নরসিংদীতে ৯ মাস ধরে নিখোঁজ সন্তানকে ফিরে পাচ্ছে না মা

নরসিংদীর পলাশ উপজেলার মাঝেরচর গ্রামের মোসাঃ নুরুন্নাহার, পিতা মৃত- মোঃ আলিম উদ্দিন এর ২য় ছেলে সোহাগ তার নানার বাড়ীতে বসবাস করছিল। নানার বাড়ীতে থাকার কারণে প্রায় সময়ই সোহাগ তার পিতার বাড়ী পলাশ উপজেলার ঘোড়াশাল পিরিন্দারটেক যাওয়া আসা করত। কিন্তু গত ০৯ মাস ধরে সোহাগ তার বাবার বাড়ী থেকে নিখোঁজ।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায় যে, মোসাঃ নুরুন্নাহার এর সাথে সোহরাব মিয়া (৫০) এর ইসলামী শরাশরীয়তের বিধান মোতাবেক বিবাহ হয়। বিবাহের পর তাদের ২টি ছেলে সন্তান হলে তাদের মধ্যে সম্পর্ক ছিন্ন হয়। ফলে মোসাঃ নুরুন্নাহারকে স্বামীর বাড়ী থেকে বের করে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে ৭ বছর পূর্বে মোসাঃ নুরুন্নাহার জীবিতার তাগিদে বিদেশ (লেবানন) চলে যায়।

কিছুদিন পর বড় ছেলে হৃদয়কেও তিনি লেবানন নিয়ে আসেন। দিন দিন সোহরাব তার স্ত্রীর প্রতি অসন্তুষ্ট হন। স্ত্রীর সাথে রাগ দেখিয়ে সোহরাব বিভিন্ন সময় তার সন্তানদেরকে নিজের বাড়ীতে ফুসলিয়ে ডেকে এনে অমানবিক নির্যাতন করত বলে অভিযোগ উঠেছে।

এদিকে পাষন্ড সোহরাব মিয়া বিগত ২৫ শে সেপ্টেম্বর ২০২০ ইং তারিখে তার ছোট ছেলে সোহাগ(১৮) কে কৌশলে তার নিজের বাড়ীতে ডেকে নিয়ে যায়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সোহাগ এর সাথে সোহরাবের কথা কাটাকাটি হয়। এরপর থেকে সোহাগ কে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এ নিয়ে পলাশ থানায় সোহরাবসহ আরো ২জনকে আসামী করে একটি সাধারণ ডায়েরী করা হয়। যাহার নং- ২১৫/২০।

অপরদিকে নুরুন্নাহার চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন। তিনি বলেন, আসামী সোহরাব ইচ্ছাকৃত ভাবে অসৎ উদ্দেশ্যে অধিক টাকা পাওয়ার লোভে আমার ২য় সন্তান সোহাগকে অপহরণ করে। এক পর্যায়ে আসামী সোহরাব মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আমার নিকট ২ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে। কিন্তু আমি অনেক কষ্টে কয়েকবারে তাকে ১ লক্ষ ৫ হাজার টাকা দেই। কিন্তু টাকা দিলেও আজ ০৯ মাস যাবৎ সে আমার ছেলেকে ফিরিয়ে দিচ্ছে। উল্টো সে আমাকে হুমকি দিচ্ছে। আমি যাতে কোন মামলা মোকদ্দমা না করি।

অবশেষে সোহাগের মা বাদী হয়ে নরসিংদী জজ কোর্টে একটি মামলা করে। মামলাটি পিবিআই এর কাছে তদন্তাধীন আছে।

মোসাঃ নুরুন্নাহের দাবী প্রশাসন একটু কড়া নজর দিলে তিনি তার সন্তানকে আবার ফিরে পাবে।

তিনি আরো বলেন, ছেলেগুলোই আমার বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন। আমার ছেলে সোহাগকে তোমরা ফিরিয়ে দাও।’