নরসিংদী কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা: আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীর বিরদ্ধে মামলা

নরসিংদীতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার ঘটনার ১৬ দিন পর থানায় অভিযোগ দেয়া হয়েছে। রোববার (১৮ আগস্ট) দুপুরে নরসিংদী সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দেন একজন ভুক্তভোগীর মা ও নরসিংদী আদালতের আইনজীবী শিরিন আক্তার।

এতে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৩৩ জনের নাম উলে­খসহ অজ্ঞাত আরও ৫০ জনের বিরদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে। আসামিরা নরসিংদী সদর-১ আসনের সাবেক সাংসদ মোহাম্মদ নজরল ইসলাম হির গ্রুপের সমর্থক।

নরসিংদী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তানভীর আহমেদ লিখিত অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার আসামীরা হলেন- নরসিংদী শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সহ সভাপতি দীপক কুমার সাহা, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক সম্পাদক এস এম কাইয়ুম সরকার, নরসিংদী সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আঞ্জুমান আরা রিচি।

নরসিংদী পৌরসভার সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর ও মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী ইয়াসমিন সুলতানা, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আহসানুল ইসলাম রিমন, সাধারণ সম্পাদক শাহ জালাল আহমেদ শাওন, সদর উপজেলা শাখার সভাপতি রবিউল আলম একমি, সাধারণ সম্পাদক জুবায়েত সরকার, সহ-সভাপতি জাকির হোসেন বাবু।

মেহেদী হাসান বাবু, সাব্বির আহমেদ, শহর ছাত্রলীগের সভাপতি এস এম ওয়াজেদ, সাধারণ সম্পাদক আনিক আহমেদ রিয়েল, নরসিংদী সরকারি কলেজের আহবায়ক রাকিব ভূইয়া, সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আজিজুল ইসলাম সিফাত এবং ইউনিয়ন আহবায়ক বশির আহমেদ।
এছাড়াও শ্রমিক লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের আরও ১৭ নেতার নাম উলে­খ করা হয়েছে। পাশাপাশি অজ্ঞাত আরও ৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার মাদী এডভোকেট শিরিন আক্তার বলেন, “আমার ছেলে তাদের আঘাতে আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি থাকায় লিখিত অভিযোগ জমা দিতে বিলম্ব হয়েছে। আওয়ামী লীগের ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা আমার ছেলে ও আমাকেসহ আরও ১২-১৪ জনকে পিটিয়ে আহত করে।

আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছিলাম কিন্তু আওয়ামী সন্ত্রাসীরা আমাদেরকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করে। তাই এ লিখিত অভিযোগ করেছি।”

তিনি আরও বলেন, “আরেকটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। সেখানে নরসিংদী সদর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ নজরল ইসলাম হিরকে প্রধান আসামি করা হবে। কারণ তারা আমাদের কাছে চাঁদা দাবি সহ বিভিন্ন বাসা বাড়িতে হামলা চালিয়েছে। ”

নরসিংদী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: তানভীর আহমেদ বলেন, “আমরা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। ”
গত ২ আগস্ট (শুক্রবার দুপুরে) বৈষম্য বিরোধী কোটা সংস্কার আন্দোলনে নরসিংদী সদর উপজেলা মোড়ের কোর্ট রোড এলাকায় শিক্ষার্থীদের উপর হামলার চালায় আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। এ ঘটনায় নারীসহ ১২ জন আন্দোলনকারী আহত হয়।