নিজস্ব বাতাসে ছাতিমের ঘ্রাণ || নাজমীন মর্তুজা

বড় বড় শহরের পশ নার্সিং হোমগুলিতে কিংবা ঝুপড়িতে, ফুটপাতে, বস্তিতে যেসব শিশু জন্মায়
আদরে আহ্লাদে, দুধে ভাতে, ধুলো কাদায়, ভিক্ষান্ন খুঁটে, অনেকের কাছে শুনেছি তাদের শৈশব বলে কিছু থাকে না। আমার তা মনে হয় না মোটেও, শিশু তার শৈশব রচনা ওরে নেয়। চাপড়া খসা ভাঙা দেয়ালটার মধ্যে সে তার কল্পনার কতো ছবি এঁকে নিতে পারে।

বিলাস বহুল যে শিশু জন্ম নেয় বৈভবের মধ্যে যারা বড় হ, এবং যে শিশু পথে ঘাটে পেটে খোঁদলে নিয়ে বসে থাকে, তারা সবাই কল্পনার জগতে একাকার। শৈশবে সবকিছু বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়। গ্রহণ বর্জন আসে বুদ্ধি পাকলে।

আমার শৈশব কিছুটা উর্ণনাভের মতো নিজেই রচনা করেছি। আমার নানা কল্পনা ভয়, অনুভব সাধ আমার চারদিকে বুনে যেতো
লতাতন্ত্রজাল। বোধের প্রথম উন্মেষ যখন ঘটলো সেই ঊসার আলো আঁধারিতে তার
শুরু। কয়েকজন আপন মানুষের নিষিদ্ধ
ঘেরাটোপের ভেতরে স্নেহ, প্রশ্রয়
আদিখ্যেতার জারক রসে একটু আধটু
দুষ্টু হয়ে উঠেছি তখন। একটু একটু দুরন্ত , চোখে অপার রুপ-মুগ্ধতাবিস্ময়, ভয়। সেই
তখন থেকেই আমার মতো করে শৈশব রচনা আমার। এ আমার শৈশবের সাতকাহন
নয়। এ হলো অনুভুতি গ্রাহ্য। চারপাশটাকে বারবার আবিষ্কার করা। যা প্রত্যক্ষ, স্পর্শযোগ্য,
যা ফলিত, যা অনুভুতি যোগ্য।

(চলবে…..)


নিজস্ব বাতাসে ছাতিমের ঘ্রাণ : ১ম পর্ব