নতুন সাজে সজ্জিত মদন উপজেলা পরিষদ

নতুন রূপে সজ্জিত হয়েছে মদন উপজেলা পরিষদ চত্বর । পুরাতন ভবন অপসারন, মাটি ভরাট ও গাছে আল্পনা করায় পরিষদ চত্বর এখন পার্কে পরিণত হয়েছে। পরিষদ চত্বর দৃষ্টিনন্দন হওয়ায় সব শ্রেনিপেশার লোকজনের মাঝে আনন্দ বিরাজ করছে।

উপজেলা পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮৩ সালে মদনকে উপজেলায় উন্নীত করা হয়। ৯১ বর্গমাইল আয়তনে ৮টি ইউনিয়ন নিয়ে মদন উপজেলার কার্যক্রম চলছে। ২০০১ সালের ১১ জুলাই মদন থানা সদরকে পৌরসভায় উন্নীত করা হয়। কিন্তু মদন উপজেলা পরিষদ চত্বরের অবস্থা ছিল শোচনীয়। অবকাঠামো দিক থেকে পিছিয়ে থাকায় কোন রকম চলছিল সেবাদান কার্যক্রম। প্রতিটি দপ্তর পরিচালিত হতো ভিন্ন ভিন্ন জড়াজীর্ণ ভবন থেকে। ২০২২ সালে ৫তলা বিশিষ্ট একটি নতুন প্রশাসনিক ভবণ নির্মান করা হয়। এতে কিছুটা হলেও পরিবর্তন আসে। কিন্তু নতুন ভবনের সামনে পুরাতন ভাঙা ঘর, পাবলিক হল মাঠ, কোয়ার্টারের সামেন একাধিক গর্ত এবং রাস্তা থেকে তিন ফুট নিচু থাকায় কাঁদা-পানি জমে নানা সমস্যার সৃষ্টি হয়।

এসব সমস্যা সমাধানসহ উপজেলা পরিষদ চত্বর সৌন্দর্য বর্ধনের পরিকল্পনা গ্রহন করেন বর্তমান উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.শাহ আলম মিয়া। পরিষদের সমন্বয় মিটিং এ উপজেলা চেয়ারম্যান প্রকল্পের প্রস্তাব জানালে তা গৃহীত হয়। পরিষদ চত্বরে নান্দনিক রূপ দিতে ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে বিভিন্ন কিস্তিতে উপজেলা পরিষদ চত্বর, কোয়ার্টারের সামনে, প্রাথমিক শিক্ষা অফিস ও নির্বাচন অফিসের সামনে এবং পাবলিক হল মাঠে মাটি ভরাটের জন্য ৮ লাখ ২০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। ওই বরাদ্দেরর কাজগুলো বাস্তবায়ন করেছেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়। এ ছাড়া গাছে আল্পনা ও রি- জিনিয়াস কিন্ডার গার্ডেন স্কুল মেরামত করার জন্য ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয় এলজিইডি অফিস। কাজটি বাস্তবায়র করেছেন নরসিংদির প্রানতোষ আর্ট স্কুল নামের একটি প্রতিষ্ঠান। পরিষদ চত্বরে অভ্যন্তরীণ রাস্তা নির্মাণের জন্য ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। কাজটি বাস্তবায়ন কাজ করছেন মীম কনস্টাকশন নামীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

ইতিমধ্যে পরিষদ চত্বরে মাটি ভরাট ও গাছে আল্পনা করা হয়েছে। পরিষদ চত্বরে অভ্যন্তরীণ রাস্তার নির্মাণ কাজ চলমার রয়েছে। প্রবেশ পথের মুল রাস্তা সংস্কার করা হয়েছে। গাছে থিম অনুযায়ী আল্পনায় নতুন রূপে সজ্জিত হয়েছে উপজেলা পরিষদ চত্বর। এর সাথে যুক্ত হয়েছে চমৎকার শহীদ মিনার। দীর্ঘদিনের জরাজীর্ণ মুক্তমঞ্চে লেগেছে সংস্কারের ছোঁয়া। পরিষদের বাউন্ডারি নতুন রঙ এ নবরূপে সজ্জিত হয়েছে।উপজেলার সব শ্রেনি পেশার লোকজনের কাছে জায়গাটি হয়ে উঠেছে খুবই জনপ্রিয়। এক কথায় বলতে গেলে পরিষদ চত্বর এখন একটি পার্ক হিসাবে রূপ নিয়েছে। প্রতিদিন উপজেলা পরিষদ চত্বরে নিজ উপজেলার লোকজন ছাড়াও অন্য উপজেলা লোকজন ছবি তুলতে আসেন।

পৌরসদরের বাসিন্দা সানোয়ার, শহিদুল ইসলাম বলেন,’‘আমরা ছোট বেলা থেকেই উপজেলা পরিষদের অবস্থা দেখে আসছি। পরিষদ চত্বরে অসংখ্য গর্ত ছিল। বৃষ্টি হলেই কাঁদা-পানি জমে থাকতো। বর্তমানে মাটি ভরাট ও গাছগুলোতে আল্পনা করায় জায়গাটি এখন পার্কের মতো হয়েছে। এখন সময় পেলেই লোকজন পরিষদ চত্বরে সময় কাটাতে চলে আসেন।’

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শাহ আলম মিয়া বলেন,‘ যোগদানের পর পরিষদের বেহাল অবস্থার সমাধানে পরিকল্পনা সমন্বয় সভায় উপস্থাপন করেছি। পরে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রকল্প প্রস্তাব করেন। বিধি মোতাবেক উপজেলা প্রকৌশলী ও প্রকল্প বাস্তাবায়ন কর্মকর্তা কাজগুলো বাস্তবায়ন করেন। এছাড়াও আমি প্রকল্প গুলোর সঠিক বাস্তবায়নে তদারকির জন্য কমিটি করে দেই এবং তারা সন্তোষজনক প্রতিবেদন দাখিল করলে বিল প্রদান করা হয়। ফলে পরিষদের আঙিনা জনগণের প্রাণের জায়গায় পরিণত হয়েছে।’’

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইফতেখারুল আলম খান চৌধুরী আজাদ জানান,‘ আমি এই সপ্তাহে চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব নিয়েছি। পরিষদ চত্বরে নতুন ভাবে সজ্জিত করায় প্রশাংসার দাবিদার উপজেলা নির্বাহী অফিসার। এই কাজে সহযোগিতা করেছেন সদ্য বিদায়ী উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রহমান। এমন সুন্দর পরিষদ চত্বর গড়ে তোলায় সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানাই।