নওগাঁয় প্রেমিক যুগলকে আপত্তিকর অবস্থায় আটক !! ২০ হাজার টাকা জরিমানা

নওগাঁর বদলগাছী পরকীয়ার অভিযোগে প্রেমিক যুগলকে আপত্তিকর অবস্থায় হাতেনাতে আটক করেছে স্থানীয়রা। পরে ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে রফাদফা করলো স্থানীয় মহিলা মেম্বার।

গত শনিবার (১৫ অক্টোবর) দিবাগত গভীর রাতে তাদের দুইজনকে আটক করেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার সদর ইউনিয়নের তেজাপাড়া গ্রামে। আটককৃত ব্যক্তি নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার সদর ইউনিয়নের ভাতসাইল গ্রামের মৃত খলিলুর রহমানের ছেলে সাদেকুর রহমান সাদেক (৫০)। আর ওই প্রেমিকা একই ইউনিয়নের তেজাপাড়া গ্রামের (৪৮) উর্দ্ধ এক মহিলা।

এলাকাবাসী সূত্রে জানাযায়, ভাতসাইল গ্রামের মৃত খলিলুর রহমানের ছেলে সাদেকুর রহমান সাদেকের সাথে তেজাপাড়া গ্রামের সখিনা বেগমের (ছদ্মনাম) সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ শারীরিক সম্পর্ক চলছিল। অবৈধ সম্পর্কের জন‍্য দীর্ঘদিন ধরে রাতের বেলা যাতায়াত করতো সাদেক। এ সম্পর্কের জের ধরে সাদেক শনিবার রাত আনুঃ সাড়ে ৯টায় গোপনে ওই মহিলার ঘরে প্রবেশ করলে বিষয়টি টের পেয়ে স্থানীয়রা প্রেমিক সাদেক ও প্রেমিকা সখিনাকে আপত্তিকর অবস্থায় ওই ঘরের মধ্যেই আটক করে রাখে।

এদিকে মহিলা মেম্বার মনোয়ারা বেগম মিনি খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিষয়টি প্রথমে ধামা চাপা দেওয়ার চেষ্টা করে। পরে স্থানীয়দের তোপের মুখে প্রেমিক সাদেকের ২০ হাজার টাকা জরিমানা করে সাদা কাগজে মুচলেকা নিয়ে নিজের জিন্মায় সাদেককে ছেড়ে দেন। আর বিষয়টি কাউকে না জানানোর জন্য হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন মহিলা মেম্বার মিনি।

স্থানীয় আনোয়ার হোসেন,ইমরুল হক সহ বেশ কয়েকজন বলেন, সখিনা বেগমের সঙ্গে পরকীয়ার জেরে অনৈতিক কর্মকান্ড করার সময় এলাকাবাসী তাদের দুজনকে আটক করেন। পরে মহিলা মেম্বার মনোয়ারা বেগম মিনি এসে তাদের দুজনকেই আটক অবস্থা থেকে মুক্ত করে সাদেকের ২০ হাজার টাকা জরিমানা করে সাদা কাগজে মুচলেকা নিয়ে সাদেককে ছেড়ে দেন।

স্থানীয়রা বলেন, সখিনা ও সাদেক দুজনে মিলে অবৈধ সম্পর্ক করে আসছে। এই অনৈতিক ঘটনা ধামা চাপা দিতে মহিলা মেম্বারকে সার্বিক সহযোগিতা করেন মৃত ঈমান আলীর ছেলে আবুল হোসেন, তার স্ত্রী জুলেখা বেগম ও তার ছেলে আশিক হোসেন। ঘটনাটি ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে দফারফা করা হয়েছে। এসব অসামাজিক কর্মকান্ডের জন্য গ্রামের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। বিবাহ যোগ্য ছেলে-মেয়েদেরকে বিয়ে দেওয়া কঠিন হয়ে পড়বে। তাই আমরা তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

খবর পেয়ে পরদিন সকালে তথ্য সংগ্রহ করতে সংবাদ কর্মীরা ঘটনাস্থলে গেলে আবুল হোসেনের স্ত্রী জুলেখা বেগম ও ছেলে আশিক হোসেন সাংবাদিকদের উপর চড়াও হন এবং ভিডিও ধারণ করতে গেলে আবুল হোসেনের স্ত্রী সাংবাদিক মুজাহিদ হোসেনের মোবাইল ফোন ছুঁড়ে ফেলে দেন।

এ ব্যাপারে মহিলা মেম্বার মনোয়ারা বেগম মিনি বলেন, বিষয়টি আমাদের পারিবারিক, তাই পারিবারিকভাবেই সমাধান করা হয়েছে। ২০ হাজার টাকায় দফারফা করার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, বিভিন্ন মানুষ বিভিন্ন ধরনের কথা বলবে ব্যাপারটা সে রকম কিছু নয়। বিষয়টি নিয়ে নিউজ না করার জন্য এই প্রতিবেদককে অনুরোধ করেন তিনি।

এ ব‍্যপারে স্থানীয় মেম্বার আনিছুর রহমান বলেন, এ ব‍্যপারে কেউ আমাকে জানায়নি। এই বিচারের ব‍্যপারে আমি কিছুই জানিনা।

এ বিষয়ে বদলগাছী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আতিয়ার রহমান বলেন, এটা আপোষ যোগ্য বিচার নয়, এবিষয়ে কেউ কোনও অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।