নির্বাচনকালীন সরকার ইস্যুতে বিএনপি অনড় থাকলে সুযোগ নেবে আ.লীগ
নির্বাচনকালীন সরকারের দাবিতে বিএনপি অনড় থাকলে এর সুযোগ নেবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। বিএনপির এই দাবিকে ক্ষমতাসীনরা সংবিধানবিরোধী বলে নাকচ করে দেবে। ফলে আগামী জাতীয় নির্বাচনও বিএনপিকে বাদ দিয়েই হতে পারে বলে আওয়ামী লীগের নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতা আভাস দিয়েছেন। তারা জানিয়েছেন, নির্বাচন নিয়ে বিএনপি নেতাদের বক্তব্য থেকে এখনও স্পষ্ট কোনও ধারণা পাওয়া যায়নি। তবে নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের দাবিতে শেষ পর্যন্ত বিএনপি কতটুকু অনড় থাকে, তার ওপর নির্ভর করছে ক্ষমতাসীন দলের পরবর্তী পদক্ষেপ। বিএনপি নির্বাচনকালীন সরকারে দাবি আনুষ্ঠানিকভাবে জানালে আওয়ামী লীগও বিকল্প পদক্ষেপ নেবে। তবে সংবিধানের বাইরে একচুলও নড়বে না ক্ষমতাসীনরা।খবর বাংলা ট্রিবিউনের।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্যাহ বলেন, ‘কারও কোনও প্রস্তাবে আগামী নির্বাচন হবে না। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। এরমধ্যে বিএনপি এলে আসবে, না এলে সেটা তাদের ব্যাপার। বিএনপিকে নির্বাচনে আনার জন্য সংবিধান পরিবর্তন হবে-এমনটা ভাবার কোনও অবকাশ নেই। তাই বিএনপি কী প্রস্তাব দেবে, তা নিয়ে আওয়ামী লীগ মোটেই ভাবছে না।’
সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সংবিধানের বাইরে এক চুলও নড়বে না সরকার। সংবিধানে যা বলা আছে, সেভাবেই নির্বাচন হবে। নির্বাচনে আসা না আসা বিএনপির ব্যাপার।’
তিনি বলেন, ‘আমরা চাই, বিএনপি নির্বাচনে আসুক। তার মানে এই নয় যে, সংবিধানের বাইরে গিয়ে বিএনপিকে নির্বাচনে আনার জন্যে আমরা বাধ্য।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘যথাযথ নিয়মে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আর সে নির্বাচনে বিএনপিও অংশ নেবে। তবে, বিএনপি প্রস্তাব দেবে, আর সেই প্রস্তাব মেনে নিয়ে সরকার তাদের নির্বাচনে আনবে এটা ভাবার কোনও কারণ নেই।’
আওয়ামী লীগের বিশ্বাস, বিএনপি নির্বাচনে আসবে। তাই সরকার বা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ছাড় দিয়ে বিএনপিকে নির্বাচনে আনার ব্যাপারে কোনও আগ্রহ নেই। তবে কৌশলগত কারণে কতটুকু ছাড় বিএনপি প্রত্যাশা করে, সেই সম্পর্কে একটু ধারণা রাখার চেষ্টা করছে আওয়ামী লীগ। বিএনপির আকাঙ্ক্ষা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারলে আওয়ামী লীগ সেই অনুযায়ী প্রয়োজনীয় কৌশল ঠিক করবে।
ক্ষমতাসীন দলটির নীতি-নির্ধারকরা আরও জানিয়েছেন, ‘নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকার না হলে বিএনপি নির্বাচনে আসবে না, এমন ঘোষণার অপেক্ষায় রয়েছে ক্ষমতাসীনরা। সহায়ক সরকার নিয়ে বিএনপি অনড় থাকলে আওয়ামী লীগের প্রথম কৌশল হবে সংবিধানে সহায়ক সরকার নেই উল্লেখ করে চূড়ান্তভাবে তা প্রত্যাখ্যান করা। আর এর মধ্য দিয়ে বিএনপি নীতিগতভাবে দুর্বল হয়ে পড়বে বলে মনে করে আওয়ামী লীগ। আর বিএনপি অনড় অবস্থানের কথা জানিয়ে ভোটে অংশ নিলে ইমেজ সংকটে পড়বে। এটি দলটির জন্য আত্মঘাতী হতে পারে।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব উল আলম হানিফ বলেন, ‘অজুহাত তৈরি করে সংবিধানের ওপর আঘাত জনগণ আর চায় না। সারাবিশ্বে যেভাবে হয়, বাংলাদেশেও সেভাবেই নির্বাচন হবে।’ নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্রের পথে না হাঁটাই বিএনপির জন্যে মঙ্গল হবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন