নববর্ষের শোভাযাত্রায় ইয়েন ইয়েনের দেশবিরোধী প্ল্যাকার্ড নেওয়ায় পিসিসিপি’র বিক্ষোভ

নববর্ষের আনন্দ শোভাযাত্রায় পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে কেএনএফ সন্ত্রাসীদের পক্ষে চাকমা সার্কেল চীফ দেবাশীষ রায়ের দ্বিতীয় স্ত্রী ইয়েন ইয়েনের নেতৃত্বে প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করায় এর প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ (পিসিসিপি) রাঙামাটি জেলা শাখা।
সোমবার (২১ এপ্রিল) রবিবার সকাল ১১টায় শহরের কাঠালতলী থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে বনরূপা সিএনজি স্টেশন চত্বরে সমাবেশে মিলিত হয়।
সমাবেশে পিসিসিপি রাঙামাটি জেলা শাখার সভাপতি মো: আলমগীর হোসেন এর সভাপতিত্বে ও পৌর সভাপতি পারভেজ মোশাররফ হোসেন এর সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন পিসিএনপি’র চেয়ারম্যান কাজী মজিবর রহমান, রাঙামাটি জেলা প্রচার সম্পাদক হুমায়ুন কবির, পিসিসিপি রাঙামাটি জেলা সাধারণ সম্পাদক মো: খলিলুর রহমান।
সহ- সাধারণ সম্পাদক ও লংগদু উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন, সহ- সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ হাসান, প্রচার সম্পাদক ইসমাঈল গাজী, ছাত্রী বিষয়ক সম্পাদিকা জান্নাতুল ফেরদৌস বিথী, পিসিসিপি জেলা শাখার অর্থ সম্পাদক ও কলেজ শাখার যুগ্ন আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম, পিসিসিপি পৌর সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম বাবু প্রমুখ।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন, এবারের পহেলা বৈশাখেও ছাড় পেল না পার্বত্য চট্টগ্রামের সাধারণ মানুষ। বাঙালির প্রাণের উৎসবকে হাতিয়ার বানিয়ে আবারও চোখে পড়লো পরিচিত সেই পুরনো প্রোপাগান্ডা। রাঙামাটির চাকমা সার্কেল চীফ দেবাশীষ রায়ের দ্বিতীয় স্ত্রী ইয়েন ইয়েনের নেতৃত্বে কয়েকজন বামপন্থী ও উগ্রবাদী উপজাতি পার্বত্য চট্টগ্রামকে বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে নিজেদের স্বার্থে বানানো প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে হাজির হলো ঢাকার রাজপথে।
বাংলা নববর্ষ ১৪৩২- উপলক্ষে আয়োজিত শোভাযাত্রার একটি অংশে ইয়েন ইয়েন নিজেই একটি প্ল্যাকার্ড নিলেন যেখানে আঁকা রয়েছে বম জনগোষ্ঠীর নারী শিশুরা বন্দী, আসলে প্রকৃত সত্যকে আড়াল করে ইয়েন ইয়েন মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছে, সেখানে কোনো নারী শিশুরা বন্দী নয়, বন্দী হলো বান্দরবানে যারা ব্যাংক ডাকাতিতে জড়িত ছিলো ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের হত্যায় জড়িত বম-খিয়াংদের নিয়ে গঠিত কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট- কেএনএফ এর মতো সন্ত্রাসী সংগঠন এর সদস্যরা।
এখন দেবাশীষ রায়ের দ্বিতীয় স্ত্রী ইয়েন ইয়েন কি কেএনএফ সন্ত্রাসীদের সরাসরি পক্ষ নিয়ে মুক্তি দাবি করছে? যদি তিনি কেএনএফ সন্ত্রাসীদের নিরীহ বানিয়ে মুক্তির দাবি করে থাকে তাহলে সন্ত্রাসীদের পক্ষে অবস্থান নেওয়ায় ইয়েন ইয়েনকে আইনের আওতায় আনতে হবে।
বক্তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের বাস্তবতা হলো সাধারণ একজন চাষী, ব্যবসায়ী বা গৃহিণীকেও বাঁচতে হয় চাঁদাবাজির ভয় নিয়ে। তিন পার্বত্য জেলায় বছরে প্রায় ৬০০ কোটি টাকার চাঁদাবাজি চলে। এই চাঁদাবাজি কারা করে জানেন?
যারা বলছে পাহাড় থেকে সেনা হঠাও, যারা বলছে সেনা শাসন বন্ধ করো, সেই তারাই পাহাড়ে চাঁদাবাজি করছে, সশস্ত্র অবস্থায় ভারী অবৈধ অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিচ্ছে। আপনি যদি পাহাড়ে একটা পোষা মুরগিও বিক্রি করতে চান, আপনাকে পাহাড়ি উপজাতীয় সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের চাঁদা দিতে হবে। কলা, হলুদ, সবজি—সবজান্তা সন্ত্রাসীদের নজর এড়ায় না কিছুই। সন্তানদের বিয়েও করতে হলে দিতে হয় চাঁদা, নয়তো আসে হুমকি, কখনো বা অপহরণ।
পার্বত্য চুক্তির মাধ্যমে পাহাড়িদের সব দাবি সরকার মেনে নিয়েছে, সেখানে সরকারের সাথে চুক্তি করেছে উপজাতি পরিচয়ে। তাদের সব দাবি যখন মেনে নিয়েছে সরকার তখন তাদের হাতে আন্দোলনের নামে পাহাড় অশান্ত করার আর অস্ত্র রইলো না। এখন তাহলে কিভাবে পাহাড়কে অশান্ত করা যায়,?
সেই চিন্তা থেকে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীরা মিলে ২০০৭ সাল থেকে জাতিসংঘ আইএলও কনভেনশন ঘোষণা করার পর থেকে নতুন করে আদিবাসী পরিচয় দাবি করে পাহাড়কে অশান্ত করতে উঠে পড়ে লেগে যায়। এখন পাহাড়ে নতুন করে অশান্ত করার তাদের একটি হাতিয়ার সেটি হচ্ছে অযৌক্তিক ‘আদিবাসী দাবি’।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, যে অঞ্চলে দেশ রক্ষা করতে এসে সেনাবাহিনী সন্ত্রাসীদের গুলিতে শহীদ হয় সে অঞ্চলের সার্বভৌমত্ব স্বাধীনতা হুমকির মুখে পড়ে যায়। আমরা মুক্তিযুদ্ধ করে এই দেশটাকে স্বাধীন করেছি এক ইঞ্চি মাটিও এখানে ইহুদি রাষ্ট্র গঠন করার জন্য আমরা দিতে পারি না।
বক্তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে ১ হাজার ৩৬ কিলোমিটার রাস্তা অনতিবিলম্বে নির্মাণ করতে হবে, কাঁটা তারের বেড়া দিতে হবে। পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনা ক্যাম্প পুনরায় প্রতিস্থাপন করতে হবে।

এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন