নাসাতে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় মহাকাশ সংস্থা ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (নাসা) সঙ্গে কাজ করার স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ। এ জন্য প্রান্তিক পর্যায় থেকে ক্ষুদে বিজ্ঞানীদের তুলে নিয়ে আসতে কাজ করছে বেসিস স্টুডেন্টস ফোরাম।
এরই অংশ হিসেবে বেসিস স্টুডেন্টস ফোরামের সহযোগিতায় টানা পঞ্চমবারের মতো বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ ২০১৮-এর আয়োজন করেছে।
এ বিষয়ে নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জের যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল হাসান অপু বলেন, বাংলাদেশ নাসাতে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছে। এ জন্য আমরা ৯টি শহর থেকে আগ্রহীদের নিয়ে একটি জাতীয় হ্যাকাথনের আয়োজন করেছি।
অপু জানান, সারাবিশ্বে আয়োজনে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে একজনকেই নাসার এই প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত বিজয়ী হিসেবে ঘোষণা দেয়া হবে। তবে এমন অনেক উদাহরণ রয়েছে যে, নাসা কর্তৃপক্ষ প্রজেক্টগুলো দেখে পুরো টিমকে নিয়ে নিয়েছে।
তবে এ ক্ষেত্রে অনেক প্রতিবন্ধকতাও রয়েছে। বাংলাদেশে এসব আয়োজন নিয়মিত না হওয়াতে অনেকের আগ্রহ থাকার পরেও উঠে আসতে পারছে না বলে উল্লেখ করেন আরিফুল হাসান অপু।
চলতি বছর নাসা আন্তর্জাতিকভাবে বিশ্বের ২৫০টি শহরে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। যেখানে বেসিস বাংলাদেশের ৯টি শহরে (ঢাকা, চট্রগ্রাম সিলেট, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, রংপুর, ময়মনসিংহ এবং কুমিল্লা) এ আয়োজন করেছে।
নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জে এবার ৫০ লাখ শিক্ষার্থীদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যুক্ত করার পাশাপাশি ১ লাখ শিক্ষার্থীদের সরাসরি এ প্রতিযোগিতায় যুক্ত করার পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়।
এবার ৯টি শহর থেকে দুই হাজারেরও বেশি প্রকল্প জমা হয় প্রতিযোগিতায়। সেখান থেকে শীর্ষ ৪০টি প্রকল্পকে নিয়ে ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ১৯-২০ অক্টোবর টানা দুইদিনব্যাপী হ্যাকথন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বেসিস সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর, বেসিসের সহ-সভাপতি (অর্থ) মুশফিকুর রহমান, নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ ২০১৮ এর আহ্বায়ক দিদারুল আলম, নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ ২০১৮ এর যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল হাসান অপু।
নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ ২০১৮ সম্পর্কে বেসিস সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর বলেন, টেকনোলজিস্ট, বৈজ্ঞানিক, ডিজাইনার, আর্টিস্ট, এডুকেটর, উদ্যোক্তা ইত্যাদিসহ সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার মাধ্যমে পৃথিবীর বিভিন্ন বৈশ্বিক সমস্যা সমাধানে ইনোভেটিভ সমাধান খুঁজে বের করাই হলো এর মূল লক্ষ্য।
নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ ২০১৮ এর আহ্বায়ক দিদারুল আলম বলেন, গত বছর বাংলাদেশকে মোট ৮টি জোনে বিভক্ত করে ৪৫৩টি আবেদন গ্রহণ করা হয় যার মধ্য থেকে ১৩১টি প্রকল্প বাছাইয়ের জন্য মনোনীত করা হয়।
প্রতিযোগিতায় সারা বাংলাদেশ থেকে ৫০টি দলের হ্যাকাথনের মধ্য দিয়ে সর্বমোট ১১টি সেরা প্রজেক্টকে নাসা’র নিয়মানুযায়ী মনোনীত করা হয়। এর মধ্যে ২টি প্রকল্প গ্লোবাল পিপলস চয়েস ফিনালিস্ট হিসেবে সম্মান অর্জন করে।
এ বছর ৯টি শহর থেকে ১৮টি দলকে নাসার জন্য মনোনীত করা হবে। এবার আমরা আরও ভালো কিছু করার জন্য প্রস্তুত বলে উল্লেখ করেন দিদারুল আলম।
নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জের যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল হাসান অপু বলেন, মহাকাশের বিভিন্ন সমস্যার বাইরে জলবায়ু, আগ্নেয়গিরি, মঙ্গলগ্রহসহ ৬টি ক্যাটাগরির অধীনে মোট ২০টি সাব ক্যাটাগরিতে এবার হ্যাকথন অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি বলেন, ক্যাটাগরি ভিত্তিক এসব সমস্যা সমাধানে কাজ করবে আমাদের তরুণ বিজ্ঞানীরা। গত ৪ বছরের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের অবস্থান এখন অনেক ভালো, আশা করছি ২০১৮ সালে আমাদের অবস্থান আরও সুদৃঢ় হবে।
৩৬ ঘন্টা টানা হ্যাকথন আয়োজনের পর আজ ২০ অক্টোবর সন্ধ্যা সাতটায় পুরষ্কার বিতরণি অনুষ্ঠান আয়োজিত হবে।
সেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব শ্যাম সুন্দর সিকদার।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন