মসজিদে হামলাকারী ব্রেন্টন ৫ এপ্রিল পর্যন্ত রিমান্ডে
নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে দুটি মসজিদে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় প্রধান সন্দেহভাজন ব্রেনটন টারান্টকে আগামী ৫ এপ্রিল পর্যন্ত রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। ওই দিন তাকে দেশটির হাইকোর্টে হাজির করা হবে।
এর আগে শনিবার তাকে দেশটির জেলা জজ কোর্টে তোলা হয়। তার বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, আদালতে যখন তাকে হাজির করা হয় তখন তার হাতে হ্যান্ডকাফ এবং পরনে জেলখানার কয়েদিদের শার্ট ছিল।
এর আগে শুক্রবার জুমার নামাজের সময় ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে হামলার ঘটনা ঘটে। আল নুর মসজিদ ও লিনউডের ওই মসজিদে হামলায় শেষ খবর পর্যন্ত ৪৯ জন নিহত এবং ৪৮ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
হামলাকারী ২৮ বছর বয়সী ব্রেনটন টারান্ট অস্ট্রেলীয় বংশোদ্ভূত। সে কয়েক বছর ধরে নিউজিল্যান্ডে বসবাস করছে। সে একজন ডানপন্থী উগ্রবাদী সন্ত্রাসী।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন তার অস্ট্রেলীয় নাগরিকত্বের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সেইসঙ্গে সে যে একজন উগ্রবাদী মতবাদের সেটাও জানিয়েছেন স্কট।
শুক্রবার প্রথমে গাড়ি চালিয়ে আল নুর মসজিদের কাছে যায় ব্রেনটন। এর পর অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে মসজিদের দিকে যেতে থাকে। প্রথমেই মসজিদের প্রবেশ পথে একজনকে গুলি করে হত্যা করে সে। এর পর মসজিদে নামাজরত মুসল্লিদের ওপর স্বয়ংক্রিয় মেশিনগান থেকে এলোপাথারি গুলি চালাতে থাকে সে। তার নির্বিচার গুলিতে নামাজিরা লুটিয়ে পড়তে থাকে।
শুধু হামলাই চালায়নি উগ্রবাদী এ খ্রিস্টান সন্ত্রাসী। বরং মাথায় ক্যামেরা স্থাপন করে তার অপকর্মের পুরো ১৭ মিনিটের ভিডিও সরাসরি অনলাইনে প্রচার করেছে সে। যে ভিডিও বিশ্বব্যাপী ভাইরাল হয়েছে।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোতে বলা হচ্ছে, আল নুর মসজিদে হামলার পর নিজেই গাড়ি চালিয়ে গিয়ে লিনউডের মসজিদেও সে হামলা চালিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
নিউজিল্যান্ডের পুলিশ গতকাল জানিয়েছে, এ ঘটনায় তারা এ পর্যন্ত এক নারীসহ চারজনকে আটক করেছে।
দেশটির প্রধানমন্ত্রীর জাসিন্দা আর্ডার্ন গতকাল সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, এটি একটি সন্ত্রাসী হামলা। এ রকম হামলার জন্য প্রস্তুত ছিল না তার দেশ। আটকদের বিরুদ্ধে আগে সন্ত্রাসের কোনো অভিযোগ ছিল না বলেও জানান তিনি।
এদিকে, ব্রিটিশ গণমাধ্যম ডেইলি মেইল বলেছে, ব্রেনটন আগের দিন পুরো ঘোষণা দিয়ে শুক্রবার হামলা চালায়। বৃহস্পতিবার উগ্রপন্থীদের একটি ওয়েবসাইটে সে বেনামে হামলার ঘোষণা দেয় এবং শুক্রবার হামলায় ব্যবহৃত অস্ত্রশস্ত্রের ছবিও পোস্ট করে।
এ সময় তার অনুসারীরা তাকে হামলায় উৎসাহ দেয়। সেইসঙ্গে তার ওই পোস্ট ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দেয় অনুসারীরা।
কিন্তু এত কিছুর পরও নিউজিল্যান্ডের পুলিশ তাকে আটক করেনি। কারণ হিসেবে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, তার নাম ওয়াচলিস্টে ছিল না।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন