নরসিংদীতে দুই স্কুলছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, নিরাপত্তাহীনতায় পরিবার

নরসিংদীর রায়পুরায় ষষ্ঠ শ্রেণির দুই ছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় মামলা রজু হয়েছে। বুধবার (৯ এপ্রিল) গভীর রাতে আটজনকে আসামি করে রায়পুরা থানায় পৃথক ২টি মামলা দায়ের করা হয়। তবে এ ঘটনায় পুলিশ এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।

এদিকে পরিবার অভিযোগ, মামলা করায় হুমকি দিচ্ছে ধর্ষণকারীরা। বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তারা।
ভুক্তভোগীদ্বয়ের বাবারা বলেন, থানায় মামলা করায় আমাদের ফোন দিয়ে হুমকি দিচ্ছে এলাকা থেকে। এ ছাড়া তারা প্রভাবশালী, তারা চেষ্টা করছে টাকার বিনিময়ে রিপোর্ট পরিবর্তনের।

আমরা সঠিক রিপোর্ট নিয়ে শঙ্কায় আছি। আমাদের একটাই দাবি, পরীক্ষায় যেন সঠিক রিপোর্টটি আসে। প্রভাব খাটিয়ে যেন রিপোর্ট পরিবর্তন না করতে পারে এবং দোষিদের দ্রত গ্রেপ্তারসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

ধর্ষিতাদ্বয়ের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার দিন ৭ এপ্রিল বিকেল ৩টার দিকে দুই বান্ধবী চরআড়ালিয়া গ্রামের কাইয়ুম ও মুন্নার সঙ্গে ঘুরতে বের হয়। তারা সারা বিকেল ব্যটারিচালিত অটোরিকশাযোগে বাঘাইকান্দী এলাকা থেকে নরসিংদী রেলওয়েস্টেশনসহ বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরি করে। আগে থেকেই কাইয়ুম ও মুন্না তাদের বন্ধুদের পূর্ব বাঘাইকান্দি এসইএসডিপি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে থাকতে বলে।

সে অনুযায়ী অন্য বন্ধুরা স্কুলের সামনে অপেক্ষা করতে থাকে। একপর্যায়ে সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলে অটোরিকশাযোগে তাদের নিয়ে পূর্ব বাঘাইকান্দি এসইএসডিপি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে যায় কাইয়ুম ও মুন্না। সেখানে যাবার পর এক ছাত্রীকে জোরপূর্বক স্কুলের পাশে জনৈক নিক্সন মেম্বারের বাড়ির ছাদে নিয়ে যায় ইসরাফিল, সাইখুল, রমজান ও কাইয়ুম এবং অপর ছাত্রীকে মুন্না, ইমরান, রাজ্জাক, আব্দুর রহমান নদীর পাড়ে নিয়ে যায়। সেখানে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে।

মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তর নরসিংদীর প্রতিনিধি কামরজ্জামান সরকার বলেন, নিরীহ পরিবার প্রথমে এলাকার প্রভাবশালীদের ভয়ে ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে। পরে তাদের নিরাপত্তা এবং সকল আইনি সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দিয়ে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর নরসিংদী ভুক্তভোগীদের অভিভাবকদ্বয়কে নরসিংদী জেলা প্রশাসকের কাছে নিয়ে যাই।

জেলা প্রশাসক সব ঘটনা শুনে তাদের ন্যয় বিচার প্রাপ্তির আশ্বাস প্রদান দেন। পরে নরসিংদী জেলা প্রশাসকের সার্বিক তত্বাবধানে ও মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর নরসিংদীর সার্বিক সহযোগিতায় ১০ এপ্রিল রায়পুরা থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

অভিযুক্তরা পলাতক থাকায় তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

রায়পুরা থানার ওসি আদিল মাহমুদ বলেন, এ ঘটনায় ভুক্তভোগীদ্বয়ের বাবারা বাদী হয়ে আটজনকে আসামি করে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেছেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে এখনো গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। পুলিশি অভিযান অভ্যাহত রয়েছে। দ্রতই অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।