নরসিংদীতে দুই ছাত্রদল নেতার খুনীদের পক্ষে কাজ করছেন মির্জা ফখরল- অভিযোগ পরিবারের
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরল ইসলাম আলমগীর নরসিংদীতে পদবি ত জেলা ছাত্রদলের মোটরসাইকেল শোভাযাত্রায় গুলিতে নিহত দুই ছাত্রদল নেতার খুনীদের পক্ষে কাজ করছেন বলে অভিযোগ করেছেন নিহত জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক সাদেকুর রহমানের পরিবার। সোমবার দুপুরে নরসিংদী প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন নিহত ছাত্রদল নেতা সাদেকুর রহমানের বড় ভাই ও হত্যা মামলার বাদী মো. আলতাফ হোসেন।
সংবাদ সম্মেলনে আলতাফ হোসেন বলেন, অস্ত্র ব্যবসায়ী, ছিনতাই ও হত্যা মামলার আসামীদের দিয়ে গত ২৬ জানুয়ারি জেলা ছাত্রদলের কমিটি গঠনের পর অভ্যন্তরীণ কোন্দলের সৃষ্টি হয় জেলা ছাত্রদলে। প্রকৃত ও ত্যাগী ছাত্রদল নেতাদের দিয়ে জেলা ছাত্রদলের কমিটি গঠনের দাবিতে মানববন্ধন, বিক্ষোভসহ বিভিন্ন আন্দোলন কর্মসূচী চালাচ্ছিল জেলা ছাত্রদল নেতা আমার ভাই সাদেকুর রহমান ও আশরাফুল ইসলামসহ পদবি ত ছাত্রদল নেতাকর্মীরা।
পরে ছাত্রদলের কোন্দল নিরসনে দলীয় যৌক্তিক সাংগঠনিক পদক্ষেপ গ্রহণ না করে পদবি ত ছাত্রদল নেতাদের বিরদ্ধে অবস্থান নেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও জেলা বিএনপির আহবায়ক খায়রল কবীর খোকন। গত ১১ ফেব্রয়ারি শিবপুরের ইটাখোলা এলাকায় হত্যার উদ্দেশ্যে পরিক্ষীত ও ত্যাগী জেলা ছাত্রদল নেতাদের লক্ষ্য করে গুলি করেন খোকন।
গত (২৫ মে) চিনিশপুরে জেলা বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয় ও যুগ্ম মহাসচিব খায়রল কবীর খোকনের বাড়ির নিকটে আন্দোলন করার সময় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রল কবীর খোকনের নির্দেশে ছাত্রদল নেতা সিদ্দিকুর রহমান নাহিদ সহ অন্যান্যরা গুলি করে ছাত্রদল নেতা সাদেকুর রহমান ও আশরাফুল ইসলামকে হত্যা করে।
এই ঘটনায় খোকনসহ জড়িতদের আসামী করে থানায় হত্যা মামলা হওয়ার পর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরল ইসলাম আলমগীর নিহত ছাত্রদল নেতাদের পক্ষে কোন প্রকার শোক জানিয়ে বিবৃতি দেননি। উল্টো তিনি হত্যা মামলার আসামী বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রল কবীর খোকন ও তার স্ত্রী বিএনপির স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা ও জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান নাহিদসহ অন্যান্য আসামীদের পক্ষ নিয়েছেন।
নিহত ছাত্রদল নেতা সাদেকুর রহমানের বড় ভাই ও হত্যা মামলার বাদী মো. আলতাফ হোসেন আরও বলেন, বিএনপির মহাসচিবের কাছে নিহত দুই ছাত্রদল নেতার চাইতে খুনীরা গুরত্বপূর্ণ। তাই তিনি হত্যা মামলাকে মিথ্যা আখ্যা দিয়ে ও সরকার দলীয় ষড়যন্ত্র তকমা লাগিয়ে দলের জড়িত প্রকৃত খুনীদের আড়াল করতে চাইছেন। মহাসচিব ত্যাগী দুই ছাত্রদল নেতা হত্যার ঘটনায় চুপ থেকে খোকনের বিরদ্ধে মামলা ও তার বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় উল্টো মিথ্যা বানোয়াট বিবৃতি দিয়েছেন।
মহাসচিব ফখরল ইসলামের এমন আচরণের নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, আসামীদের দল থেকে বহিষ্কার ও গ্রেপ্তারের দাবী না জানিয়ে হত্যার ঘটনাকে আওয়ামী লীগের ষড়যন্ত্র উল্লেখ করে আসামীদের পক্ষ নেয়ার নিন্দা জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে নিহত সাদেকুরের মা সাহেরা বেগম, ভাই ফারক মিয়া ও খবির মিয়া, বোন সেলিনা বেগম ও কণা বেগম উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, গত (২৫ মে) বিকেলে নরসিংদীর চিনিশপুরে খায়রল কবীর খোকনের বাসভবন সংলগ্ন স্থানে মোটরসাইকেল শোভাযাত্রায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয় জেলা ছাত্রদলের বহিষ্কৃত সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক সাদেকুর রহমান এবং ছাত্রদল নেতা আশরাফ হোসেন। এঘটনায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রল কবির খোকন ও তার স্ত্রী বিএনপি নেত্রী শিরিন সুলতানা, জেলা ছাত্রদল সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান নাহিদসহ ৩০ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন নিহত ছাত্রদল নেতা সাদেকুরের বড় ভাই আলতাফ হোসেন।
এর আগে ২৬ জানুয়ারি জেলা ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণার পর দুইভাগে বিভক্ত হয় নরসিংদীর ছাত্রদল। গত ২৫ মে খায়রল কবির খোকনের বাসভবনের সামনে পদবি ত ছাত্রদল নেতারা মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা ও বিক্ষোভ করার সময় দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হয় ২ ছাত্রদল নেতা।
নিহতদের পরিবারের দাবী, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রল কবির খোকন এবং তার স্ত্রী বিএনপির স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানার নির্দেশে এই হত্যাকান্ড ঘটানো হয়েছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন