নানাবিধ সমস্যায় রয়েছে নেত্রকোনার দুর্গাপুর সরকারি হাসপাতাল

নেত্রকোনা জেলার সীমান্তবর্তী দুর্গাপুর উপজেলায় প্রায় আড়াই লাখ মানুষের বসবাস। তাদের চিকিৎসা সেবার জন্য একটি মাত্র ৫০ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্স(সরকারি হাসপাতাল)।
আশপাশের আরও তিনটি উপজেলার লোকজনও চিকিৎসা নিতে আসেন এখানে। কিন্তু শয্যা, চিকিৎসক, জনবল, সেবা প্রদানের যন্ত্রপাতিসহ নানা সংকটে ভুগছে হাসপাতালটি। শুধু তাই নই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে হাসপাতাল ভবনও। ফাটল ধরেছে বিভিন্ন স্থান ও মেঝে। খসে পড়ছে ছাদের প্লাস্টার।
এরপরও ঝুঁকি নিয়ে চলছে চিকিৎসা সেবা। ইতিমধ্যে ফাটলের কারণে বন্ধ হয়ে আছে ভিআইপি কেবিন,তবে সাময়িক সংস্কার কাজও চলমান।
হাসপাতাল সংশ্লিষ্টরা বলছে, কম সংখ্যক চিকিৎসকে বিপুলসংখ্যক রোগীকে সেবা দিতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন। হাসপাতাল ভবনের বিভিন্ন অংশে সংস্কারের কাজ করা হচ্ছে। হাসপাতালটি ১০০ শয্যায় উন্নতি ও সরঞ্জাম সংকট নিরসন প্রয়োজন।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, ১৯৮১ সালে নির্মাণ করা হয় ৩১ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্স। পরবর্তীতে রোগীর চাপ সামলাতে দীর্ঘ ২৮ বছর পর ২০০৯ সালে বাড়িয়ে করা হয় ৫০ শয্যা। কিন্তু এতেও বর্তমানে পর্যাপ্ত হয়নি কারণ প্রায় প্রতিদিন এই ৫০ শয্যার হাসপাতালের ৬০-৭০ জন রোগী ভর্তি হচ্ছেন।
কোনো কোনো সময় শতাধিকও হয়। সে হিসেবে প্রয়োজন ১০০ শয্যার। জরুরী ও বহিঃর্বিভাগে প্রতিদিন গড়ে অন্তত: ৫০০ রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। এরই মধ্যে চলমান চিকিৎসক ও কর্মচারীসহ নানা সংকটে সেবা ব্যাহত হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হাসপাতালটিতে কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সব মিলিয়ে পদ রয়েছে ১৬৭টি। এখন কর্মরত আছেন ৯০ জন। দীর্ঘদিন ধরে ৭৭টি পদ খালি পড়ে আছে। তাছাড়াও জরুরি সেবা প্রদানের অ্যাম্বুলেন্স চালক সংকট সেবা বন্ধ অবস্থায় রয়েছে দীর্ঘদিন ধরেই। নষ্ট হয়ে আছে হাসপাতালের জেনারেটর। ডিজিটাল এক্সরে মিশিন, ইসিজি মেশিন,সহ আরো অনেক যন্ত্রপাতিরও সংকট রয়েছে।
নজরুল ইসলাম নামের এক রোগীর স্বজন জানান, স্ত্রী অসুস্থ তিনি দুইদিন ধরে হাসপাতালে আছেন কিন্তু সিট না পেয়ে মেঝেতেই চিকিৎসা নিচ্ছেন এতে অন্যে রোগে আক্রান্ত হতে পারেন তবুও উপায় নেই তাদের।
সাবিনা নামের আরেকজন বলেন, মানুষের কল্যাণে স্বাস্থ্য কমপেক্সের সংকট কাটাতে দ্রুত উদ্যোগ নেবে কর্তৃপক্ষ আমরা আশাবাদী।
এদিকে চলমান চিকিৎসক সংকটে সেবা প্রদানের প্রয়োজনে কোনো চিকিৎসকের দিনে-রাতে ২৪ ঘন্টাও হাসপাতালে থাকতে হয়। এমন পরিস্থিতিতেও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা চলমান রেখেছেন সেবা প্রদানকারী নার্স ও চিকিৎসকরা।
স্বাস্থ্য কমপেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. তানজিরুল ইসলাম রায়হান বলেন, প্রয়োজনীয় চিকিৎসক সংকট আছে দীর্ঘদিন ধরেই। তার মধ্যে প্রতিনিয়ত রোগীর চাপ থাকছে এজন্য আমাদের এই হাসপাতালটি ১০০ শয্যায় উন্নতিকরণ জরুরী।
এ নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্সে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুহাম্মদ রাফিউল ইসলাম তালুকদার বলেন, আমি যোগদান করেছি অল্প কিছুদিন হয়েছে। ইতিমধ্যে বেশ কিছু সমস্যা চিহ্নিত করেছি এবং নিরসনের চেষ্টা করছি।
তবে হাসপাতালটিতে জনবল সংকট রয়েছে দীর্ঘদিন ধরেই। বর্তমানে ৫০ শয্যায় যে পরিমাণ লোকজন চিকিৎসা নিতে আসেন সে অনুযায়ী আমাদের ১০০ শয্যার প্রয়োজন।

এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন