নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রী হিসেবে থাকবো : এরশাদ

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় দায়িত্ব পালনের জন্য নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রী হিসেবে থাকতে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত এইচ এম এরশাদ।

বৃহস্পতিবার দুপুরে রংপুর সার্কিট হাউজে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।

২০১৪ এর নির্বাচনের আগে প্রথম দলীয় নির্বাচনকালীন সরকার গঠিত হয়েছিল, সে সময় প্রধানমন্ত্রী ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদের সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের ঘোষণা দিয়েছিলেন। তৎকালীন জাতীয় সংসদে প্রধান বিরোধীদল বিএনপিকেও নির্বাচনকালীন সরকারের মন্ত্রিসভায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দেওয়ার প্রস্তাব করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী।

এ নিয়ে সংলাপের আমন্ত্রণ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে টেলিফোন করেছিলেন। কিন্তু বিএনপি এবং বেগম খালেদা জিয়া নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে অনড় থেকে ওই নির্বাচন বর্জন করেছিলেন।

বিএনপি নির্বাচন বর্জন করলেও ওই অন্তর্বর্তী সরকারে বেগম রওশন এরশাদ ও জাতীয় পার্টির প্রতিনিধিরা, জাসদ নেতা হাসানুল হক ইনু, ওয়ার্কাস পার্টির রাশেদ খান মেনন যোগ দিয়েছিলেন।

নাটকীয় কোনো পরিবর্তন না হলে আগামী ডিসেম্বরই হচ্ছে একাদশ সংসদ নির্বাচন। সে হিসাবে নির্বাচনের তিন মাস আগে অর্থাৎ আগামী অক্টোবরে গঠন হবে নির্বাচনকালীন সরকার। এই সরকারে কারা কারা থাকবেন, সেটা নিয়ে চলছে আলোচনা। এ নিয়ে এরই মধ্যেই কাজ শুরু করেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে।

নির্বাচনকালীন সরকারে নিজের মন্ত্রী হওয়ায় বাধা নেই জানিয়ে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদ বলেন, ‘সরকারে থাকতে সাংবিধানিক কোনো বাধা নেই। আমি তো বলেছি থাকতে পারি। কারণ আমার তো কোনো বাধা নেই। বিরোধীদলীয় নেত্রী (রওশন) থাকতে পারবেন না। কারণ উনি বিরোধীদলীয় নেত্রী থাকবেন শেষ দিন পর্যন্ত। উনি হয়ত নাও থাকতে পারেন। কিন্তু আমি থাকবো।’

ইভিএমের পক্ষে নন এরশাদ

সাংবাদিকদের সামনে আগামী সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার না করার পক্ষে মত দেন জাপা চেয়ারম্যান। এরশাদ বলেন, ‘আমি ইভিএমের পক্ষে আগেও ছিলাম না, এখনও নাই। যেহেতু প্রাকটিস নাই। এই সিস্টেমে যে কারচুপি হবে না, সে সম্পর্কে আমরা নিশ্চিত না।’

এ সময় ‘জাতীয় ঐক্য’ নামে যে জোট গঠনের চেষ্টা চলছে সে বিষয়েও কথা বলেন এরশাদ। বলেন, ‘বিএনপি নির্বাচনে আসলেও যায় আসে না, না আসলেও যায় আসে না। যে কেউ জোট করতেই পারে। শুনেছি বিএনপি ওই জোটে যোগ দিবে, এখনো দেয়নি। যোগ দিলে কতটা শক্তিশালী হবে জানি না, তবে বিএনপি আসলে আমি আওয়ামী লীগের সঙ্গে থাকবো। আমাদের জোটকে সহজে কেউ পরাজিত করতে পারবে না।’

এরশাদ বলেন, ‘আমরা কোনো আসনেই ছাড়তে রাজি নই। এক শ আসন চেয়েছি ৭০/৮০টি আসন তো পাবই।’

খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়েও কথা বলেন জাপা চেয়ারম্যান। বলেন, ‘তিনি অসুস্থ কি না জানি না। সরকার তাকে যদি হাসপাতালে নিতে চায় তাহলে আমার বলার কিছু নাই। বলা উচিতও না।’

এ সময় দলের কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদের, মেজর (অব.) আব্দুল খালেক, রংপুর মহানগর জাপার সাধারণ সম্পাদক এসএম ইয়াসির, নির্বাহী কমিটির সদস্য শাফিউল ইসলাম শাফিসহ স্থানীয় জাপার নেতারা উপস্থিত ছিলেন।