নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে কোভিড সাপেক্ষে চীনের পরিবেশন নিয়ে ওয়েবিনার

বাংলাদেশের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোভিড-১৯ এর সাপেক্ষে চীনের পরিবেশন নিয়ে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে (এনএসইউ) ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।

চায়না সাউথ এশিয়া সেন্টার ফর সোশিও-ক্যালচারাল স্টাডিস (সিএসসিএসএস), রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি (এনএসইউ) ১৫ এপ্রিল, ২০২১ “বাংলাদেশের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোভিড-১৯ এর সাপেক্ষে চীনের পরিবেশন” এক ওয়েবিনারের আয়োজন করা হয়। ওয়েবিনারে বাংলাদেশের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে করোনার ভাইরাসের সাপেক্ষে চীনভীতি ও চীনের পরিবেশনের রাজনীতি নিয়ে গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন এবং তার উপর আলোচনা করা হয়।

অনুষ্ঠানটি শুরু হয় ড. জো উইউই, ইউনান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং কনফুসিউয়াস ইন্সস্টিটিউট, এনএসইউ-র চায়নিজ পরিচালক এর স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে।

অনুষ্ঠানের সভাপতি অধ্যাপক তৌফিক এম হক এই ঘটনাগুলোর রাজনৈতিক প্রভাব গবেষণা করার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে তার মতামত তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন সহযোগী অধ্যাপক রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি এবং কনফুসিউয়াস ইন্সস্টিটিউটের পরিচালক ড. বুলবুল সিদ্দিকী।

কোভিড-১৯ এর সংকট কেবল চীনের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এবং অর্থনীতিতে সীমাবদ্ধ ছিল না; এটি চীনা খাদ্যাভ্যাস এবং সংস্কৃতিকে প্রভাবিত করে এবং সারা বিশ্ব জুড়ে করোনার ভয়ের মত চীনভীতিও অতিমারী রুপ নেয়। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে সংবাদ, ভুল তথ্য, বিশৃঙ্খলা, চীন এবং কোভিড-১৯ সম্পর্কিত গুজব ভাইরাল ভিডিও বাংলাদেশসহ বিশ্বের প্রতিটি জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে।

ড. হারিছুর রহমান, সহকারী অধ্যাপক, রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগ (পিএসএস), এবং সমন্বয়কারী সিএসসিএসএস, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি (এনএসইউ) সাইনোফোবিয়া উপর গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করেন। গবেষণাটিতে নরম্যান ফেয়ারক্লফ এর ক্রিটিক্যাল ডিসকোর্স এনালাইসিস (সিডিএ) ব্যবহার করে বাংলাদেশী সোশ্যাল মিডিয়াতে (ফেইসবুক, ইউটিউবে) কিভাবে চীন এবং কোভিড-১৯ উপস্থাপিত হয়েছে তা জানুয়ারী ২০২০ থেকে জুন ২০২০ পর্যন্ত তা বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এই গবেষণাটির আকর্ষণীয় ফলাফলের মধ্যে রয়েছে-সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের মধ্যে সাইনোফোবিয়া, জেনোফোবিয়া, বিচ্ছিন্নতা, কুসংস্কার এবং বর্ণবাদের মত বিষয়গুলো কিভাবে ইনফোডেমিক রুপ ধারন করে। এছাড়াও কিভাবে সোশ্যাল মিডিয়াতে মানুষজন বিভিন্ন জায়গা থেকে কন্টেন্ট কপি করে নিজেদের মত করে বিচিত্রভাবে অডিও ভিডিও বানিয়ে শেয়ার করা হয় সে বিষয়েও উপস্থাপক আলোকপাত করেন। তিনি আরও বলেন যে, সোশ্যাল মিডিয়ায় চীন বিরোধী বক্তব্য বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ভুল তথ্য এবং গুজবও অনেক মানুষের কাছে বিশ্বাসযোগ্য মনে হয় তাদের মিডিয়া সম্পর্কিত বিস্তারিত ধারনা না থাকার কারনে। যার ফলস্বরূপ চীন বিরোধী মনোভাব বিশেষত চীনা সংস্কৃতি, খাদ্যাভ্যাস নিয়ে বাংলাদেশের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যেমে অনেক নেতিবাচক প্রচারনা দেখা যায়।

গবেষণার ফলাফলের উপর আলোচনা করেন-অসলো মেট্রোপলিটন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক রবার্ট ওয়ালেস ভাগান এবং অকল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের সিনিয়র প্রভাষক ড. মার্ক উইলিয়াম বুসি। তারা আলোচনা করেন যে কিভাবে এই সোশ্যাল মিডিয়া গবেষণাটি একটি খুব নতুন ক্ষেত্র এবং আরও অনেক অনুসন্ধানের ভিত্তি হতে পারে।

অনুষ্ঠানের সভাপতি অধ্যাপক তৌফিক এম হক এই ঘটনাগুলোর রাজনৈতিক প্রভাব গবেষণা করার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে তার মতামত দিয়ে অধিবেশন শেষ করেন।