ষতিতে কৃষকরা
নওগাঁর রাণীনগরে চলতি আমন মৌসুমে আতব ধানের শীষ ব্যপকহারে মরে যাচ্ছে। ব্লাষ্ট রোগে আক্রান্ত হয়ে ধানের শীষ মরে যাওয়ায় ফলন অর্ধেকেরও কমে নেমে এসেছে। কৃষকরা বলছেন, যেখানে গত বছর বিঘাপ্রতি ১২থেকে ১৬মন হারে ফলন হয়েছে সেখানে এবছর মাত্র ৬থেকে ৮মন হারে ফলন হচ্ছে।
ফলে,ফলনে চরম বিপর্যয় ঘটেছে।তবে কৃষি কর্মকর্তা বলছেন,একই জাতের ধান বার বার চাষ করলে ওই ধানের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। তাই ভাল ফলন পেতে ধানের জাত পরিবর্তনের পরামর্শ দিয়েছেন কৃষকদের।
রাণীনগর উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা যায়,চলতি মৌসুমে উপজেলা জুরে ১৮হাজার ৪৫০হেক্টর জমিতে ধানের চাষ করেছেন কৃষকরা।
এর মধ্যে ধানী গোল্ড,বিনা-১৭,ব্রি ধান-৪৯,ব্রি ধান-৯০,স্বর্ণা এবং আতব ও চিনি আতব ধান চাষ করেছেন কৃষকরা। অফিসের তথ্য মতে,কৃষকরা ব্রি-৩৪জাতের আতব ধান চাষ করেছেন প্রায় ৭হাজার ৫৪০হেক্টর এবং চিনি আতব ধান চাষ করেছেন ১৩৩হেক্টর জমিতে।
কৃষকরা বলছেন,ধান রোপনের শুরুতে আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ধান গাছ বেশ ভাল হয়েছিল। কিন্তু ধানের শীষ বের হবার পর থেকেই শীষ মরা রোগ দেখা দেয়। শীষ মরা প্রতিরোধে বিভিন্ন কোম্পানীর ওষুধ ছিটিয়েও কোন ফল হয়নি। তাদের ভাষ্য মতে,চাষকৃত আতব ধান সব চাইতে বেশি মরেছে। তবে অন্যান্য জাতের ধানের শীষ তুলনা মুলকভাবে কম মরেছে।
কৃষকরা বলছেন, ব্যপক হারে ধানের শীষ মরে যাওয়ায় প্রতি বছরের গড় ফলনে অর্ধেকেরও কম হচ্ছে এবার। এতে চরমভাবে লোকসানে পরেছেন কৃষকরা।
উপজেলার আনালিয়া খলিশাকুড়ি গ্রামের কৃষক লেকিন প্রামানিক জানান,এবার ভাল দাম পাওয়া যাবে মনে করে প্রায় ২০বিঘা জমিতে আতব ধান রোপন করেছেন। এরই মধ্যে তিনি প্রায় ১১বিঘা জমির ধান কর্তন করেছেন। কিন্তু ব্যপক হারে শীষ মরে যাওয়ায় বিঘা প্রতি (৩৩ শতক) ৮ /৯মন হারে ধানের ফলন হচ্ছে।
কালীগ্রাম খন্দকার পাড়া গ্রামের কৃষক জয়নাল খন্দকার জানান,তিনি এবার প্রায় ১১বিঘা জমিতে আতব ধান রোপন করেছেন। বøাষ্ট রোগে আক্রান্ত হয়ে ধানের শীষ মরে গেছে। কোন ওষুধ ছিটিয়েও লাভ হয়নি। বিঘা প্রতি হয়তো ৫ থেকে ৬মন হারে ধানের ফলন হতে পারে।
সিলমাদার গ্রামের কৃষক ছামিদুল ইসলাম জানান,তিনি প্রায় ৮বিঘা জমিতে আতব ধান চাষ করেছেন। বেশ কয়েক বিঘা জমির ধান কর্তন করা হয়েছে। এতে ৬/৭মন হারে ধানের ফলন হয়েছে। তিনি বলছেন,গত বছর আতব ধানে বিঘা প্রতি প্রায় ১৪থেকে সর্বোচ্চ ১৬মন পর্যন্ত ধানের ফলন হয়েছে। অথচ এবার ধানের শীষ মরে যাওয়ায় ফলন অর্ধেকেরও কম হচ্ছে।
এতে করে চরম ক্ষতির মুখে পরেছেন কৃষকরা
রাণীনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফারজানা হক জানান, আতব ধান ছাড়া অন্যান্য ধানের তেমন সমস্যা হয়নি। কিন্তু ব্রি-৩৪জাতের আতব ধানের শীষ মরে যাওয়ায় অনেকটায় ফলন কমে গেছে।
তিনি জানান,এই জাতের ধান কৃষকরা দীর্ঘ সময় ধরে চাষ করে আসছেন। একই জাতের ধান বার বার একই জমিতে চাষ করলে ওই ধানের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। তাই ভাল ফলন পেতে ধানের জাত পরিবর্তনের জন্য কৃষকদের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন