নারায়ণগঞ্জ অগ্নিকাণ্ড: মামলা, ৪ ছেলেসহ সজীব গ্রুপের চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাশেম ফুড কোম্পানির সেজান জুস কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে রূপগঞ্জ থানা পুলিশ।
সেই মামলায় প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান আবুল হাশেম ও তার চার ছেলেসহ ৮ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শনিবার (১০ জুলাই) নারায়ণগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) জাহিদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
জাহিদুল ইসলাম জানান, ‘পুলিশের পক্ষ থেকে হত্যা মামলা দায়ের করে মালিক হাসেমসহ মালিকপক্ষের ৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
এর আগে শনিবার (১০ জুলাই) নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত কারখানা পরিদর্শন শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের এ ঘটনায় ৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের আগুন নেভাতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে। নির্মাণ ত্রুটি ও শ্রমিক পরিচালনার ত্রুটি আছে কিনা এগুলো তদন্তের আগে কিছু বলা যাচ্ছে না। তদন্তের পর সব কিছু জানানো হবে।’
তিনি বলেন, ‘এরইমধ্যে তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। কেউ যদি সামান্যতম এই ঘটনায় ভুলভ্রান্তি করে থাকে তাহলে আইন অনুযায়ী তাদের বিচার করা হবে।’
তদন্ত প্রতিবেদন জনসম্মুখে আসবে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বিচারের সম্মুখেই এই তদন্ত প্রতিবেদন চলে যাবে।’
এদিকে ভবন মালিক নিখোঁজ থাকলেও আটজনকে আটক করা হয়েছে বলে জানান আসাদুজ্জামান খান কামাল।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজের ফ্যাক্টরিতে বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) সন্ধ্যায় আগুন লাগে। এ ঘটনায় সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৫২ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তৃতীয় দিন শনিবার (১০ জুলাই) ভবনটির পাঁচ ও ছয়তলায় উদ্ধার অভিযান শুরু করেছে ফায়ার সার্ভিস।
নারায়ণগঞ্জের সহকারী পুলিশ সুপার (সি-সার্কেল) আবির হোসেন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘ফায়ার সার্ভিস এখনও ওই ভবনে কাজ করছে। তারা আমাদের কাজ শেষে ভবনটি বুঝিয়ে দেবে। এরপর তদন্ত হবে। মামলাও হবে।’
এদিকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মৃতদেহগুলো শনাক্ত করতে শনিবার সকাল থেকে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য স্বজনদের নমুনা সংগ্রহ করছে ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) মর্গ।
মৃতদেহ শনাক্ত করতে মর্গের সামনে ভিড় করেছেন স্বজনরা।
শনিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২৭ জনের মরদেহ শনাক্ত করতে ৩৭ স্বজনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
মরদেহ শনাক্ত করতে ঢাকার বাইরের বিভিন্ন জেলা থেকে ছুটে আসছেন নিহতদের স্বজনরা।
ভোলা থেকে আসা ফজলুল হক নামে এক ব্যক্তি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আমার ছেলেকে খুঁজে পাচ্ছি না। রাকিব নামে তার এক বন্ধু আছে। রাকিব নিখোঁজ। তারা দুজনই একসঙ্গে কাজ করত।’
এদিকে জুস কারখানায় আগুন কীভাবে লেগেছিল? এটি নিছক দুর্ঘটনা, না মালিকপক্ষের গাফিলতি ছিল পেছনে? নাকি প্রতিষ্ঠানের মালিকানা নিয়ে রয়েছে কোনো দ্বন্দ্ব? এসব কিছুই তদন্ত করে দেখবে পিবিআই।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন