নিজের মেয়েকে বাল্য বিবাহ দিলেন কাজী!
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা ঢোলারহাট ইউনিয়নের কাজী আমজাদ হোসেন অবশেষে নিজের নাবালিকা মেয়েকে বাল্য বিবাহ দিয়েছেন বলে অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া গেছে। আইন অমান্য করে নিজের মেয়েকে বাল্য বিবাহ দেওয়ায় জেলা কাজী রেজিস্ট্রার সমিতির নেতা ও এলাকাবাসীর মধ্যে চাপা ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
ইতোমধ্যে কাজী আমজাদ আলী বিরুদ্ধে বাল্য বিবাহ দেওয়ার অভিযোগ এনে জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী।
অভিযোগে জানা গেছে, সদর উপজেলার ঢোলারহাট ইউনিয়নের কাজী আমজাদ হোসেন দীর্ঘদিন যাবৎ আইন ভঙ্গ করে এলাকায় বাল্য বিবাহ সম্পন্ন করে আসছেন নিজের প্রভাব দেখিয়ে। পূর্বে কাজী আমজাদ হোসেনের বিরুদ্ধে ইউনিয়ন পরিষদ ও জেলা রেজিস্ট্রারের বরাবরে বাল্য বিবাহ বিষয়ে অভিযোগ করলেও কোন লাভ হয়নি।
সম্প্রতি কাজী আমজাদ হোসেন নিজের নাবালিকা মেয়েকে (মোছা. আরজিনা) একই উপজেলার চিলারং পাহাড়ভাঙ্গা এলাকার আব্দুল কাদেরে ছেলে বিজিবি সদস্য রবিউল ইসলামের সাথে বাল্য বিবাহ দেন বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।
কাজী আমজাদ হোসেনের মেয়ে (মোছা. আরজিনা) মধুপুর ঈদগাহ দাখিল মাদরাসা থেকে জেডিসি (জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট পরীক্ষা) উর্ত্তীণ হয়েছেন। তার জেডিসি পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন কার্ড অনুযায়ী বর্তমান বয়স ১৫ বছর ৩ মাস ১১ দিন।
মধুপুর ঈদগাহ দাখিল মাদরাসা সুপার রুহুল আমিন জানান, আরজিনা মাদরাসার দাখিল শ্রেণীর ছাত্রী। সম্প্রতি তার বাবা কাজী আমজাদ হোসেন আরজিনাকে বিবাহ দিয়েছেন বলে আমরা খবর পেয়েছি।
ঢোলার হাট এলাকার শরিফুল ইসলাম জানান, কাজী আমজাদ হোসেন ইতোমধ্যে এলাকায় প্রায় ২০টির বেশি বাল্য বিবাহ দিয়েছেন। সর্বশেষ নিজের নাবালিকা মেয়েকে বিয়ে দেওয়ায় এলাকার মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসী একত্রিত হয়ে বাল্য বিবাহ প্রদানের অভিযোগে কাজীর বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত আবেদন করেছেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত কাজী আমজাদ হোসেনের সাথে যোগযোগ করা হলে নিজের মেয়ের বিবাহের কথা স্বীকার করে বলেন, কাজীদের বিরুদ্ধে বাল্য বিবাহ প্রদানের অভিযোগ উঠতেই পারে। ইউনিয়ন পরিষদের জন্ম নিবন্ধনের উপর ভিত্তি করে বয়স দেখেই যে কারো বিবাহ সম্পূন্ন করা হয়। সেখানে বয়স সঠিক থাকলে বিবাহ দিতে আইনগত বাধা থাকার কোন কথা নয়।
ঠাকুরগাঁও জেলা কাজী রেজিস্ট্রার রফিকুল ইসলাম জানান, বিবাহ নিকাহ আইনে বাল্য বিবাহ ও সহযোগিতা করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। যদি কাজী আমজাদ হোসেনের বিরুদ্ধে বাল্য বিবাহ দেওয়ার প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে তার কাজী রেজিস্ট্রার কার্ড বাতিল করা হবে।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক আব্দুল আওয়ালের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, প্রশাসন থেকে বাল্য বিবাহ বন্ধে আমরা বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছি। কেউ যদি নিজ ইচ্ছায় ইউনিয়ন পরিষদে কোন মেয়ে বা ছেলের জন্ম নিবন্ধনপত্রে বয়স সীমা বৃদ্ধি করে বিবাহ প্রদান করেন, সেটিও আইনত অপরাধ। কাজী আমজাদ হোসেনের বিরুদ্ধে নিজ মেয়ে ও একাধিক বাল্য বিবাহ দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা হবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন